Also read in

বরাক উপত্যকায় রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন রয়েছে?

বরাক উপত্যকার মানুষের অনেকদিনের আন্দোলনের ফসল আসাম বিশ্ববিদ্যালয়। কাছাড়, করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি তিন জেলা জুড়ে বরাক উপত্যকায় এটিই একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু বর্তমানে আরো একটি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি উঠেছে। দাবিটি মূলত উত্থাপন করেছে স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া। তাদের নেতৃত্বে গত ১৮ সেপ্টেম্বর আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে প্রায় ৫০০ ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীদের এই সমাবেশ কিংবা তাদের উত্থাপিত দাবিতে অনেকেই নড়েচড়ে বসেছেন। কারোর চোখ কুঞ্চিত হয়েছে, কারোর বা আশার আলোয় চোখ চকচক করে উঠেছে। বুদ্ধিজীবীরা তাদের মতামত ব্যক্ত করতে শুরু করেছেন নিজেদের মতো করে।

কেউবা মনে করছেন, আসামে যদি বারোটা রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় থাকতে পারে, তবে একটিও কেন বরাক উপত্যকায় নেই। কারোর বা রক্তমাখা উনিশের কথা ভেবে হৃদয় কেঁপে উঠছে। শিহরিত হয়ে উঠছেন, আবারও কি অসমিয়া ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার কালো অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে?

বরাক বুলেটিন এরই ফাঁকে বিশেষজ্ঞদের কাছে পৌঁছে এই দাবি সম্পর্কে তাদের মতামত কিংবা একটি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় হলে বরাক উপত্যকা কতটা সমৃদ্ধ হতে পারে সে হিসেব জানার চেষ্টা করেছে।

সবচেয়ে প্রথমে দাবিটির সম্পর্কে অভিমত জানতে স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (আসাম রাজ্য কমিটি)র রাজ্য সভাপতি কাশ্যপ চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলা হয়, যিনি ১৮ সেপ্টেম্বরের সমাবেশে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

এ সম্পর্কে তার অভিমত ছিল

আমাদের মুখ্য দাবি হচ্ছে, বরাক উপত্যকায় আরও একটি বিশ্ববিদ্যালয় চাই। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সবাই পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। কারণ এখানে আসন অনেক কম। তার উপর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। তাই সুযোগের অভাবে অনেকেই উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারছেন না। কাজেই বরাক উপত্যকায় কটন কিংবা ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় হলে সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকা সম্ভব। আর আমি এও স্পষ্ট করতে চাই, রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় হলে সেখানে অসমিয়া ভাষা মাধ্যম হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না, কারণ বরাক উপত্যকায় সরকারি ভাষা বাংলা। আর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে
তো মাধ্যম হিসেবে শুধু ইংরেজি রয়েছে। সেখানে রাজ্য স্তরের বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাভাষা একটি মাধ্যম হতে পারে।

বরাক উপত্যকায় আমাদের সাংগঠনিক পরিকাঠামো ততটা নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজোর দিনও আমাদের সঙ্গে ৬০০ ছাত্র যোগ দিয়েছিল। কারণ ছাত্রদের যখন আমরা এ ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানিয়েছিলাম তখন তারা সেটাকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করেছে। আর আমরাও আমাদের দাবি চালিয়ে যাবো যতদিন না বাস্তবায়িত হচ্ছে। আসামের শিক্ষা মন্ত্রী সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্যের সঙ্গেও দেখা করার আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।

এরপর আমরা কথা বলি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে। এখানে তাদের প্রতিক্রিয়ার সম্পাদিত অংশ তুলে ধরা হলো (কোন নির্দিষ্ট ক্রম অনুসরণ করা হয়নি)

DC Nath, VC, Assam University Silchar

দিলীপ চন্দ্র নাথ, উপাচার্য, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়

