Also read in

১৫-বছরের একটি বাবা-হারা মেয়েকে অনিচ্ছাকৃত বিয়ের হাত থেকে বাঁচালো বিএসএফ

১৫-বছরের একটি বাবা-হারা মেয়েকে মাত্র ২০ বছরের ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল করিমগঞ্জ জেলার নিলাম বাজার এলাকায়। সেই খবর পৌঁছে যায় বিএসএফ বাহিনীর এন্টি হিউম্যান ট্রাফিকিং ইউনিটের কাছে। তারা মাঝপথে বিয়ে আটকে দেন এবং মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। ছেলের সঙ্গে পরিবারের কোনও সদস্য ছিলেন না ফলে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এদিকে মেয়ের মায়ের আর্থিক অবস্থার কথা ভেবে তাকে আটক করে রাখেনি পুলিশ, তবে লিখিত একটি বয়ান রাখা হয়েছে।

বিএসএফের তরফের জানানো হয়েছে সম্প্রতি তারা খবর পেয়েছিলেন নিলামবাজার এলাকার কাবুই নামের গ্রামে একটি বিবাহ আয়োজিত হচ্ছে, সেখানে বর-কনে দুজনেই বিবাহের উপযুক্ত নয়। তারা খুব সাবধানে একটি অভিযান চালান এবং বিয়ের আয়োজনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের হাতেনাতে ধরতে সফল হন। তারাই পুলিশকে খবর দেন এবং পুলিশের আধিকারিকরা এসে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কিছু কিছু ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যান।

জানা গেছে, মেয়েটি তার মায়ের সঙ্গে নিজের ইচ্ছেতেই ছেলেটির সঙ্গে বিয়েতে রাজি হয়েছিল। ছেলেটির পরিবারের কেউ সঙ্গে না থাকায় সে এলাকাবাসীর সাহায্য নেয় এবং বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করে। তবে মেয়েটির বয়স মাত্র ১৫ বছর এবং সে বিয়ের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আইনিভাবে অধিকার পায়নি। ভারতবর্ষে বিয়ের জন্য মেয়ের বয়স নূন্যতম ১৮ এবং ছেলের বয়স নূন্যতম ২১ হতে হবে। তবে এই ক্ষেত্রে ছেলেটির বয়স বিয়ের অযোগ্য কেননা তার একুশ বছর হয়নি।

নিলামবাজার থানার ওসি কমলেশ সিংহ বলে, “বিএসএফের তরফে আমাদের জানানো হয় একটি নাবালিকা শিশুর বিয়ের আয়োজন হয়েছে এবং তারা সেটা আটকে দিয়েছেন। আমরাও সেখানে উপস্থিত হই এবং কিছু লোককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়। মেয়ের মা জানান, তার স্বামী জীবিত নন এবং তাদের আর্থিক অবস্থা সঙ্কটজনক। তার মেয়ে নিজেই ছেলেটিকে পছন্দ করেছিল এবং বিয়ের জন্য প্রস্তুত হয়েছিল। তিনি মেয়ের কথায় রাজি হয়ে যান এবং বিয়েতে অংশ নেন। তার অবস্থা বিবেচনা করে আমরা তার কাছ থেকে একটি লিখিত বয়ান রেখেছি এবং তাকে বাড়ি যেতে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ হয়েছে তবে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।”

এখনো গ্রামাঞ্চলে অল্প বয়সে ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার অনেক ঘটনা ঘটে থাকে এবং এর কুপ্রভাব ছোট মেয়েদের উপর পড়তে দেখা যায়। বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স এর বিচক্ষণতায় একটি মেয়েকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।

Comments are closed.