বরাকজুড়ে বিএসএফের কারগিল বিজয় দিবস পালিত
সাতদিন ব্যাপী বিভিন্ন কার্যসূচির মাধ্যমে ২০তম কারগিল বিজয় দিবস পালন করেছে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী । কাছাড়-মিজোরাম ফ্রন্টিয়ার বিএসএফের অধীনে থাকা ০৭ নং, ১৩১ নং, ১৩৪ নং ব্যাটালিয়নের উদ্যোগে বরাক উপত্যকার প্রত্যেক সীমান্ত অঞ্চলের সীমান্ত চৌকিগুলিতে পালন করা হয় কারগিল বিজয় দিবস। কেন্দ্র সরকারের গৃহ বিভাগের নির্দেশে ২০তম কারগিল বিজয় দিবস উদযাপনের সূচনা বিগত ২০ তারিখে হলেও এর সমাপ্তি ঘটে শনিবার ২৭ জুলাই ।
শনিবার ০৭ নং বিএন বিএসএফের ব্যবস্থাপনায় উত্তর করিমগঞ্জ সীমান্তবর্তী কুড়িখালা পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা গোবিন্দপুর গ্রামে আয়োজন করা হয় স্বাস্থ্য শিবিরের । সকাল দশটায় ফিতা কেটে স্বাস্থ্য শিবিরের দ্বারোদ্ঘাটন করেন ০৭ নং বিএন বিএসএফ কমাডেন্ট জে পি মাথানি । ডেপুটি কমাডেন্ট ডঃ লিন্ডার তত্বাবধানে শিবিরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান সীমান্তবর্তী গ্রামের ১৯৫ জন মহিলা পুরুষ। বিনামূল্যে বিতরণ করা হয় ঔষধ। অন্যান্যদের সঙ্গে শিবিরে উপস্থিত ছিলেন উপ অধিনায়ক মনীশ কুমার, পঙ্কজ কবিদেওল, ডেপুটি কমাডেন্ট এস কে উপাধ্যায়, ইন্সপেক্টর আর দেবনাথ প্রমুখ।
অন্যদিকে ১৩৪ নং বিএন বিএসএফের অধীনে থাকা বারোপুঞ্জি সীমান্ত চৌকিতে আয়োজন করা হয় সামগ্রী বন্টন অনুষ্ঠানের । মুখ্য অতিথি হিসাবে সামগ্রী বন্টন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ১৩৪ নং বিএন বিএসএফের অধিনায়ক রবীন্দ্র কুমার, উপ-অধিনায়ক বি কে সিং, বারোপুঞ্জি কোম্পানি কমান্ডার নেকি রাম, পাথু-সুরিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতি মানিক দাস সহ বিশিষ্টরা । তেশুয়া এল পি স্কুল, বারোপুঞ্জি এল পি স্কুল, মনতলী এল পি স্কুল, মহিষাশন এল পি স্কুল সহ স্থানীয় প্রায় একশো পরিবারের মধ্যে বন্টন করা হয় সাইকেল,ফ্যান,সেলাই মেশিন,ফিল্টার,সলার লাইট, স্টোভ,বাসন,খাতা পত্র, ছাতি, সিনটেক্স, ক্যারাম বোর্ড আদি সামগ্রী । ২০ বছর পূর্বের কার্গিল বিজয় দিবসের ইতিহাস ব্যাখ্যা করে আয়োজিত সামগ্রী বন্টন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ১৩৪ নং বিএন বিএসএফ অধিনায়ক রবিন্দ্র কুমার ।
এদিকে ১৩১ বিএন বিএসএফের অধিনায়ক রাজেন্দ্র সিং খারদিওয়েলের উপস্থিতিতে ধলছড়া সীমান্ত চৌকিতে ড্রিল শেডে যুদ্ধবিমানের পরিবার সদস্যদের শ্রদ্ধা শীর্ষক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। বিজয় দিবসে বক্তৃতা প্রদানের মাধ্যমে এবং কারগিল যুদ্ধের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি দিয়ে জে এস এস ভাটি, ডিসি ১৩১ বিএন বিএসএফ এবং সীমান্তে বিএসএফ দায়িত্ব নিয়ে ভিডিও এবং কারগিল বিজয় দিবস প্রদর্শিত হয়।
জারাইলতোলা এবং দলছড়া এলাকার দুই শহিদ চিন্ময় ভৌমিক এবং রামেন্দ্র সিনহার পরিবারের প্রতি সম্মান জানিয়ে বিজয় দিবস উপলক্ষে পরিবারের সদস্যদের কাছে উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। ১৩১ নং বিএন বিএসএফের অধীনে থাকা লেভারপুতা বিওপিতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। শিলচর মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্ক আধিকারিক ডঃ অনন্য দেবনাথ এবং অন্যান্য আধিকারিকদের তত্বাবধানে রক্তদান শিবিরে রক্তদান করেন ৭৮ জন সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানরা । উপস্থিত থাকেন ১৩১ নং সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক রাজেন্দ্রের সিং কার্ডওয়াল, কাছাড় মিজোরাম ফ্রন্টিয়ারের শিলচর হেড কোয়ার্টার ডিআইজি এম এল গার্গ, ডেপুটি কমাডেন্ট এস এন মিস্রা, পবন কুমার সহ অন্যান্য বিএসএফ আধিকারিকরা ।
এদিকে সকাল দশটায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় শহিদ হওয়া সেনা মেজর চমন লাল এবং সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর ইন্সপেক্টর ভারত গুরুং এর শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেন ০৭ নং সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী । জেলাশাসক এম এস মনিভন্ননের উপস্থিতিতে বীর শহিদদের স্মারকস্থলে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর অধিনায়ক জে পি মাথানি সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ।
Comments are closed.