নতুন শিক্ষানীতি অধ্যয়ন করলে দেখা যাবে, আমাদের বরাক উপত্যকায় কমপক্ষে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় দরকার। আমার মতে, প্রতিটি জেলায় আমাদের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থাকা উচিত। আমাদের একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে রয়েছে। কাজেই রাজ্য যদি হাইলাকান্দি এবং করিমগঞ্জে আরও দুটি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন করতে পারে, তাহলে এটি একটি খুব ভাল পদক্ষেপ হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অবশ্যই আরও বেশি আসন প্রয়োজন। কারণ অনেক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে বরাক উপত্যকার বাইরে চলে যাচ্ছেন। আমাদের আরও অনেক কোর্স সংযোজনের প্রয়োজন রয়েছে। কাজেই আরও বিশ্ববিদ্যালয় হলে এক্ষেত্রে আমাদের সাহায্য হবে।

Tapodhir Bhattacharjee, former VC, Assam University Silchar

তপোধীর ভট্টাচার্য, প্রাক্তন উপাচার্য, আসাম বিশ্ববিদ্যালয় শিলচর

এটি একটি খুব জটিল বিষয়। আমাদের মনে রাখতে হবে যে বরাক উপত্যকার ছাত্র-ছাত্রী এবং জনগণের ১২ বছরের দীর্ঘ আন্দোলনের পর শিলচরে আসাম বিশ্ববিদ্যালয় অস্তিত্ব লাভ করেছে। অনেক আগেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল যে আমাদের অবশ্যই একটি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় থাকা প্রয়োজন এবং আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল যে আসাম সরকার কোনও সমস্যা তৈরি করবে না কোনও বিষয়ে। কিন্তু সামাজিক এবং শিক্ষাজগতের নেতৃত্বরা এ জাতীয় মতামত গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। কারণ তাদের বিশ্বাস ছিল যে এর মাধ্যমে বরাক উপত্যকা অসমিয়া সম্প্রদায়ের চিরস্থায়ী পরাধীনতা গ্রহণ করবে । যদি বিশ্ববিদ্যালয়টি রাজ্য সরকারের অধীনে থাকে তাহলে শিক্ষার ক্ষেত্রেও বরাক উপত্যকার কোনও বক্তব্য থাকবে না বলে সবার আশঙ্কা ছিল। কাজেই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্দেশ্যটি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে যাবে। সুতরাং কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সংগ্রাম অব্যাহত ছিল এবং শেষ পর্যন্ত ১৯৮৯ সালে তা মঞ্জুর হয় এবং ১৯৯৪ সালে আসাম বিশ্ববিদ্যালয় শিলচরে বাস্তবায়িত হয়।

আজ ২৫ বছর পর কেন এমন অদ্ভুত ধরনের অনর্থক দাবি করা হচ্ছে? আমি মনে করি যে, শিলচরের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় যদি উচ্চতর শিক্ষার উদ্দেশ্য পূরণ করতে না পারে তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি করে উচ্চতর শিক্ষার উদ্দেশ্য পূরণ হবে। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ত্রুটি গুলো রয়েছে সেগুলো সংশোধন করে আমাদের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সর্বাঙ্গসুন্দর করে তোলার উপর জোর দেওয়া উচিত। আমি মনে করি না, রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবির সমর্থনে এই আন্দোলন ন্যায় সঙ্গত। এখানে অনেকগুলো ব্যাপার রয়েছে। মানুষের অবস্থান কি, এখানে কতটা কলেজ রয়েছে এগুলো সব বিবেচনা করতে হবে। আর যখন এনআরসি’র মত জ্বলন্ত সমস্যায় মানুষ জর্জরিত তখন জনগণকে বিভক্ত করার জন্য সরকারের এটি একটি কৌশল। আমি মনে করি না কোনো বিচক্ষণ ব্যক্তি এই দাবিকে সমর্থন করবেন।

