Also read in

কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে বরাক উপত্যকার উপর দিয়ে মিজোরাম ফিরে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী জোরাম থাঙ্গা

মেঘালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পরিদর্শনকালে উত্তর-পূর্বের অন্যান্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগ দেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরাম থাঙ্গাও। শুক্রবার তিনি কাছাড় জেলার উপর দিয়ে মেঘালয় গিয়েছিলেন এবং রবিবার সকালে একইভাবে সড়কপথে ফিরেছেন। যেহেতু মিজোরামের সঙ্গে সীমানা বিবাদ নিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত, ফলে সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কাছাড় জেলার উপর দিয়ে যাওয়ার সময় কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়। তবে জেলার কোথাও মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনও ক্ষোভ দেখা যায়নি। কোনও প্রতিবাদ প্রদর্শন বা গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করেননি কাছাড় জেলার শান্তিপ্রিয় মানুষ।

মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার সকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় শিলং থেকে রওনা হয়। কাছাড় জেলার ঢোকার পথে জেলাশাসক কীর্তি জল্লি এবং পুলিশসুপার বৈভব চন্দ্রকান্ত নিম্বালকর মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানান এবং তাকে শিলচরের মিজোরাম সার্কিট হাউস পর্যন্ত নিয়ে আসেন। সেখানে প্রায় ৪৫-মিনিট অবস্থান করেন মুখ্যমন্ত্রী জোরাম থাঙ্গা। খানিকটা বিশ্রাম করার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠক হয়েছে তার। তবে এব্যাপারে জনসমক্ষে কোনও তথ্য তুলে ধরা হয়নি। সার্কিট হাউসের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে সাংবাদিকরা একসময় কথা বলতে চাইলে মুখ্যমন্ত্রীর পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট জানিয়ে দেন, জোরাম থাঙ্গা এই মুহূর্তে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন না।

অসম এবং মিজোরামের সীমান্ত বিবাদ বহুদিন ধরে চলছে, তবে গতবছর থেকে মিজোরাম জোর করে অসমের জমি দখল করতে শুরু করেছে। কাছাড় জেলার সাড়ে ছয় কিলোমিটারের বেশি জমি ইতিমধ্যে দখল করে নিয়েছে মিজোরাম। এদিকে হাইলাকান্দি এবং করিমগঞ্জেও লাগাতার জমি দখলের চেষ্টা চলছে। কাছাড় এবং হাইলাকান্দি জেলায় সরকারি বিদ্যালয়ে বোমা মেরে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। কাছাড়ের এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে নিয়ে মিজোরামে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে লাগাতার কাছাড়ের জেলা প্রশাসনের কাছে হুমকিভরা চিঠি পাঠাচ্ছে মিজোরামের কোলিসিব জেলার প্রশাসন। কেন্দ্র সরকারের মধ্যস্থতায় বহুবার দুই রাজ্যের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে দেওয়া কথা অসমের পক্ষ থেকে রাখা হলেও, মিজোরাম বারবার নিজের কথার খেলাফ করেছে। তবে এই বিষয়গুলো নিয়ে কোনো কথাবার্তা হয়েছে কিনা সেটা জনসমক্ষে স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরা হয়নি।

এদিকে সোনাইয়ের বর্তমান বিধায়ক করিমুদ্দিন বড়ভূঁইয়া (সাজু) রবিবার শিলচরে দাঁড়িয়ে বলেছেন, মিজোরামকে অসমের এক সেন্টিমিটার জমিও দেওয়া হবে না। তবে সমস্যা কথাবার্তার মাধ্যমে মিটিয়ে নিতে হবে বলেই তার অভিমত। তিনি বলেন, “অসমের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে নেডার আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। উত্তর-পূর্বের প্রত্যেক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তার সুসম্পর্ক রয়েছে। আমার বিশ্বাস তার নেতৃত্বে এই সমস্যা আগামীতে মিটবে। গত এক বছরে কাছাড় জেলার বিরাট অংশ দখল করে নিয়েছে মিজোরাম, এটা সত্যি কথা। তবে আমরা চাইনা মিজোরাম অসমের এক সেন্টিমিটার জমিও দখল করুক। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে এবং এতে অনেক বেশি সময় লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। সমস্যা মিটে যাওয়া পর্যন্ত কোনোভাবেই যাতে অসমের নাগরিকরা মিজোরামের পুলিশ এবং জনগণের দ্বারা নিগৃহিত না হন, এটা দেখার দায়িত্ব সরকারের।”

Comments are closed.