Also read in

হাইলাকান্দির সাহাবাদে ক্রুইজার -ম্যাক্সিমো মুখোমুখি সংঘর্ষ, গুরুতরভাবে আহত ১৫

বিস্কুটবাহী এক মেক্স গাড়ির সঙ্গে একটি যাত্রীবাহী  মেক্সিমো গাড়ির মূখোমূখি সংঘর্ষের  ফলে পনেরো জন যাত্রী গুরুতর ভাবে আহত হয়েছেন।রবিবার বিকেলে এই ভয়াবহ দূর্ঘটনাটি  ঘটেছে  লালার সাহাবাদ এলাকায়  ১৫৪ নং জাতীয় সড়কে।

আহতদের মধ্যে অনেকেই বর্তমানে  মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।দুটি গাড়ির প্রবল সংঘর্ষের ফলে উভয় গাড়িতে থাকা যাত্রীদের মধ্যে বেশ ক’জনের অঙ্গহানি পর্যন্ত ঘটেছে।মেক্সিমোগাড়ির চালকের ডান পাঁ পুরোপুরি টুকরো হয়ে ঝুলে গেছে।ঘটনার পর  আহতদের একটি ট্রাকে করে লালা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়।কিন্তু লালা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তার এবং নার্সের অভাবে প্রায় আধঘন্টা বিনা চিকিৎসায় অসহায় অবস্থায় পড়ে থাকতে হয় আহতদের।পরে প্রাথমিক চিকিৎসার পর সবাই কে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।এই ঘটনার পর লালা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ছুটে আসেন এডিসি এলডাড ফাইরেন ও কাটলিছড়ার মহকুমাশাসক জেমস আইণ্ড।

জানা গেছে করিমগঞ্জের এস১০-৫১৬৮ নম্বরের বেবি ফুড প্রডাক্ট নামের একটি বিস্কূট পরিবাহী মেক্স গাড়ি কাটলিছড়া অভিমূখে যাচ্ছিল।তখনি কাটলিছড়া থেকে আসা এস২৪সি-৪১৬৬ নম্বরের যাত্রী ভর্তি  মেক্সিমো গাড়ির সঙ্গে মুখোমূখি সংঘর্ষ ঘটে বিস্কূট বাহী মেক্সের।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায় যে বিস্কুট বাহী মেক্স গাড়ির সঙ্গে ধাক্কার ফলে যাত্রীবাহী মেক্সিমো গাড়ীটি দূমড়ে মুচড়ে রাস্তার পাশে গিয়ে পড়ে ।ভেতরে থাকা তেরো জন যাত্রী গুরুতর ভাবে জখম হয়।মেক্সিমোর চালক লালা চন্দ্রপুরের  মাসুক উদ্দিন (৩৪)-এর ডান পাঁ পুরো টুকরো হয়ে ঝুলে যায়।অপরদিকে বিস্কুটের গাড়ির চালক ঘটনার পর পালিয়ে যায়।তবে গাড়িতে থাকা কোম্পানির ম্যানেজার রাজা দাসের মাথা গুরুতর ভাবে ফেটে যায়।কুড়াল দিয়ে গাড়ির দরজা ভেঙ্গে স্থানীয়রা উদ্ধার করেন  তাকে।এই দূর্ঘটনায় অন্যান্য আহতদের মধ্যে রয়েছেন রাতাবাড়ির আসরফ উদ্দিন(৩০), কাটলিছড়া হরিশনগরের নেহারনু নেশা(৩২) ও খাইরুল ইসলাম মজুমদার,কাড়িছড়ার অভিজিৎ পাল(১৯),বলদাবলদির ইমরানা বেগম(৩২),বুকাবিলের জাকির হোসেন মজুমদার(৪২),লালা চন্দ্রপুরের জয়নূল ইসলাম(৩২),লালা সাহাবাদের ডেনিয়েল য়ামিন(৫),কাড়িছড়ার ওয়াহিদা খানম লস্কর(২২),বলদাবলদির নাজিম উদ্দিন(৫০)।দুজন আহতদের পরিচয় জানা যায় নি।

এদিকে এত বড় মাপের দূর্ঘটনা পর মূমূর্ষ অবস্থায় আহতদের লালা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসা হলেও প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য বেগ পেতে হয় আহতদের।প্রতিবারের মত পর্যাপ্ত ডাক্তার এবং নার্সের অভাবে প্রায় আধঘন্টা পড়ে থাকতে হয় রোগীদের।খবর সংগ্রহ করতে আসা সাংবাদিকরা পর্যন্ত সব ফেলে আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে নেমে পড়েন। বাদ যান নি স্থানীয় জনগণ ও।। ডাক্তার নার্সদের খবর দিয়ে নিয়ে এনে আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসাতে লাগানো হয়।অনেকের পরিচয় না পাওয়ায় স্থানীয় জনগণ এবং পুলিশের সহযোগে তাদের শিলচর পাঠানো হয়।

পর্যাপ্ত এম্বুলেন্স না থাকায় অনেক সময় আহতদের লালা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পড়ে থাকতে হয়। এরই মধ্যে আহতদের পরিবার পরিজনদের কাছে খবর পাঠানো হয় নানা ভাবে।প্রায় তিন ঘন্টার কসরতের পর আহত সবাই কে সরকারি এবং বেসরকারি গাড়ি করে শিলচর নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। অন্যদিকে এই ঘটনার পর  সাহাবাদ এলাকায় আহতদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে সড়ক অবরোধ গড়ে তোলেন ক্ষুব্ধ জনতা।  পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করেন জনগণ। এই ঘটনার পর ফের একবার লালা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিষেবার নগ্ন চিত্র ফুটে উঠে।এনিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হতে দেখা যায়।ঘটনার পর এদিন লালা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ছূটে এসে ঘটনার খবর নেনে কাটলিছড়ার বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্কর।বৃহত্তর স্বার্থে ফের একবার জরাজীর্ণ লালা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আধুনিকরণের দাবিতে সরব হন  জনতা।

Comments are closed.