১৯৯৬ সালে টিকিট না পেয়ে কবীন্দ্রকে ব্ল্যাকমেইল করেছিলেন নিত্য ভূষণ, দাবি দিলীপের; "টাকা দেওয়া হয়েছিল", জানালেন কবীন্দ্র
Lশনিবার বিকেলে জেলা বিজেপির পক্ষ থেকে নিত্যভুষন দে, অভ্রজিৎ চক্রবর্তী এবং বিমলেন্দু রায় এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে দলের প্রাক্তন সদস্য দিলীপ কুমার পালকে মিথ্যেবাদী বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। এছাড়া নির্বাচনে মামলার তথ্য লুকিয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছিল। এর উত্তরে দিলীপ কুমার পাল তাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা করেছেন। এছাড়া তিনি অভিযোগ করেছেন, ১৯৯৬ সালে বড়খলায় বিজেপির টিকিট চেয়েছিলেন নিত্যভূষণ দে, দল তাকে টিকিট না দেওয়ায় কাছাড় বিজেপি বলে আরেকটি দল বানিয়েছিলেন। তখন কবীন্দ্র পুরকায়স্থকে ব্ল্যাকমেইল করে অনেক টাকা হাতিয়েছিলেন তিনি।
দিলীপ কুমার পাল সদর থানায় বিজেপির তিন সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য প্রচার, বাজে ভাষা ব্যবহার, জনপ্রতিনিধিকে অপমান করার চেষ্টা এবং নির্বাচন কমিশনের ১৭১এফ ধারা লঙ্ঘনের আওতায় মামলা করা হয়েছে। ১২০বি, ২৯৪, ৫০১ এবং ১৭১এফ ধারায় মামলা গ্রহণ করেছে পুলিশ।
দিলীপ কুমার পাল বলেন, “তারা আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অনেকগুলো তথ্য জনসমক্ষে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন, এটা অত্যন্ত অপমানজনক। ব্যক্তি হিসেবে আমি মামলা করেছি, এছাড়া একজন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে কটুক্তি করা এবং নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন লঙ্ঘনের অধীনেও অভিযোগ করা হয়েছে।”
ব্যক্তিগতভাবে তারা যেগুলো কথা বলেছেন তার উত্তর দিতে গিয়ে দিলীপ কুমার পাল বলেন, “তারা প্রশ্ন করছেন আমি কবে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। তার উত্তর অবশ্যই তাদের দিতে হবে বলে আমি মনে করিনা। কিন্তু একটা কথা মনে করিয়ে দিতে চাই, ২৫ বছর আগে দলের টিকেট না পেয়ে শ্রদ্ধেয় নিত্যভূষণ দে দলের বরিষ্ঠ নেতা কবীন্দ্র পুরকায়স্থকে ব্ল্যাকমেইল করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে নির্বাচনের আগে ঘটনাটি ঘটে এবং নিত্য ভূষণ দে ‘কাছাড় বিজেপি’ বলে একটি দল গঠন করেন। তখন চারিদিকে কংগ্রেস সরকার এবং অনেক কষ্টে বিজেপি সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। কবীন্দ্র পুরকায়স্থ তার সঙ্গে কথা বলেন এবং একটা বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে নিত্য ভূষন দে ক্ষান্ত হন। এবার তারা বিজেপির হয়ে আমার দিকে আঙুল তুলছেন, এটা অত্যন্ত হাস্যকর। তারা যে বিজেপি করছেন সেটা কর্পোরেট বিজেপি, আসল বিজেপি আমরা করছি এবং এখনও ভাবধারাকে বাঁচিয়ে রাখতেই লড়াই করে যাচ্ছি।”
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “টিকিট না পেয়ে নিত্যভূষণ দে কাছাড় বিজেপি বলে সংগঠন বানিয়েছিলেন। আমি তার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলি এবং তিনি রাজি হন দলে ফিরে আসতে। তিনি তখন বলেছিলেন তার যেটুকু খরচ হয়েছে সেটা মিটিয়ে দিতে। আমরা একটা মোটা অংকের টাকা তাকে দিয়েছিলাম।”
জেলা বিজেপির তরফে শনিবার বলা হয়েছিল দিলীপ কুমার পাল তার বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে হওয়া মামলার বৃত্তান্ত নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলে ধরেন নি, ফলে তার প্রার্থিত্ব বাতিল করা হোক। এ ব্যাপারে দিলীপ কুমার পাল বলেন, “২০০৪ সালে নয়, ১৯৯৯ সালে একজন অসমীয়া সরকারি আধিকারিক ইচ্ছাকৃতভাবে আমার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। খাদ্যদ্রব্য ভেজাল করার অভিযোগে মামলাটি করেছিলেন তিনি। ২০০৬ সালে আমরা সরকারে না থেকেও সেই মামলায় জয়ী হয়েছিলাম। বিজেপির সদস্যরা আজ ভুল তথ্য জনসমক্ষে তুলে ধরে একটি মিথ্যা অপপ্রচার করতে চাইছেন। এতে তাদের মনের হতাশা এবং ভয় ধরা পড়ছে। এই ঘটনায় আমার প্রত্যয় আরো বেড়েছে, কারন আমার বিরুদ্ধে যেসব অন্যায় হচ্ছে তার বিচার আমি জনগণের কাছে চেয়েছি।”
অভ্রজিৎ চক্রবর্তী প্রসঙ্গে দিলীপ কুমার পাল বলেন, “তিনি এবং তার বাবা মিলে এক বিধবা মহিলার জমি দখল করে সেখানে ঘর বানিয়েছেন। রামনগরের গ্যালাক্সি হোটেলে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ বারবার তাকে জেরা করেছে। এমন আরও অনেক তথ্য আছে যেগুলো নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না, রাজনীতি করতে গিয়ে এতটা নিচু করে নেমে আসা আমার দ্বারা সম্ভব নয়।”
Comments are closed.