কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তবে সুস্থ হয়ে উঠছেন অনেকেই ; বরাকে একদিনে আক্রান্ত ২৯, সুস্থ ১৮
বহির্রাজ্য থেকে ঘরে ফিরছেন শ্রমিক, ছাত্র, আটকা পড়া লোকেরা। তাই বাড়ছে করোনা সংক্রমনের ঘটনা ও। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কাছাড় জেলায় এ পর্যন্ত ৫২১৪ জন ব্যক্তি ফিরে এসেছেন।
রবিবার বরাক উপত্যকার মোট ২৯ জন ব্যক্তি কোভিড সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন। একদিনে উপত্যকায় এটিই সর্বোচ্চ। কাছাড় জেলার ৬ জন, করিমগঞ্জ জেলার ১০ জন এবং হাইলাকান্দির ১৩ জন এদিন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সুখকর সংবাদ হলো শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং হাইলাকান্দি সিভিল হাসপাতাল থেকে মোট ১৮ জন ব্যক্তি সুস্থ হয়ে ফিরেছেন। এর ফলে উপত্যকায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় আড়াইশোয় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার সুস্থ হওয়ার তালিকা একশর কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
এদিন কাছাড় জেলার আক্রান্ত ব্যক্তিরা হলেন কপিল আহমেদ বরভুইয়া (৩৫), জুবায়ের হোসেন লস্কর (১৮), আবু সুলা(২৬), রুমানা বেগম(২০), মনিজুল আহমেদ লস্কর(১৮) এবং হোসেন আহমেদ (২৪)। এরা প্রত্যেকেই উত্তর-পূর্বের বাইরে থেকে ফেরা যাত্রী এবং সরকারি কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের সোয়াব স্যাম্পল পরীক্ষার পর পজিটিভ পাওয়া গেছে। তাদের শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড জোনে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে। তারা যে এলাকায় ছিলেন সেগুলো কনটেনমেন্ট জন হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
করিমগঞ্জের ১০ জন আক্রান্ত ব্যক্তিরা হলেন, আবুল হোসেন (১৯), মোহাম্মদ জয়নাল আহমেদ (২৩), ময়জুল হক (৩৩), শামিম আহমেদ (২২), সালমান উদ্দিন (১৯), জাবরুল হোসেন (২২), নাজিম উদ্দিন (২২), রেহাম উদ্দিন (২২), আবু সালেহ (২১) এবং আব্দুল মনাফ (৫৮)। আব্দুল মনাফ করিমগঞ্জের বাসিন্দা হলেও তিনি কাছাড় জেলার সরকারি কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন, তাই তার চিকিৎসা শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হবে। বাকিদের চিকিৎসা করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে হবে। জেলার যুগ্ম স্বাস্থ্য সঞ্চালক অনুপ দৈত্যারি জানিয়েছেন, জেলায় এদিন আক্রান্তের সংখ্যা দশের বেশি, তবে এখনো পুরোপুরি হিসাব তাদের কাছে আসেনি। এদিকে স্থানীয় হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ৫০ ছাড়াচ্ছে, তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রবিবার ১৩ জন ব্যক্তিকে সুস্থ ঘোষণা করে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তারা আপাতত হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। একইভাবে হাইলাকান্দির সিভিল হাসপাতাল থেকে ৫ জন রোগীকে সুস্থ ঘোষণা করে মুক্তি দেয়া হয়েছে। । এর আগে করিমগঞ্জ জেলার সিভিল হাসপাতাল থেকে চার ব্যক্তিকে সুস্থ ঘোষণা করে মুক্তি দেওয়া হয়।
শনিবার এবং রবিবার মিলে প্রায় হাজার খানেক যাত্রী কাছাড় জেলায় ফিরেছেন। এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজারের বেশি যাত্রী রাজ্যের বাইরে থেকে কাছাড় জেলায় ফিরেছেন। সড়ক, রেল এবং বিমানে যাত্রীরা ফিরেছেন এবং তাদের প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরেই জেলায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। এখন সরকারি কোয়ারেন্টাইনে মোট ৩৮৮৪ জন লোক রয়েছেন এবং ২৬৯৫ জন যাত্রীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার অনুমতি দিয়ে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বিমান যাত্রা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ১৫০০ যাত্রী কাছাড় জেলায় এখন পর্যন্ত ফিরেছেন। কলকাতা এবং দিল্লি থেকে বিমান যাত্রীদের নিয়ে শিলচরে ফিরছে। কুম্ভীরগ্রাম বিমানবন্দরেই যাত্রীদের সোয়াব স্যাম্পল সংগ্রহ করা হচ্ছে। স্যাম্পলগুলো শিলচর মেডিকেল কলেজে সরাসরি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কাছাড় জেলার যাত্রীদের শিলচর এনআইটিতে সরকারি কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। যাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসছে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। অন্য জেলার যাত্রীদের সেখানের প্রশাসনের আধিকারিকরা এসে নিয়ে যাচ্ছেন। বিমান যাত্রার ক্ষেত্রে এসওপি সাধারণ থেকে একটু আলাদা। ১০ বছর পর্যন্ত শিশু, ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি, একা যাত্রা করা মহিলা, চিকিৎসা করিয়ে আসা ব্যক্তি এবং কোন শারীরিক সমস্যায় ভোগাদের প্রাথমিক পরীক্ষা এবং সোয়াব স্যাম্পল সংগ্রহের পর বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রাথমিকভাবে তাদের ঘরটিকে কনটেইনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে। যদি পরীক্ষায় তাদের স্যাম্পল নেগেটিভ হয় তাহলে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনের অনুমতি থাকবে।
Comments are closed.