দিলীপ কুমার পাল, বিধায়ক, শিলচর

জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। শিক্ষিত ছেলে-মেয়ের হারও বাড়ছে। সবার মধ্যে উচ্চশিক্ষা লাভের তাগিদও বাড়ছে। আমাদের যদিও একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, তবে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রথমে ঠিক ভাবে শুরু হলেও এখন আর চাপ নিতে পারছে না। বর্তমানে বরাক উপত্যকায় আরও কলেজের প্রয়োজন রয়েছে।এই অবস্থায় যদি একটি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয় তাহলে অসুবিধা কোথায়? আমার তো মনে হয় এটি একটি উত্তম প্রস্তাব। এই অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীরা উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে পারবে। এমনকি পার্শ্ববর্তী রাজ্য থেকেও ছেলেমেয়েরা এসে এখানে পড়াশোনা করতে পারবে। তাই এধরনের প্রস্তাবের বিরোধিতা করার তো প্রশ্নই ওঠে না বরং আমি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবিকে স্বাগত জানাচ্ছি।

সুস্মিতা দেব, প্রাক্তন সাংসদ, শিলচর ও সভানেত্রী, মহিলা কংগ্রেস

শিলচরে অনেক ছাত্রছাত্রীরা রয়েছে যারা উচ্চ শিক্ষা লাভের সুযোগ পাচ্ছে না। তাই রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় এক্ষেত্রে একটি ভাল সুযোগ হতে পারে। তবে কোনও একক সম্প্রদায়ের ভাষা ও সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়ার জন্য একে ব্যবহার করা উচিত নয়।আমাদের সর্বক্ষেত্রে সর্বাবস্থায় নিজেদের পরিচয় রক্ষা করতে হবে।

দুলাল মিত্র, আইনজীবী ও সিপিআইএম নেতা

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি হোম স্টেট ইউনিভার্সিটির দাবি বৈধ বলেই মনে করি। গৌহাটিতে কটন কলেজ যদি বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যেতে পারে তাহলে আমাদের জিসি কলেজ কেন নয়? আর আমি এটাও বুঝতে পারছিনা, দুটো বিশ্ববিদ্যালয় তো থাকতেই পারে! ক্ষতিটা কোথায়? এর বিরোধিতা কেন হচ্ছে? আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের স্থানীয় ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকেই সুযোগ পাচ্ছেন না। আর অসমিয়া ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার যে কথাটা উঠছে তা নিরর্থক। কারণ বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা বাংলা এবং এই বাংলা ভাষার জন্য ১১ জন শহিদ হয়েছেন। তাই রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় হলে অসমিয়া ভাষা চাপিয়ে দেওয়া হবে, এগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন মন্তব্য। গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা হয়। আমিও গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম, কখনো তো অসমিয়া ভাষায় আমি পেপার লিখিনি, বরং ইংরেজিতে লিখেছি। পাটশালায় শংকরদেব বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, হোজাই, জোরহাট সহ আসামের অনেকগুলো জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তাহলে বরাক উপত্যকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে বাধা কোথায়? বরং বরাক উপত্যকার ছাত্রছাত্রীরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবে, কারণ আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা খুবই কম।

প্রদীপ দত্ত রায়,প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি,অল কাছাড় করিমগঞ্জ হাইলাকান্দি স্টুডেন্ট’স অ্যাসোসিয়েশন(আকসা)

বরাক উপত্যকায় ইতিমধ্যেই যখন একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে তখন অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা আমি তো দেখতে পাচ্ছি না। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কেন্দ্র থেকে ফান্ড আসে এবং এটি একটি জাতীয় নিয়োগ কাঠামো অনুসরণ করে। কেন্দ্রীয় সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করে। অথচ এরপরও এই বিশ্ববিদ্যালয়টি খারাপ পরিস্থিতিতে রয়েছে। এখন যদি বরাক উপত্যকায় একটি রাজ্যস্তরের বিশ্ববিদ্যালয় গঠন করা হয় তবে রাজ্য সরকার এর অর্থ যোগাবে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়াও রাজ্য সরকার দ্বারা নির্ধারিত হবে। দিসপুর বছরের পর বছর ধরে নানা কৌশল অবলম্বন করছে বরাকউপত্যকাকে প্রান্তিক প্রতিপন্ন করার জন্য। এটাও নিশ্চিত যে তারা রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে তাদের ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা চলবে। তার উপর যেখানে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত তহবিল থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়টির মান বজায় রাখতে অক্ষম, তখন কিভাবে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় আরো ভালোভাবে কাজ করবে বলে আশা করতে পারি?

