Also read in

ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও আজও ফুটবলের জন্য পাগল তারকা রিংসন

শিলচর তো বটেই গোটা বরাক উপত্যকার ফুটবল জগতে এক পরিচিত নাম রিংসন মার। নিজের সময়ে স্থানীয় ক্লাব স্তরে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন এই মিজো স্ট্রাইকার। খেলেছেন শিলচরের বড় বড় ক্লাবে। তবে ক্যারিয়ারে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি আলো ছড়িয়েছেন পি এইচ ই আর সি জার্সি গায়ে। শহরের আরো এক ঐতিহ্যশালী ক্লাব ইন্ডিয়া ক্লাবের হয়েও খেলেছেন রিংসন।

শিলচরের ফুটবলে একটানা রাজত্ব করেছেন রিংসন। স্থানীয় ফুটবলে তিনি ছিলেন গোলমেশিন। অবিশ্বাস্য ফুটবল স্কিল এর সঙ্গে দুরন্ত ফিনিশিং দক্ষতা ছিল রিংসনের ইউ এস পি। যেকোনো ডিফেন্স ইউনিটকে ছারখার করে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল তার। কিভাবে তাকে আটকানো যায়, সেই রহস্য ভেদ করতেই ডিফেন্ডারদের রাতের ঘুম উড়ে যেত। এমন ছিল রিংসনের দাপট।

স্থানীয় ফুটবলে পি এইচ ই আর সির টানা সাফল্যের পেছনে স্ট্রাইকার রিংসনের বিরাট বড় অবদান ছিল। আসাম ক্লাব কাপে পি এইচ ই আর সির হয়েও দারুন রেকর্ড রয়েছে তার।কাজাইগাক রংমাইয়ের সঙ্গে রিংসন এর জুটিটা ছিল দেখার মতো। শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার আন্তঃক্লাব দলবদলে সবচেয়ে বড় তারকা ছিলেন রিংসন। শুধু জেলা দলের হয়ে নয়, খেলেছেন রাজ্য দলের হয়ে অনূর্ধ্ব ১৭ ও অনূর্ধ্ব ১৯ দলেও। এরমধ্যে অনূর্ধ্ব ১৭ দলে তিনবার ও অনূর্ধ্ব ১৯ দলে দুবার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়া সিনিয়র রাজ্য দলের ট্রায়ালেও একাধিকবার ডাক পেয়েছেন।

বরাকের ফুটবল জগতে রিংসন একজন সুপারস্টার। একটা সময় ছিল যখন তার খেলা দেখার জন্য মাঠমুখো হতেন দর্শকরা। নিজের শান্ত স্বভাবের জন্য স্থানীয় ক্লাব কর্মকর্তাদের কাছে প্রিয় পাত্র রিংসন। এখন বয়সের ভারে রিফ্লেক্স অনেকটাই কমে গেলেও ফুটবলের প্রতি সেই টান কিন্তু ঠিকই রয়ে গেছে। গতবছর করোনার জন্য শিলচরের ফুটবলে একটি ম্যাচও হয়নি। এবারও ভয় দেখাচ্ছে করোনা। যার ফলে আন্তঃক্লাব দলবদল পিছিয়ে দিয়েছে ডি এস এ। আগামী দুই সপ্তাহের রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় তার ওপরই নির্ভর করছে শিলচরের ফুটবল।

শিলচরের মাঠে শেষবার রিংসনকে দেখা গিয়েছিল গতবছর ডিসেম্বরে। একটি ফাইভ এ সাইড ফুটবল প্রতিযোগিতায় লক্ষীপুরের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। তবে এই একটি টুর্নামেন্টের কথা ছেড়ে দিলে গত দু’বছর তেমন ফুটবল খেলেননি রিংসন। এর মধ্যে গত মরশুম তো করোনার জন্য কোনো খেলাই হয়নি। এই মুহূর্তে রি়ংসন রয়েছেন লক্ষীপুরের মারকুলিনে নিজের বাড়িতে। সেখানে নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য সামলাচ্ছেন একসময়ের দুর্ধর্ষ স্ট্রাইকার। তবে মনেপ্রাণে এখনো তিনি একজন ফুটবলার। আর এটাই রিংসনের সবচেয়ে বড় পরিচয়। সুযোগ পেলে এখনো শিলচর সুপার ডিভিশনে খেলতে ইচ্ছুক।

Comments are closed.