কংগ্রেস-এআইইউডিএফ জোট বরাকে ১২টি আসন পাবে, দাবি আজমলের; অসম-মিজোরাম সীমান্ত সংঘাত হিমন্তের রাজনৈতিক পরিকল্পনা
কংগ্রেসের সঙ্গেই জোটে যাচ্ছে এআইইউডিএফ, এতে বরাক উপত্যকার ১৫ টি আসনের মধ্যে ১২টিতে তারা জয়ী হবেন, এমনটাই দাবি এআইইউডিএফ সুপ্রিমো বদরুদ্দিন আজমলের। চার দিনের বরাক উপত্যকা সফরে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিলচর এসে পৌঁছান তিনি। বিমানবন্দর থেকে আসার পথে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন এবং নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত প্রায় পাকাপাকি হয়ে গেছে। রাহুল গান্ধীর সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছে, আমরা আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনায় রয়েছি। তবে এই জোট অত্যন্ত সফল হবে। বরাক উপত্যকায় আমরা ১২টি আসনে জয়ী হব। বিজেপি যেভাবে জনগণকে ঠকিয়েছে সেখানে আমরাই সাধারণ মানুষের পছন্দ।”
এদিন বিমানবন্দর থেকে বিরাট রেলি করে কাছাড়ে ঢোকেন তিনি। পুরোপুরি নির্বাচনী প্রচারের কায়দায় বরাকে ঢুকেছেন বদরুদ্দিন আজমল। কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে যাওয়ার কথা পুনরায় ঘোষণা করা ছাড়াও তিনি হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ তুলে ধরেন।
মাদ্রাসা বন্ধ হওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অসমে মাদ্রাসা বন্ধ হবে কি হবে না এটা একজন মন্ত্রী ঠিক করতে পারেন না। এরকম সিদ্ধান্ত কেবিনেট স্তরের হয়,আর সেটা করতে হবে, সেটা করতে গেলে নানান প্রক্রিয়া রয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে হিমন্ত এ ধরনের বয়ান দিতে পারেন না, এটা অবশ্যই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। হিমন্ত আমাকে বাংলাদেশে চলে যেতে বলেছেন, অথচ প্রত্যেকবার নির্বাচনের আগে তিনি নিজেই গোপনে বাংলাদেশ সফরে যান। সেখানে কার সঙ্গে তার বৈঠক হয় এবং আট-দশ দিন থেকে কি করেন সেটা অনেক বড় রহস্য।”
মিজোরাম এবং অসমের মধ্যে সীমান্ত সংঘাতের পেছনেও হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন বদরুদ্দিন আজমল। তিনি বলেন, “দুই রাজ্যের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আগেও কথাবার্তা হয়েছে, তবে এমন পরিস্থিতি কখনও হয়নি। অবাধে অসমের জমি দখল করছে মিজোরাম বাহিনী, চলছে হত্যালীলা। অথচ সরকার পক্ষ কিছুই করতে পারছে না, এর কারণ হিমন্তবিশ্ব শর্মা পরোক্ষভাবে এই ঘটনায় মদদ যোগাচ্ছেন। তিনি নেডার আহবায়ক। মিজোরাম এবং অসম এর আওতায় রয়েছে, অথচ তিনি এসব ব্যাপারে চুপ। এতেই প্রমাণিত হয়, হিমন্তই এই পুরো ঘটনাচক্রের মাস্টারমাইন্ড।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কংগ্রেস নেতা কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ একই অভিযোগ তুলেছিলেন। তিনিও বলেছিলেন অসম মিজোরাম সীমান্ত সংঘাতের মাস্টারমাইন্ড হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। যদিও স্বাস্থ্যমন্ত্রী এব্যাপারে কোন পাল্টা মন্তব্য করেননি।
এনআরসি প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার হিমন্তবিশ্ব শর্মা প্রতীক হাজেলার ওপর দোষারোপ করেন। এই প্রসঙ্গ টেনে সরকারের সমালোচনা করেন এআইইউডিএফ সুপ্রিমো। তিনি বলেন, “প্রতীক হাজেলার ওপর দোষ চাপিয়ে একপ্রকার সরকারের ব্যর্থতাই স্বীকার করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। যদি তারা স্বীকার করে থাকেন যে এত বড় একটি বিষয়ে তারা ব্যর্থ হয়েছেন, তাহলে তাদের সরকার থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত। কোন বিষয়ে ব্যর্থ হলে তার দায় নিতে হয় এইটুকু দায়িত্বজ্ঞান থাকলে তারা সরকার থেকে সরে দাঁড়াবেন।”
চার দিনের সফরে বরাক উপত্যকার তিন জেলায় বিভিন্ন জনসভা করবেন বদরুদ্দিন আজমল। তার সঙ্গে গুয়াহাটি থেকেও বেশ কিছু নেতা বরাকে এসেছেন। এছাড়া রয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক সহ অন্যান্য নেতারা।
Comments are closed.