আমি এই দাবির কোনো অর্থ খুঁজে পাচ্ছিনা এবং আমার কাছে এটি একটি নিরর্থক অনুশীলন মাত্র!

সুদর্শন গুপ্ত, শিক্ষক এবং প্রাক্তন সভাপতি এসিটিএ, কাছাড় জোন

বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন আমাদের কাছে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে তখন রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই বলেই মনে করি। তার পরিবর্তে, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যে দুরবস্থা রয়েছে সেগুলোর দিকে নজর দিয়ে সমস্যাগুলো সমাধানের প্রচেষ্টা করাই উচিত ছিল। সব বিভাগে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করার দাবি জানানো উচিত ছিল। তাছাড়া অধ্যাপকদের সংখ্যাও বৃদ্ধি করার দাবি জানানো উচিত। অন্যদিকে বরাক উপত্যকায় রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের জন্য সুখপ্রদ নয়। রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়টি যদি প্রতিষ্ঠিত হয় তবে অবশ্যই এই রাজ্যের বাঙালি প্রভাবশালী অংশে অসমিয়া ভাষা, সংস্কৃতি এবং চিন্তাধারা আরোপের একটি উপকরণ হয়ে উঠবে।

তৈমুর রাজা চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক, দৈনিক সাময়িক প্রসঙ্গ

আমার মতে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও প্রয়োজন বরাক উপত্যকায় নেই, যেখানে আমাদের কাছে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মান এবং মর্যাদা রয়েছে।এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কেন্দ্র থেকে ফান্ড আসে এবং নিয়োগের ক্ষেত্রেও এক জাতীয় মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়। অন্যদিকে আমরা আসামের রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থাও দেখতে পাচ্ছি। যদিও আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়, কিন্তু এর অর্থ তো এই নয় যে এর বিকল্প একটি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়! আমার মনে হয়, এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও উন্নত করার প্রচেষ্টা চালানো উচিত।এর আগেও রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রস্তাব উঠেছিল, কিন্তু আমরা তা প্রত্যাখ্যান করেছি। এখনও এর কোনো প্রয়োজন নেই বলে মনে করি।

করণজিৎ দেব, শিলচর শহর সম্পাদক, অখিল ভারতীয় ছাত্র পরিষদ (এবিভিপি)

এবিভিপি কার্যনির্বাহী সভায় এখনও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়নি তাই এ ব্যাপারে পরিষদের অবস্থান এখনও বলা সম্ভব নয়। তবে ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে প্রথমে বলতে চাই,আমাদের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ঘাটতি রয়েছে।তাই আমার সবচেয়ে প্রথম দাবি হচ্ছে, সেই ঘাটতিগুলো দূর করে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও উন্নত করা।আর এও মনে করি, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়টি যদি ঠিকমতো চালিত হয় তাহলে বরাক উপত্যকায় রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ প্রয়োজন নেই। তবে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাব এলে অবশ্যই তাকে আমরা স্বাগত জানাবো। কারণ বরাক উপত্যকার শিক্ষাব্যবস্থার জন্য এটি মঙ্গল জনক হবে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্যই ছাত্রদের অনেক সুযোগ করে দেবে বিশেষভাবে উচ্চশিক্ষার জন্য। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা কম থাকায় অনেকেই উচ্চশিক্ষা লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই আমার প্রথম দাবি হচ্ছে, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা বাড়ানো। তবে এও বলছি, রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ও ছাত্রদের স্বার্থে সহায়ক হয়ে উঠতে পারে।

Comments are closed.