Also read in

গোলদিঘি মল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার, সন্দেহ অতিরিক্ত মাদকদ্রব্য সেবন

 

শিলচর গোলদিঘি মলে আজ দুপুরে একটি মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়, মৃতের নাম সুদাম গোয়ালা। রাধেশ্যাম গোয়ালার ছেলে সুদাম সোনাই থানার অন্তর্গত কাজিডহর তৃতীয় খণ্ডের বাসিন্দা ছিল। ঘটনায় প্রকাশ, ৩৫ বছর বয়স্ক ছেলেটি মলের ফুড কোর্টের পারিজাত রেস্টুরেন্টে খেতে এসেছিল, পরে সে শৌচাগারে প্রবেশ করে। কিন্তু দেড় ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও ছেলেটি বাইরে বেরিয়ে না আসায় রেস্টুরেন্টের কর্মচারিদের সন্দেহ হয়। তারা বন্ধ দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেন, কিন্তু ভেতর থেকে ছেলেটির কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায় না।

রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার বাধ্য হয়ে মলের ম্যানেজারকে ডেকে পাঠান। মলের ম্যানেজারও সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশে খবর পাঠান। এদিকে ঘটনার গুরুত্ব বুঝে ম্যানেজার সঙ্গে সঙ্গে মালিক ডক্টর জেপি দাসকেও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রেস্টুরেন্টে পৌঁছানোর জন্য খবর পাঠান। মালিক দাস সঙ্গে সঙ্গেই মলে পৌঁছে তার নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে ভেতরে কি হচ্ছে তা দেখার জন্য তালা ভেঙ্গে দরজা খোলার নির্দেশ দেন। এদিকে সিকিউরিটি ম্যানেজার বনমালী সেন এ প্রসঙ্গে আমাদের বলেন, ” আমি ওদেরকে দরজা না ভেঙ্গে পুলিশ পৌঁছানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা আমার কথা শুনেনি এবং দরজা ভেঙ্গে দেয়”।

দরজা ভাঙ্গার পর সুদামকে শৌচাগারে নিচে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই জে পি দাস ছেলেটিকে পরীক্ষা করেন এবং ক্লিনিক্যালি মৃত বলে ঘোষণা করেন। পারিজাতের কর্মচারিরা শৌচাগারে অনুসন্ধান করে একটি সিরিঞ্জ খুঁজে পায়। পরে গোয়ালার হাতের মধ্যেও ড্রাগস নেওয়ার চিহ্ন পাওয়া যায়। তা থেকে অনুমান করা হয় সুদাম ড্রাগসের শিকার ছিল। তার পকেট থেকে একটি রিসিটও পাওয়া যায় যাতে জানা যায়, সে জীবন আনন্দ নামে একটি মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের জন্য দুই হাজার ২৩০০ টাকা দিয়েছিল।

সুদামকে তড়িঘড়ি মৃত বলে ঘোষণা করা এবং পুলিশ পৌঁছার আগেই দরজা ভেঙ্গে অনুসন্ধান চালানোয় স্বভাবতই এ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠছে। এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত আমাদের প্রতিনিধি জানান, সিরিঞ্জটি প্রাথমিকভাবে দেখা গেলেও পরে হঠাৎ করেই এটি উধাও হয়ে যায়। এমন কি পুলিশ যখন শৌচাগারে প্রবেশ করে তখনও সিরিঞ্জটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে অনুসন্ধানের পর একটি ডাস্টবিনের পাশ থেকে সিরিঞ্জটি উদ্ধার করা হয়।

এদিকে পুলিশ আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, “আমরা পোস্টমর্টেমের জন্য মৃতদেহটি হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছি। আমরা ঘটনার সত্যতা জানতে পুরো সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করব। তাই এখন অনুমানের উপর নির্ভর করে কিছু বলতে চাই না।” জেপি দাস তার অফিশিয়াল বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, ” আমার কর্মচারিরা আমাকে জানান যে ছেলেটি আর পাঁচজনের মত সাধারণ গ্রাহক হিসাবে এসেছিল এবং ওয়াশরুম ব্যবহারের জন্য শৌচাগারের ভেতরে গিয়েছিল । কিন্তু ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও সে ওয়াশরুম থেকে না আসায় আমাদেরকে বাধ্য হয়ে দরজা ভাঙতে হয়েছে।”

এই ঘটনায় খুব স্বাভাবিকভাবেই অনেকগুলো উত্তরহীন প্রশ্নচিহ্ন দাঁড়িয়ে গেছে। আমরা আশা করতে পারি, পুলিশের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তক্রমে ঘটনাটির আসল কারণ অনুসন্ধান করা সম্ভব হবে। এখন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই মনে করা হচ্ছে মাদকাসক্তির ফলেই আরো একজন প্রাণ হারালো।

Comments are closed.