কাটিগড়ার ভাঙ্গন স্থলে মন্ত্রী পীযুষ হাজারিকা অনুমোদিত গার্ড ওয়াল নির্মাণে চলছে সীমাহীন দুর্নীতি, দেখা নেই ঠিকাদার এবং সাইট ইঞ্জিনিয়ারের
সরকার দুর্নীতি মুক্ত সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিলেও দুর্নীতির ঘটনাগুলি অহরহ ঘটে চলেছে। জলসম্পদ দফতরের কর্মকর্তা ও এর সঙ্গে জড়িত ঠিকাদাররা সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছেন এবং নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ সারছেন।
কাটিগড়ার একটি গ্রাম শান্তিপুর। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে বন্যা ও ভাঙনের শিকার এই শান্তিপুর গ্রামটি বরাক নদীর তীরে অবস্থিত এবং প্রতি বছর বর্ষার সময় তাদের জমির বরাকের গ্রাসে তলিয়ে যায়।
দীর্ঘদিন ধরে গ্রামবাসীরা এই নদী ভাঙ্গন রোধ করার জন্য আবেদন নিবেদন জানিয়েও কোনো ফল পাননি।
অবশেষে জলসম্পদ মন্ত্রী পীযূষ হাজারিকা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, ঐ ১৩০ মিটার ভাঙন কবলিত এলাকার জন্য একটি সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণের অনুমোদন দেন এবং জলসম্পদ বিভাগের অধীনে কাজ শুরু হয়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই দুর্নীতি শুরু হয় বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ার সাইট পরিদর্শন বন্ধ করে দেন এবং ঠিকাদাররাও বাঁধ নির্মাণের জন্য নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করতে শুরু করেন।
গ্রামবাসীরা এই দায়িত্বের অভাব এবং বিল্ডিং স্ট্যান্ডার্ডের চরম লঙ্ঘন এবং নিম্ন মানের ইট এবং অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবহার সম্পর্কে বারবার অভিযোগ করেছেন।
বুধবার বরাক বুলেটিনের রিপোর্টার ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সেখানে কোনো সাইট ইঞ্জিনিয়ারকে পাওয়া যায়নি। পরে নির্মাণস্থলে এসএ বলে দাবি করা এক ব্যক্তি সেখানে আসলেও ক্যামেরা দেখা মাত্রই তিনি সরে যেতে থাকেন। এই নির্মাণে তার ভূমিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কোনও দায় অস্বীকার করেন এবং প্রতিবেদককে তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করতে বলেন। নিজেকে এসএ বলে দাবি করা হুসেইন আহমেদ চৌধুরীকে নির্মাণের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কোনো জবাব দেননি।
নির্মাণস্থলে কাজের বিবরণ লেখা কোনো নির্মাণ কাজের সাইনবোর্ড ছিল না। স্থানীয় এক গ্রামবাসীর অভিযোগ, “নির্মাণে ব্যবহৃত ইটগুলি এতটাই ভঙ্গুর যে কেউ খালি হাতেই ভেঙে ফেলতে পারে। যদি এমন অবস্থার সাথে সুরক্ষা প্রাচীর নির্মাণ করা হয় তবে এক বর্ষায় পুরো প্রাচীর ধুয়ে যাবে”।
তিনি আরও বলেন, “আমরা সন্তোষ মোহন দেবের সময় থেকে সুরক্ষা প্রাচীর ও বাঁধের জন্য লড়াই করে আসছি, কিন্তু এই ভাঙ্গন স্থলের জন্য কিছুই করা হয়নি; ৫০ বছর হয়ে গেছে। শেষে পীযূষ হাজারিকা এই সাইটটি পরিদর্শন করে কাজটি অনুমোদন করেন । আমরা এর জন্য তাকে সত্যিই ধন্যবাদ জানাই৷ কিন্তু এর পরেই, এসডিও সাইটটি পরিদর্শন করা বন্ধ করে দেন এবং তিনি এমন লোকদের নিয়োগ করেন যারা এই সাইটটির নির্মাণ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। সেখানে কোনো সাইনবোর্ড বা কাজের কোনো বিবরণ নেই। আজকাল মানুষ কাজ শুরুর অনেক আগেই সাইনবোর্ড লাগায়, কিন্তু এখানে কিছুই নেই। ঠিকাদার এই কিজ করার জন্য এখানে ইট নিয়ে আসলেও ইটগুলো এতই নিম্নমানের যে জলে সেগুলো দ্রবীভূত হয়ে যায়, এগুলো শুধু কাঁচা মাটির ব্লক।”
Comments are closed.