Also read in

কোভিড পরীক্ষায় বাধা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ভয় দেখানোর দায়ে গ্রেফতার কালাইনের চার ব্যক্তি

সম্প্রতি চা-বাগানে কোভিড পরীক্ষা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং বিভিন্ন প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র নির্দিষ্ট চা-বাগানগুলোতে একেকদিন পরীক্ষা কেন্দ্র খোলছে। কাটিগড়া বিধানসভার কালাইন চা বাগানে মঙ্গলবার কোভিড পরীক্ষা কেন্দ্র রাখা হয়েছিল এবং এতে একজন স্থানীয় যুবক বাধা দেয়। তারা কোন ডাক্তারের গায়ে হাত না দিলে ও মুখে অশ্রাব্য গালাগাল দিয়েছে এবং ভয় দেখিয়েছে ফলে ডাক্তাররা সেখান থেকে প্রায় পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। কালাইন প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ডাঃ সুমন ভৌমিক স্থানীয় থানায় ৪ ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে একটি এজাহার দায়ের করেন। চার অভিযুক্তকে বুধবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ডাঃ সুমন ভৌমিক জানিয়েছেন, চা বাগান এলাকায় কোভিড পরীক্ষা প্রক্রিয়াতে প্রথম থেকেই নানা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। অনেকেই এগিয়ে এসে পরীক্ষা করাতে চান না এবং কেউ কেউ ভয়ে লুকিয়ে থাকেন। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে প্রতিবাদও হয়। তবে মঙ্গলবার কালাইন চা বাগানে সব সীমা পার করে একেবারে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন স্থানীয় একদল লোক। তারা স্বাস্থ্যকর্মীদের চরম অপমানিত করেছেন, ভয় দেখিয়েছেন এবং স্থানীয় লোকদের টেস্ট না করানোয় উৎসাহ দিয়েছেন। শেষমেষ সেখানে পরীক্ষা করানো সম্ভব হয়নি এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা ফিরে এসেছেন। এই ঘটনাকে উৎসাহ দিলে আগামীতে অন্যান্য চা বাগানে একই ধরনের অবস্থা হবে এবং ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যকর্মীরা শারীরিকভাবে হেনস্থা হতে পারেন। তাই তড়িঘড়ি পুলিশের কাছে পুরো খবর তুলে ধরা হয়েছে এবং লিখিত এজাহার দেওয়া হয়েছে। আগামীতে এলাকার অন্যান্য চা-বাগানে সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী কোভিড টেস্ট প্রক্রিয়া জারি থাকবে।

কাছাড় জেলার পুলিশসুপার বৈভব নিম্বালকর জানিয়েছেন, মে ৪ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তারা গ্রেফতার হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই কালাইন পিপিপি’র অধীনে থাকা সিন্দুরা চা বাগানের বাসিন্দা। ৩৩ বছর বয়সের বাবুল ওরাং, ২১ বছর বয়সের মধু তেলী, ২১ বছর বয়সের বিপন তেলী এবং ৫০ বছর বয়সের অজয় মির্ধা গ্রেফতার হয়েছেন। বুধবার বিকেলে এদেরকে আদালতে পেশ করা হয়েছে। কালাইন প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ডাঃ সুমন ভৌমিক ৪ ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেছিলেন। প্রত্যেক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৈভব নিম্বালকর বলেন, “আমরা গতকাল খবর পেয়েছি কোভিড পরীক্ষা করতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং তাদের অপমান করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১, ৩৫৩, ৩৪, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্টের ৫১ নম্বর ধারা, আসাম মেডিকেল সার্ভিসেস পারসন অ্যান্ড মেডিকেয়ার সার্ভিসেস ইন্সটিটিউশন অ্যাক্টের ৪-নম্বর ধারায় এদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করেছে পুলিশ। পুরো ঘটনার তদন্ত হবে এবং দোষী ব্যক্তিদের পর্যাপ্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। এই দুঃসময়ে স্বাস্থ্য পরিষেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের অপমান করা এবং ভয় দেখানো, পাশাপাশি কোভিড কেয়ারের কাজে বাধা দিলে একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না। আমরা চাইনা এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক। জনগনের কাছে তাই আবেদন রাখা হচ্ছে, এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অন্তত চিন্তা করে দেখবেন, আপনাদের সুরক্ষার জন্যই স্বাস্থ্যকর্মীরা এত পরিশ্রম করছেন।”

Comments are closed.