Also read in

চাতলা কাণ্ড : জোড়া খুনের স্বীকারোক্তি, যাত্রা দেখে এসে থানায় আত্মসমর্পণ

চাতলায় জোড়া খুনের স্বীকারোক্তি করে পুলিশের কাছে যে বয়ান দিল ‘খুনি’ অখিল দাস তা অনায়াসে কোন সিনেমার কাহিনী হতে পারে ।

রবিবার গভীর রাতে অখিল দাস আত্মসমর্পণ করে শিলচর সদর থানায়। সোমবার তাকে নিয়ে পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে, ম্যাজিস্ট্রেট মারিয়া তানিমের সামনে সে সরেজমিনে দেখিয়ে দেয় কোথায়-কীভাবে সে এই হত্যালীলা ঘটিয়েছে। পরে আদালতে পেশ করে তাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে যায় পুলিশ।

খুনের ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে অখিল দাস জানায়, তার পত্নী রেনু বালা দাস তিন ছেলেকে নিয়ে বছর খানেক আগে তাকে ধোঁকা দিয়ে টাকাকড়ি সহ মেহেরপুর এলাকায় চলে যায়। তার পর থেকেই সে একা নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করছিল। এরমধ্যে একদিন হঠাৎ দেখা হয় মিনার সঙ্গে, ঘুঙ্গুর আওয়াল টিলার বাড়ি থেকে মিনা বৈরাগী টিলায় এসেছিল। সেই থেকেই দুজনের আলাপ পরিচয়, তারপর ঘনিষ্ঠতা। দুজনেই সঙ্গীবিহীন, তাই মাস ছয়েক আগে অখিল মিনাকে তার মেয়ে সংগীতা সহ নিয়ে আসে নিজের বাড়িতে; অনেকটা আধুনিক লিভ-টুগেদারের মত ।

কিন্তু মাসখানেক সুন্দরভাবে কাটলেও মিনা এবং তার মেয়ে অবহেলা করতে শুরু করে অখিলকে। পত্নীর অভাব পূরণে এসে উল্টো অশান্তিময় করে তুলে তার জীবন।

তিন দিন ধরে নাকি তাকে খাবারও দেইনি মিনা, তাই শুক্রবার রাত্রে একটা বোঝাপড়া করার জন্য মুরগি নিয়ে এসে রান্না করতে বলে। কিন্তু মিনা তার কথায় পাত্তাই দেয়নি। তখন আখিল নিজেই মুরগির মাংস রান্না করে মা ও মেয়েকে খেতে বলে।কিন্তু মিনা তার কথা না শুনে আগে রান্না করা খাবার মেয়েকে নিয়ে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। তাতেই মাথায় খুন চেপে যায় অখিলের। রাতের অন্ধকারে ঘরে থাকা শাবল দিয়ে মাটিতে ঘুমিয়ে থাকা মিনার মাথা ও শরীরে পরপর তিনবার আঘাত করে। তারপর মিনার পরনের শাড়ি দিয়ে গলায় শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে সঙ্গীতাকে। রাত একটা নাগাদ মৃতদেহ দুটি বিলের জলের মধ্য দিয়ে টেনে নিয়ে পাশের জঙ্গলে ফেলে দেয় সে। তারপর বসে গাঁজা এক ছিলিম সেবন করে বেরিয়ে পড়ে। প্রথমে জিরিঘাটে বিকাশ নামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে শনিবার দিনটা সেখানে কাটিয়ে রবিবার শিলচরে আসে। কালিবাড়ি চর, আশ্রম রোডে ঘোরাঘুরি করে রাতে অম্বিকাপুর পূর্বপাড়ায় যাত্রাপালা দেখে এবং সিদ্ধান্ত নেয় আত্মসমর্পন করার। গভীর রাতে শিলচর সদর থানায় আত্মসমর্পণ করে সে।

ঘটনার পরিস্থিতিতে অখিলের বয়ানকে মোটামুটি বিশ্বাসযোগ্য মনে করছে পুলিশ; হত্যাকাণ্ডে অন্য কেউ জড়িত নয় বলে ও তাদের ধারণা। তবে হত্যার মোটিভ সম্বন্ধে এখনো কিছুটা সন্দেহ রয়েছে।

পূর্ববর্তী ঘটনা জানতে হলে নিচে ক্লিক করুন :

 

চাতলায় জোড়া খুন, নিহত মা ও মেয়ে, চাঞ্চল্য উপত্যকা জুড়ে

 

 

Comments are closed.

error: Content is protected !!