Also read in

কারফিউ ভেঙে ঘোরাফেরা! শিলচরে আটক ৫০ যুবক, আরও কঠোর হবে প্রশাসন, জানালেন পুলিশসুপার

কাছাড় জেলায় ক্রমশ ঊর্ধ্বগামী করোনা সংক্রমনের গ্রাফ দেখে রাজ্য সরকার ইঙ্গিত দিয়েছেন এই ধারা চললে আগামীতে আরও কঠোর নীতি গ্রহণ করা হবে। তবে গত বছর থেকে এবার পুলিশের মনোভাব কিছুটা নরম, অবশ্যই এর বিভিন্ন কারণ রয়েছে। তবে এই সুযোগে শহরের একাংশ মানুষ বিকেল থেকে সন্ধে পর্যন্ত দিব্যি ঘোরাফেরা করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটু আলাদা মনোভাব নিয়ে লকডাউনে ঘোরাফেরা করা কিছু লোককে আটক করার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ। এতে ধরা পড়েন শহরের ৫০ জন যুবক। এবার থেকে কারফিউ চলাকালীন কাউকে রাস্তাঘাটে ঘোরাফেরা করতে দেখলে সরাসরি আটক করবে পুলিশ, এমনটাই জানানো হয়েছে।

রাজ্য সরকারের তরফে নতুন এসওপি জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কাছাড় সহ বেশ কয়েকটি জেলায় সংক্রমণের হার যদি ২১ জুন পর্যন্ত নিম্নগামী না হয়, তাহলে বড় ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে। এছাড়া এই জেলাগুলোর প্রশাসনকে ব্যর্থতার দায় নিতে বলা হয়েছে। এরপরেই প্রশাসন এবং পুলিশ অনেকটা কঠোর হওয়ার চেষ্টা করছে।

সদর থানার ওসি দিতুমনি গোস্বামী জানিয়েছেন, কনকপুর, রাঙ্গিরখাড়ি, মালুগ্রাম, ইটখোলা, তারাপুর সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫০ জন যুবককে আটক করা হয়েছে। আপাতত ফাইন কেটে এদের ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। তবে ভবিষ্যতে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে তৈরি পুলিশ বিভাগ। এর দায় নিতে হবে একাংশ বেপরোয়া জনগণকেই।

তিনি বলেন, ‘সরকারি নিয়ম অনুযায়ী দুপুর ১টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত কারফিউ রয়েছে। সমাজে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমিয়ে আনার জন্যই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম, সাধারণ মানুষ গত বছর থেকে এবার অনেক বেশি সচেতন, তাই এবার পুলিশের মনোভাব একটু নরম। তবে একাংশ মানুষ এর ফায়দা নিতে শুরু করেছেন, বিকেল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত তারা বিভিন্ন এলাকায় দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছেন, জমায়েত করছেন। এতেই আমরা সিদ্ধান্ত বদল করতে বাধ্য হয়েছি। এদিন ৫০ জন বেপরোয়া যুবককে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কারফিউ লংঘন করার অভিযোগ রয়েছে।”

গতবছর করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে যখন লকডাউন ঘোষণা করা হয়, পুলিশ এবং সিআরপিএফ কর্মীরা অনেক কঠোর মনোভাব নিয়ে কাজ করেছিলেন। তখন সন্ধ্যার পর রাস্তায় কাউকে দেখা যেত না। তবে এই বছর পরিস্থিতি একটু আলাদা। বিকেলে দিব্যি গাড়ি বাইক ইত্যাদি নিয়ে রাস্তায় বেরোচ্ছেন অনেকে। রাত গভীর হওয়া পর্যন্ত তারা ঘোরাফেরা করছেন।

গত বছর কোনও এলাকায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তি রয়েছেন শুনলে অনেকেই সাবধান থাকতেন। পাড়ায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী থাকা সত্ত্বেও জনমনে খুব একটা আতঙ্ক বা সচেতনতা নেই। অনেকে বিভিন্ন পাড়ায় জমায়েত হয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। পুলিশের গাড়ি পাড়ায় ঢুকলে কেউ কেউ আড়াল হচ্ছেন, আবার তারা চলে গেলে দিব্যি জমায়েত বজায় থাকছে।

রাজ্যের অন্যান্য জেলায় সংক্রমণ দ্রুত নেমে এলেও কাছাড়ে সেটা কখনো বাড়ছে আবার কখনো কমছে। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সরকার কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পুলিশ বিভাগ কড়া পদক্ষেপ নেওয়াতে হয়তো জনমনে আর একটু সচেতনতা বাড়বে।

কাছাড় জেলার পুলিশসুপার বৈভব চন্দ্রকান্ত নিম্বালকর বলেন, “আমরা জনগণকে হেনস্থা করতে চাইছি না, তবে একাংশ মানুষ কিছুতেই নিয়ম মানতে রাজি নন। এবার থেকে পুলিশের মনোভাব আরেকটু কড়া থাকবে এবং যতদিন পর্যন্ত আগামী নির্দেশ আসছে না, কারফিউ চলাকালীন কাউকে রাস্তাঘাটে দেখা গেলে আটক করা হবে।”

Comments are closed.