বিভাগীয় গাফিলতিতে ট্রান্সফরমারের খোলা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেল কুকুর, প্রশ্নের মুখে নাগরিক সুরক্ষা ব্যবস্থা
শিলচর শহরের দাসকলোনি এবং পঞ্চায়েত রোড সংযোগস্থলে এপিডিসিএলের ট্রান্সফরমারে খোলা তারে আটকা পড়ে মারা গেল একটি কুকুর। মূলত রাস্তায় থাকা কুকুর হলেও অনেকেই এব্যাপারে প্রতিবাদ করেন। প্রশ্ন হচ্ছে একটি রাস্তার কুকুরের জায়গায় অন্য কোনো প্রাণী বা মানুষ হতে পারত। একথা বলার কারণ হচ্ছে, আমাদের কাছে সাধারণত অন্যান্য প্রাণীদের মৃত্যু ততটা গুরুত্ব রাখে না। ঘটনাটি আবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, সরকারি বিভাগের উদাসীনতায় আমাদের আশেপাশে কত বড় বিপদ তৈরি হয়ে আছে।
শুক্রবার সকাল দশটা নাগাদ হঠাৎ করে এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। অনেকেই মনে করেন বিভাগীয় কোনও কাজ চলছে, ফলে এমনটা হচ্ছে। দাসকলোনির উদয়ন কমপ্লেক্সের সামনে বিদ্যুৎ বিভাগের একটি ট্রান্সফর্মার রয়েছে। সেখানে রয়েছে কিছু আধ-খোলা বিদ্যুতের তার, এতে একটি কুকুর অসাবধানতাবশত আটকে যায় এবং প্রচন্ড বিদ্যুতের ঝাকুনিতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এবার ভাবা যাক, একই অবস্থা কোনও মানব-শিশু বা পথচারীর সঙ্গে ঘটতো, কতটা ভয়ানক হতে পারতো।
এলাকাবাসীরা বলেন, “এখানে বেশ কয়েকটি কুকুর রাস্তায় ঘোরাফেরা করে। আশে পাশের দোকানের মানুষ এবং পথচারীরা এদের অত্যন্ত স্নেহ করেন। অনেকেই নিয়মিত এদের খাবার জোগান এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। বিভাগের অসাবধানতায় এমন একটি করুন ঘটনা ঘটলো। অতীতে এলাকার মানুষ ট্রান্সফরমারের খোলা তারের ব্যাপারে বিভাগের আধিকারিকদের জানিয়েছেন। তবে বিভাগের পক্ষ থেকে কিছুটা উদাসীনতা দেখানো হয়েছে। এর ফলস্বরূপ একটি নিরীহ প্রাণীর এমন অবস্থা হয়েছে।”
ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই বিভাগীয় আধিকারিকরা দলবল নিয়ে এলাকায় উপস্থিত হন এবং সাইকেলের টায়ার দিয়ে খোলা তার ঢেকে দেওয়ার কাজ শুরু করেন। অনেকে মনে করছেন এটাও এক প্রকারের খামখেয়ালী। বিভাগের আধিকারিকরা এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে শিলচর শহরের দেবদূত পয়েন্টে একটি বিরল প্রজাতির পেঁচা বিদ্যুতের তারে আটকে গিয়ে গুরুতর ভাবে আহত হয়েছিল। এক সমাজ সচেতন পশুপ্রেমী পেঁচাটিকে উদ্ধার করেছিলেন, সৌভাগ্যবশত পেঁচাটি বেঁচে যায়। এরপর বন বিভাগের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি লিখে জানানো হয়েছিল তারা যেন বিশেষ বিশেষ এলাকায় খোলা বিদ্যুতের তার ঢেকে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তবে শুক্রবার দুপুরের ঘটনা আবার প্রমাণ হয়েছে বিভাগের পক্ষ থেকে এব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
Comments are closed.