Also read in

সৌরভ- সুপ্রিয়া এখনও নিখোঁজ, পুলিশ জোর করে তুলে নিয়ে গেল অনশনরত মা-বাবাকে

বাইরে কনকনে ঠান্ডা। সেই ঠাণ্ডাকে উপেক্ষা করে ক্ষুদিরাম বসুর মূর্তির পাদদেশে আমরণ অনশনে বসেছিলেন সোনধন দাস ও সোমবালা দাস। তারা হচ্ছেন রহস্যজনকভাবে শিলচরের রাস্তা থেকে হারিয়ে যাওয়া দুই শিশু সৌরভ সুপ্রিয়ার মা এবং বাবা। তাদের হারিয়ে যাওয়া শিশু দুটির উদ্ধারের দাবিতে তারা বাধ্য হয়ে অনশনের রাস্তা বেছে নেন। কিন্তু সেটাও আর হয়ে উঠল না। পুলিশ মঙ্গলবার তাদের জোর করে অনশনের জায়গা থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে।অভিযোগের উত্তরে পুলিশের বক্তব্য হচ্ছে, অনশনের ফলে তারা অসুস্থ হয়ে পড়বেন এবং চিকিৎসার জন্যই তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, শিলচর জেলা উপায়ুক্তের কার্যালয়ের সামনে থেকে গত ৯ জুন আচমকা নিখোঁজ হয়ে যায় সৌরভ এবং সুপ্রিয়া।এই ঘটনাটি নিয়ে পুলিশের বক্তব্য হচ্ছে, এই শিশুটি তাদের মায়ের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল এবং তারা আর বাড়িতে ফেরেনি। অথচ সোমবালা দাস তার বাচ্চাদের কোথাও লুকিয়ে রেখেছেন বলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত প্রমাণ করতে পারেনি।এই শিশু দুটির উদ্ধারের জন্য পুলিশের কাছে বারবার আবেদন জানানো সত্ত্বেও পুলিশ এ ব্যাপারে বিশেষ কিছু করে উঠতে পারেনি। এ নিয়ে আন্দোলনও হয়েছে। শেষ পর্যন্ত কোন উপায় না পেয়ে শিশুটির মা-বাবা এবার আমরণ অনশনে বসেন। তার আগেও একবার অনশনে বসেছিলেন তারা। কিন্তু উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের আশ্বাসে শেষ পর্যন্ত অনশন তুলে নেন সন্তানহারা অভিভাবকদ্বয়। কিন্তু তারপরও এক মাস অতিক্রান্ত হয়ে যায়। শিশু দুটির কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে শিশুটির মা-বাবা আবার অনশনে বসেন।তাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন শহরের অনেকেই। তাদের সঙ্গে যোগ দেন তারাও।

 

Police officials detaining Sourav-Supriya's parents as they sat on Hunger Strike

It has been more than six months, Sourav and Supriya Das are missing. Their parents sat on hunger strike demanding Police to find their kids. Police detained them and sent them to Silchar Civil Hospital.Smriti Zubin Irani Dr. Rajdeep Roy Kamalakhya Dey Purkayastha Parimal Suklabaidya Prof. Jagdish Mukhi Ram Madhav Himanta Biswa Sarma Sarbananda Sonowal

Posted by My Silchar on Tuesday, December 31, 2019

 

কিন্তু মঙ্গলবার পুলিশ এবং জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আমলারা অনশনরত অভিভাবক দম্পতিকে জোর করে গাড়িতে তুলে নেন।পুলিশ কর্মকর্তাদের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত গাড়িতে উঠতে বাধ্য হন তারা। দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি রয়েছে বলেও অভিযোগে বলা হয়। শুধু তাই নয়, পুলিশকর্তাদের টেনে-হিঁচড়ে এই দুই অভিভাবককে জোর করে গাড়িতে তুলে নেওয়ার দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। পৌঁছে যায় অনেকের কাছেই। পুলিশ নিজেদের সমর্থনে জানায় যে অনশনরত দম্পতির ভালোর জন্যই তাদেরকে উঠিয়ে নেওয়া নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে পুলিশ এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

সোমবার সকালে আমরণ অনশনে বসেছিলেন সোনধন ও সোমবালা। সঙ্গে সঙ্গে খবরটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ততক্ষনে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন শিশু সুরক্ষা নাগরিক কল্যাণ সমিতি, আপনজন সহ আরো অনেক সামাজিক সংস্থার সদস্যরা। শীতের রাতেও সৌরভ সুপ্রিয়ার মা-বাবা একইভাবে অনশনে বসে থাকেন। মঙ্গলবার ভোরে প্রশাসন একটি দল পাঠায়। পুলিশ আধিকারিক এবং জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কয়েকজন আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান।তারা অনশনকারী দম্পতির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন এবং এভাবে অনশন জারি রাখলে স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে বলে জানান। অনশন ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য তাদের অনেক অনুরোধ করা হয়। কিন্তু অনশনকারী দম্পতি তাঁদের কথায় কান না দিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাদেরকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়।

ডিএসপি এ জে বড়ুয়া এই ঘটনার বিষয়ে জানান যে পুলিশ নিজেদের মতো করে শিশু দুটির খোঁজ-খবর করছে এবং চেষ্টা চালাচ্ছে এই অপহরণের ঘটনায় কারা জড়িত তা জানার। অনশনকারী মা-বাবাকে অনশন থেকে তুলে নেওয়ার ব্যাপারে তিনি জানান যে ঠান্ডার মধ্যে এভাবে অনশনে বসে থাকলে তাদের স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে সে কথা মাথায় রেখেই তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের দ্বারা তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।

Comments are closed.