এডিসির সঙ্গে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের অবৈধ সম্পর্ক! অভিযোগ নিয়ে জেলা শাসকের দ্বারস্থ এডিসি'র স্ত্রী
কাছাড় জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক আনিস রাসুল মজুমদারে সঙ্গে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার মারিয়া তানিমের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে, এমনটাই অভিযোগ আনিস রাসুল মজুমদারের স্ত্রী মরিয়ম তাহেরা লস্করের। তিনি ৯ জুন জেলাশাসক কীর্তি জল্লির কাছে এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তিনি তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, দীর্ঘদিন ধরে এই সম্পর্ক চলে আসছে যার প্রভাব তার পরিবারের উপর পড়তে শুরু করেছে। তার স্বামী বারবার মিথ্যে কথা বলে, সরকারি কাজের বাহানায় মারিয়া তানিমের সঙ্গে গোপনে সময় কাটিয়েছেন। তারা খুব কৌশলে তার ১৭ বছরের বিবাহ ভেঙে দিতে চাইছেন। এমনটা হলে দুই কন্যাকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়বেন তিনি।
তিনি আরও জানালেন, জেলা শাসকের কাছে অভিযোগ করায় তার স্বামী এবং পরিবারের কয়েকজন সদস্য তার ওপর অত্যাচার শুরু করেছেন। অভিযোগটি তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। এমনকি তারা তার দুই কন্যার সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেছেন। শেষমেষ পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন মরিয়ম তাহেরা লস্কর। তবে কোনোভাবেই চান না এই অশান্তি এগিয়ে যাক।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি বলেন, “গত ডিসেম্বরে সরকারি কোনও কাজে আনিস রাসুল মজুমদার এবং মারিয়া তানিম একসঙ্গে গুয়াহাটি গেছিলেন। এক সপ্তাহের বেশি সময় সেখানে কাটিয়েছেন। আনিস রাসুল মজুমদার বলেছিলেন, সাত দিনের অনুষ্ঠান রয়েছে। তবে পরে আমরা জানতে পারি অনুষ্ঠানটি তিনদিনের ছিল। অথচ তারা মিথ্যে কথা বলে এক সপ্তাহ সেখানে কাটিয়েছেন। মারিয়া তানিমের শ্বশুরবাড়ির একটি সূত্রে খবরটি জানানো হয়। খবরটি আমরা যাচাই করে দেখি, অভিযোগ সত্য। অনুষ্ঠান তিনদিনের ছিল এবং তারা বাকি দিনগুলো গুয়াহাটিতে বিভিন্ন জায়গায় একসঙ্গে ঘোরাফেরা করে কাটিয়েছেন। এরপর পারিবারিক স্তরে এনিয়ে আলোচনা হয়, আমি আমার স্বামীকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তবে এতে খুব একটা লাভ হয়নি, বরং নানা ভাবে আমার ওপরে মানসিক চাপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাকে দমানোর জন্য মেয়েদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। একজন অতিরিক্ত জেলা শাসকের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে একজন মহিলা খুব বেশি সাহস দেখাতে পারেন না, এটাই সমাজের নীতি। তবে জেলাশাসক একজন মহিলা, তিনি হয়তো দুই কন্যা সন্তানের মায়ের আবেদন শুনবেন, এই বিশ্বাস নিয়ে ৯ জুন লিখিত অভিযোগ জানাই। তবে এরপর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, বাড়িতে দরজা বন্ধ করে স্বামী এবং ভাসুর অশ্রাব্য গালাগাল দিতে থাকেন। তিনি আমার স্বামীকে পরামর্শ দিচ্ছেন আমাকে তালাক দেওয়ার জন্য। এভাবে অকথ্য অত্যাচার করে আমাদের ভয় দেখানো হচ্ছে।”
তিনি জানান, তার দুই মেয়ে এখনও নাবালিকা, তাদের ইনস্টাগ্রামে অশ্লীল ফটো আপলোড করে সমাজে বদনাম করবেন, এভাবেও শাসানোর চেষ্টা চলছে। বাধ্য হয়ে পুলিশের কাছে সুরক্ষার জন্য আবেদন জানান মহিলা। পুলিশ তাকে আশ্বাস দিয়েছে ঘটনার তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করবে এবং প্রয়োজনে তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।
মারিয়া তানিম এসিএস পরীক্ষায় রাজ্যের টপার। তিনি বর্তমানে কাছাড়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক আনিস রাসুল মজুমদারের স্ত্রী মরিয়ম তাহেরা লস্করের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে এতে প্রশাসন স্তরে কিছুটা অস্বস্তির মনোভাব দেখা যাচ্ছে।
মারিয়া তামিমের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে, তিনি কোনো বক্তব্য দিতে চাননি। তিনি স্পষ্ট বলেন, “এব্যাপারে আমি কিছু জানি না, বা কিছু বলতেও চাই না।”
Comments are closed.