Also read in

কাটিগড়ায় খুন: অভিযুক্তর ঘরের ভেতরেই মাটির নিচ থেকে উদ্ধার মহিলার লাশ

বস্তার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা এক মৃত মহিলার মুখ দেখে একটি শিশু আর্তনাদ করে উঠলো ‘এতো আমার মা!’ বস্তায় মোড়া মৃতদেহটির পাশে বসে অনেক জন মহিলা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে চিৎকার করছেন। এমন দৃশ্য আমরা সাধারনত চলচ্চিত্রে দেখে থাকি। কিন্তু কাটিগড়ার হরিনগর গ্রামে আজ যা ঘটে গেল এ চলচ্চিত্রের কোনও শুটিং নয়, বরং নৃশংসতার এক বাস্তব চিত্র। হরিনগর প্রথম খন্ড গ্রামে শ্রীকান্ত দাসের বাড়ির ভেতরের একটি ঘর থেকে পুলিশ মাটি খুঁড়ে এক মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। মৃত মহিলাটির নাম অঞ্জলি দাস।

ঘটনায় প্রকাশ, বুধবার রাত নটার সময় গ্রামের জনৈক চন্দন রামদাস কাটিগড়া থানায় স্ত্রী অঞ্জলি দাস হারিয়ে গেছেন বলে একটি মিসিং ডায়েরি করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কাটিগড়া পুলিশ বৃহস্পতিবার ঘটনার তদন্তে নামে। নানা সূত্র ধরে খোঁজখবর করে একসময় পুলিশ শ্রীকান্তের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। বাড়ির ভেতরের একটি ঘরে কিছুটা মাটি এবড়োখেবড়ো দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। পুলিশ সন্দেহবশত ওই জায়গাটি খুড়তে শুরু করলেই মাত্র হাত দেড়েক নিচের থেকে বেরিয়ে আসে মৃতদেহ। মাটির নিচের থেকে উদ্ধার করার পর মৃতদেহটি অঞ্জলির বলে শনাক্ত করেন তার পরিবারের লোকজন। মৃতদেহটি সিমেন্টের বস্তা দিয়ে মোড়ানো ছিল। অঞ্জলি দাসকে খুন করে প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। পুলিশ মৃতদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে অঞ্জলি দাসের স্বামী চন্দনরাম থানায় লিখিত অভিযোগ করেন যে তার স্ত্রীকে থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনার বিবরণে তিনি জানান, বুধবার দুপুর দুটোর সময় তাদের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে যে বাড়ি নির্মিত হচ্ছে সেই বাড়ির জন্য বালি আনতে অঞ্জলি প্রতিবেশি নৃপেন দাসের বাড়ি যান। কিন্তু দু বস্তা বালি আনার পর তৃতীয়বার আর ফিরে আসেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও স্ত্রীর সন্ধান না পেয়ে বাধ্য হয়ে চন্দন পুলিশ থানায় আসেন। তিনি প্রতিবেশী নৃপেন দাসকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করেও কোন উত্তর পাননি বলে জানান। পুলিশের তথ্যমতে, খুনের ঘটনাটি দুপুর দুটো থেকে ছয়টার মধ্যে ঘটেছে। অঞ্জলি দাসের স্বামী এ ব্যাপারে চারজনকে অভিযুক্ত করেন। অভিযুক্ত চারজন হলেন শ্রীকান্ত দাস, মন্টি দাস, অপর্না দাস ও মনোমালা দাস। অভিযুক্ত চারজন বর্তমানে পলাতক রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। তবে অতি শীঘ্রই পুলিশ পলাতক চারজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবে বলে কাটিগড়া থানার পুলিশ অফিসার আশা করছেন।

মৃতদেহের গলায় ফাঁস লাগানোর দাগ রয়েছে। হত্যার কারণ সম্বন্ধে এখনো সঠিক কিছু জানা যায়নি। পুলিশি তদন্তে এই নৃশংস হত্যার আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

Comments are closed.