Also read in

প্রতিবাদী মঞ্চের ডাকা কাছাড় বন্ধ ব্যর্থ, কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে উড়ে গেলো ছোটখাটো প্রতিবাদও

সাম্প্রতিক সময়ে কোনও সামাজিক সংস্থার ডাকা বন্ধের বিরুদ্ধে এতটা কড়া ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি জেলা প্রশাসন বা সরকার কর্তৃপক্ষকে। অবশ্যই এই বন্ধকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক অশান্তি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল এবং প্রশাসনের কড়া মনোভাবের দরুন সমস্ত জেলা থেকে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই।

তবে বন্ধের আংশিক প্রভাব জেলার কিছু এলাকায় পড়তে দেখা গেছে এদিন। সকালে শহরের বাইরে কোনও কোনও এলাকা যেমন বাসকান্দি, সোনাবাড়িঘাট ইত্যাদিতে বিক্ষোভ বা পথ অবরোধ প্রদর্শন করে স্থানীয় কিছু দল। তবে পুলিশ এবং সামরিক বাহিনীর জওয়ান দের তৎপরতায় সেসবও বেশী সময় চলতে দেওয়া হয়নি। জেলা শাসক ডাঃ এস লক্ষ্মণণের নির্দেশে এদিন সব ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয় এবং শহরাঞ্চলে কর্মচারীদের এসব ব্যাপারে কোনও অসুবিধা পেতে হয়নি। তবে গ্রামাঞ্চলে কর্মরতাদের কিছু এলাকায় আংশিক হলেও অসুবিধা পোহাতে হয়েছে। শহরে কিছু এলাকায় দোকান বা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতেও দেখা যায় এদিন।

উল্লেখ্য, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শীর্ষস্থানীয় নেতা সুরেন্দ্র কুমার জৈন সম্প্রতি শিলচরে এসে নাগরিকত্ব নবায়ন প্রক্রিয়া এবং মুসলমান সম্প্রদায়ের ব্যাপারে কিছু আপত্তিকর মন্তব্য করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কাছাড় প্রতিবাদী মঞ্চ নামের এক সংস্থা শিলচর সদর থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করে এবং সোমবার জেলায় ১২ ঘণ্টার বন্ধ ঘোষণা করে। তারা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের সাহায্যে এর প্রচারও করে।

বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সহ বিভিন্ন সংগঠন বন্ধটির প্রতিবাদ জানায় এবং বন্ধটি সফল হতে না দেওয়ার জন্য তারা মাঠে নামবে বলেও জানিয়ে দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসন এগিয়ে আসেন। রবিবার সন্ধ্যায় জেলা শাসক ডাঃ এস লক্ষ্মণণ এবং পুলিশ সুপার রাকেশ রৌশন কড়া ভাষায় বন্ধটিকে খারিজ করেন এবং জানান যে সোমবার কোনও ধরনের বন্ধ জেলায় মেনে নেওয়া হবেনা।

জেলা শাসক বলেন এনআরসির মতো প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া চলছে জেলায়। পাশাপাশি বিভিন্ন পরিক্ষাও চলছে, এমন অবস্থায় এসব বন্ধ মেনে নেওয়া যায়না। আর বন্ধ বা প্রদর্শন জাতীয় কোনও ব্যাপারে প্রশাসনের অনুমতি নেয়নি সংস্থাটি।

পুলিশ সুপার রাকেশ রৌশন বলেন, জেলায় বন্ধের নামে অশান্তি ছড়াতে চেষ্টা করলে এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে ছিল সোমবার। বিএসএফ সহ বিভিন্ন সামরিক বাহিনীর সাহায্যও নেওয়া হয় এদিন।

তবে সাধারণ মানুষ প্রশাসনের পাশে ছিলেন। সারা জেলায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং শান্তিপূর্ণ রাখতে তারা সমানভাবে সহযোগিতা করেন।

Comments are closed.