Also read in

কাছাড়ের প্রথম কোভিড মৃত্যু: আক্রান্ত ছিলেন নরসিংপুরের শান্তিবালা নাথ, মৃত্যুর পর মিলল রিপোর্ট

শুক্রবার সোনাই বিধানসভা সমষ্টির নরসিংপুর দ্বিতীয় খন্ডের ৮৫ বছরের শান্তিবালা নাথের মৃত্যু হয়েছিল। তার পরিবারের তিন ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এবং শিলচর মেডিকেল কলেজের চিকিৎসাধীন। ফলে, তিনজন আপদা-মিত্র এবং একজন আত্মীয় মিলে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছিলেন।

এবার জানা গেছে, তিনি মৃত্যুর আগেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যুর পর তার স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়, কেননা তিনি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন। রবিবার তার রিপোর্ট আসার পর স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তিনি পজিটিভ ছিলেন। এটি কাছাড় জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যু। বরাক উপত্যকায় এটি তৃতীয়, এর আগে হাইলাকান্দি জেলার দুই ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

৯ জুলাই রাতে শান্তিবালা নাথের মৃত্যু হয়েছিল, পরিবারের কয়েকজন সদস্য একসঙ্গে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন থাকায় এলাকাবাসীরা তার শেষকৃত্যে যোগ দিতে রাজি হননি। বাধ্য হয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিভাগের কাছে সাহায্য চাওয়া হয় এবং এনডিআরএফ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তিন যুবক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। মুসলিম ধর্মাবলম্বী তিন যুবক এক হিন্দু মহিলার শেষকৃত্য সম্পন্ন করে অনন্য নজির গড়েছিলেন। তাদের সঙ্গে পরিবারের এক সদস্য যোগ দেন, তারা প্রত্যেকে পিপিই কিট পরে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। নাথ সম্প্রদায়ের নিয়ম অনুযায়ী তাকে সমাধিস্থ করা হয়।

অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমিত সত্যওয়ান জানিয়েছেন, সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী তাকে সমাধিস্থ করা হয়েছে, তবে এনিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারন নেই। যারা এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন তারা প্রত্যেকেই অত্যন্ত সুরক্ষিত ভাবে কাজ করেছেন। এছাড়া মৃতদেহ সৎকারের পর এটি কারো সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা থাকছে না।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমন চৌধুরী রবিবার সন্ধ্যেবেলা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, শান্তিবালা নাথের মৃত্যুর পর পরীক্ষা করে জানা গেছে তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। তার স্যাম্পল সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে পরীক্ষা করানো হয়েছে। পরিবারে যেহেতু আগে থেকেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন, তাই বাকি সদস্যদের স্যাম্পল সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য আগেই পাঠানো হয়েছিল। এছাড়া ঘরটিও কনটেইনমেন্ট করার ব্যবস্থা ছিল।

শান্তিবালা নাথের আগে হাইলাকান্দির মঙ্গলি রানী দাস এবং ফয়জুল হক ভূঁইয়া করোনা ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছিলেন। উপত্যকায় জেলা হিসেবে কাছাড়ে করোনায় মৃত্যু এই প্রথম। করিমগঞ্জ জেলায় এখনো ভাইরাসে কেউ প্রাণ হারান নি।

Comments are closed.