Also read in

অসমের জমিতেই প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে ঢুকতে বাধা দিল বিএসএফ এবং মিজো পুলিশ

সীমান্ত বিবাদ সমস্যা মেটাতে অসম এবং মিজোরাম সীমান্তের দুই দিকে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী বিএসএফ এখন অসমের জমিতে মিজোরামের জবর দখলকে সমর্থন করছে, মিজো পুলিশকে সহায়তা করছে। রবিবার অসমের বিভাগের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এপি দাস যোশী লায়লাপুর এলাকায় পরিদর্শনের এলে তাকে বাধা দেয় মিজোরামের পক্ষে থাকা বিএসএফ জওয়ানরা। কলাশিব জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কাউকে ভেতরে যেতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয় বিএসএফ। যোশী পাল্টা তাদের বলেন, অসমের জমিতে ঢুকতে মিজোরামের অনুমতি নেওয়ার তার কোনও প্রয়োজন নেই।

অসম-মিজোরাম সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতির খোঁজ নিতে রবিবার কাছাড়ে আসেন তিনি। তার সঙ্গে যোগ দেন কাছাড়ের জেলাশাসক সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। তবে এবার মিজো পুলিশ নয়, তাঁকে বাধা দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী বিএসএফ। কলাশিব জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কাউকে ভেতরে যেতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয় বিএসএফ। এনিয়ে একপ্রস্থ কথা কাটাকাটি হয় প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি যোশীর সাথে । তিনি বিএসএফের বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে চাইলে রুখে দাঁড়ায় আইআরপি বাহিনী। অনেকক্ষণ ধরে কথা কাটাকাটি, বাধা দেওয়া এবং বাধা অতিক্রম করার প্রক্রিয়া চলে। মিজোরাম সীমান্তে ধলাখাল সেতু পর্যন্ত গিয়ে সেখান থেকে ফিরে আসেন এপি দাস যোশী। এরপর খুলিছড়ায় নির্মীয়মান এসএসবি ক্যাম্প পরিদর্শন করেন তিনি।

ধলাই বিধানসভা সমষ্টির অন্তর্গত লায়লাপুর এলাকায় যে অংশে অসমের জমি মিজোরামের পুলিশবাহিনী দখল করেছে সেই এলাকায় ঢুকতে না পেরে দীর্ঘক্ষণ কথা কাটাকাটি হয়। এক সময় বিএসএফের বাধা অতিক্রম করে সামনে এগুতেই বাধা হয়ে দাঁড়ায় আইআরপি বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কাছাড়ের জেলাশাসক কীর্তি জাল্লি কলাশিবের জেলাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তবে অপর পক্ষের জেলাশাসক তাকেও উপেক্ষা করেন, তিনি ফোনই রিসিভ করেননি। এরপর যোগাযোগ করা হয় কলাশিবের পুলিশসুপারের সঙ্গে, তিনি একইভাবে কাছাড়ের প্রশাসনের আধিকারিকদের ফোন কল অপেক্ষা করেন। কিছুদিন আগে ৯৯০ ধলাখাল এলপি স্কুলে বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছিল মিজো দুষ্কৃতীরা। সেই বিদ্যালয় পর্যন্ত পৌঁছে যান এপি দাস যোশী, তবে এবার মিজোরাম পুলিশ তাদের গাড়ি দিয়ে পথ আটকানোর চেষ্টা করে। ফের মিজোরাম পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন যোশী।

 

 

রবিবার এমন অদ্ভুত পরিস্থিতির মোকাবিলা করে সীমান্ত পরিদর্শনের পর ধলাই ফরেস্ট আইভিতে এসে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে এক বৈঠক করেন যোশী। এতে উপস্থিত ছিলেন বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যও। বৈঠকে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠক শেষে ডিএফও সানিদেও চৌধুরী জানান, উর্ধ্বতন আধিকারিকদের সীমান্তের বাস্তব পরিস্থিতি অবগত করানোর জন্যই এদিনের সীমান্ত পরিদর্শন। তিনি জানান, এপর্যন্ত যেটুকু জায়গা মিজোরাম তাদের দখলে নিয়ে রেখেছে তার থেকে তাদের আর সামনে এগোতে দেওয়া হচ্ছেনা। তারা এলাকায় লাগাতার পরিদর্শন করছেন এবং এর রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের কাছে পাঠাচ্ছেন। যে জায়গাটুকুও মিজোরাম বাহিনী দখল করেছে, আলোচনার মাধ্যমে সেই জায়গাটুকু ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও করছেন তারা। তবে একদিক থেকে আলোচনা হবে এবং অন্য দিক থেকে সেটা মানা হবে না, এতে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

এদিন প্রথমে তারা অসম-মিজোরাম সীমান্তের লায়লাপুর পরিদর্শন করতে গিয়ে প্রথমে খোঁজ নেন এসএসবি ক্যাম্পের। এরপর বিএসএফ কোথায় রয়েছে, কতটুকু জায়গা মিজোরামের দখলে, এসব সরেজমিন প্রত্যক্ষ করতে ভাইরেংটি পুলিশ গেট পর্যন্ত পৌঁছান। পরিদর্শনে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এপি দাস যোশীর সঙ্গে ছিলেন পিসিসিএফ এএম সিং, সিসিএফ আকাশদীপ বড়ুয়া, সুমন মহাপাত্র, কাছাড়ের ডিএফও সানিদেও চৌধুরী, জেলাশাসক কীর্তি জাল্লি, ম্যাজিস্ট্রেট মারিয়া তানিম ও রেঞ্জ অফিসার দিব্যজ্যতি দেউরি।

Comments are closed.

error: Content is protected !!