Also read in

রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকের ওপর হামলা, ধৃত ২

চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গতকাল সন্ধ্যায় তুলকালাম কাণ্ড ঘটে গেল শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কার্ডিওলজি বিভাগে এক রোগীর মৃত্যুকে ঘিরে হাসপাতালে এই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। রোগীর আত্মীয় স্বজনের হামলায় শারীরিকভাবে নিগ্রহের শিকার হন বিভাগীয় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, চলে ভাঙচুরও।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, হৃদরোগ জনিত সমস্যার কারণে শনিবার শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন শিলচর মধুরবন্দের বাসিন্দা ফয়জুর মিয়া লস্কর(৬০) । রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় শনিবারই তাকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। বিশিষ্ট চিকিৎসক আহমেদ হোসেন চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছিল। সোমবার সন্ধ্যা ছটা নাগাদ ফয়জুর মিয়ার মৃত্যু হলে তার আত্মীয়-স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। ডঃ চৌধুরী তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, হৃদরোগের চিকিৎসার শুরুর দিন থেকেই রোগীর অবস্থা সংকটজনক ছিল, যথাসাধ্য চেষ্টা করা হলেও রোগীকে বাঁচানো যায়নি। কিন্তু ক্ষিপ্ত আত্মীয়-স্বজনরা এতে কর্ণপাত না করে চিকিৎসকের গাফিলতিতে ফজলুল হকের মৃত্যু ঘটেছে বলে অভিযোগ এনে তারা ডঃ আহমেদ হোসেন চৌধুরীর ওপর চড়াও হন বলে অভিযোগ, পাশাপাশি চলতে থাকে ভাঙচুর। এই খবর পেয়ে মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তাররা ভিড় জমান কার্ডিওলজি বিভাগে।

জুনিয়র ডাক্তারদের পাল্টা আক্রমণে রোগীর আত্মীয় স্বজনরা পালিয়ে যান। তবে রিপন লস্কর নামে এক আত্মীয় এবং অন্য এক ব্যক্তিকে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে ঘুঙ্গুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরাগ হাজারিকা তড়িঘড়ি হাসপাতালে হাজির হন, বিশাল বাহিনী নিয়ে আসেন সদর থানার ওসি ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী, টিএসআই পি পুরকায়স্থও; তাদের তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে । ধৃতদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

ফয়জুল হকের আত্মীয়দের দাবি তারা কিছুটা উত্তেজিত হলেও ডাক্তারকে নিগৃহীত করেননি, হৈ-হট্টগোলের মধ্যে জুনিয়র ডাক্তাররা এসে উল্টো তাদের মারপিট করেন। তবে তারা ডঃ আহমেদ হোসেনের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ করেন। মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের সুপারেনটেনডেন্ট চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে কার্ডিওলজি আইসিইউতে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ ছিল না। আইসিইউতে জেনারেটরের ব্যবস্থা না থাকায় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সহ মনিটর বন্ধ হয়ে পড়েছিল। এই দুর্বল পরিকাঠামোও এই ঘটনার জন্য কিছুটা দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের সুপারিনটেনডেন্ট এ কে বৈশ্য, আসাম হার্ট কেয়ার সোসাইটির সভাপতি নির্মল কান্তি ভট্টাচার্য এবং পিনাক কান্তি চক্রবর্তী। এই হামলার ঘটনায় জড়িত দোষী ব্যক্তিদের গ্রেফতার এবং কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন পিনাক কান্তি চক্রবর্তী।

Comments are closed.