সর্ষের মধ্যেই ভূত: ভোটগণনায় কারসাজি, গ্রেফতার কাউন্টিং সুপারভাইজার
পঞ্চায়েত ভোট গণনার কাজে নিযুক্ত এক কাউন্টিং সুপারভাইজার বিট অফিসারকে আজ গ্রেপ্তার করা হলো গণনায় অসদুপায় এবং কর্তব্যে গাফিলতির জন্য। হাইলাকান্দি জেলার অসম গণপরিষদ দলের ভাটিরকুপা-বোয়ালিপার কেন্দ্রের জেলা পরিষদ প্রার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এজিপি দলের জেডপিসি প্রার্থী হিলাল উদ্দিন বরভূঁইয়া রিটার্নিং অফিসার আদিল খানের কাছে গতকাল রামনাথ পুরের বিট অফিসার আবুল হোসেন মজুমদারের বিরুদ্ধে গণনা কেন্দ্রে অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অভিযোগ অনুযায়ী ১০ নং হলে কাউন্টিং সুপারভাইজার হিসেবে নিয়োজিত মজুমদার নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করে এজিপি দলের সাথে এআইইউডিএফে’র ভোট মিলিয়ে দিয়েছিলেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে রিটার্নিং অফিসার আদিল খান পুনর্গণনার আদেশ দিলে দেখা যায় ৬৯টি ভোটকে ১১৩ হিসেবে দেখানো হয়েছিল। আরো প্রকাশ পায় যে, তার দুজন আত্মীয় এআইইউডিএফ দলের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এই জেডপিসিতেই দাঁড়িয়েছেন যা তার স্ব-ঘোষনা পত্রে (সেলফ ডিক্লারেশন) উল্লেখ নেই।
রিটার্নিং অফিসার আদিল খান সাথে সাথে পুলিশ ডেকে তাকে গ্রেফতারের আদেশ দেন। সদর থানার ওসি সুরজিৎ চৌধুরী জানিয়েছেন যে, আবুল হোসেন মজুমদারের বিরুদ্ধে রিপ্রেজেন্টেশন অফ পিপলস অ্যাক্ট, ১৯৫১ এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী মামলা রুজু করা হয়েছে।
অন্য একটি ঘটনায় একজন ডামি এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যে এজিপি দলের এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল কিন্তু বাস্তবে সে ছিল একজন নির্দল প্রার্থীর এজেন্ট।
এদিকে, অপর এক ঘটনায় এক গাঁও পঞ্চায়েত সদস্যা প্রার্থীর স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যিনি স্ত্রীর পাসে নিজের ফটো লাগিয়ে গণনা হলে প্রবেশ করেছিলেন। স্বামী রাত লকআপে কাটালেও উনার স্ত্রী কিন্তু ভোট গণনা শেষে বিজয়ী হয়ে গেছেন। কিন্তু এই বিজয়ে উল্লসিত হওয়ার মতো কেউ গণনা কেন্দ্রে ছিল না, কারণ স্বামী ছিলেন লকআপে। আর অন্য কোন এজেন্টকে গণনা কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
ভুয়া এন্ট্রি পাস নিয়ে ঢোকার চেষ্টায় ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বিএমএইচএস স্কুল গণনা কেন্দ্র থেকে। “ওরা স্ক্যান করা এন্ট্রি পাস নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করছিল”, জানালেন ওই গণনা কেন্দ্রে নিযুক্ত আসাম পুলিশ অফিসার।
আরেকটা মজাদার ঘটনায় জানা যায়, পাঁচ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারিত হল টস্ করে কারণ গণনা শেষে টাই হয়ে গিয়েছিল। এদের মধ্যে আছেন লালামুখ জিপির একজন আঞ্চলিক পঞ্চায়েত প্রার্থী, তিনজন নিশ্চিন্তপুরের গাঁও পঞ্চায়ত সদস্য প্রার্থী এবং একজন পাঁচগ্রামের জিপি প্রার্থী । “যে সকল প্রার্থীদের ফলাফল টাই হয়ে গিয়েছিল, তারা এই অবস্থাকে আনন্দের সাথে গ্রহণ করেছেন” জানালেন হাইলাকান্দি জেলা পরিষদ সিইও।
Comments are closed.