Also read in

মেডিক্যালের পরিকাঠামো উন্নতির আবেদনে গতবছর ২৫ ফেব্রুয়ারি ডিপিআর পাঠিয়েছিলেন বেজবরুয়া, এখনও নিরুত্তর সরকার

তখন লকডাউন শুরু হয়নি, শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাঃ বাবুল বেজবরুয়া সরকারের কাছে হাসপাতালের জন্য আবেদন জানাচ্ছেন এইমস বা নিগ্রিম স্তরের পরিকাঠামো উন্নত করতে হবে, গতবছর ২৫ ফেব্রুয়ারি ডিটেইলস প্রজেক্ট রিপোর্ট পাঠিয়েছেন, তার এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো তার উত্তর আসেনি। রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের ডিএমই একে বর্মন লাগাতার চেষ্টা করলেও সুফল মিলছে না। অধ্যক্ষ ডাঃ বাবুল বেজবরুয়া মনে করেন কেন্দ্র সরকারের প্রতিনিধিরা এব্যাপারে একটু বেশি মনোযোগ দিলে কাজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তিনি চেষ্টা করলেও উপত্যকার জনপ্রতিনিধিরা এব্যাপারে উদাসীন মনোভাব রাখছেন।

শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ক্যাথল্যাব গড়ে তোলার জন্য যে টেন্ডার চাওয়া হয়েছিল, তার শেষ দিন ছিল শুক্রবার। এদিনও কোনও সদুত্তর আসেনি। এদিকে শুধুমাত্র নিউরোলজি বিভাগ না থাকায় অত্যন্ত উন্নত মানের একজন শিল্পী গুয়াহাটি যাওয়ার পথে প্রাণ হারিয়েছেন। এতে জনমনে আবার ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের সদস্যরা শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাঃ বাবুল বেজবরুয়ার সঙ্গে দেখা করে জানতে চান কেন এই অবস্থা। এতে বেরিয়ে আসে এক অদ্ভুত তথ্য, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট পাঠিয়ে ছিলেন অধ্যক্ষ। হাসপাতালের নিউরোলজি, নেফ্রলজি, হৃদরোগ বিভাগ চাঙ্গা করা সহ বেশ কিছু দাবি ছিল এতে। তিনি তার রিপোর্টে স্পষ্ট লিখেছেন, শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল বরাক উপত্যকার সবথেকে বড় এবং ভরসাযোগ্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানকে পরিকাঠামোগতভাবে এইমস বা নিগ্রিম স্তরে নিয়ে যেতে হবে। তিনি পুরো ম্যাপ বানিয়ে কতদিনে, কিভাবে, শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে কত টাকা খরচ করে যোগ্যতর করে তোলা যাবে এটা তুলে ধরেছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত এরপরেই লকডাউন শুরু হয় এবং সব প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। লকডাউন চলাকালীন শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৪০ শয্যার আইসিইউ বানানো হয়েছে এছাড়া অন্যান্য ছোটখাটো উন্নতি হয়েছে। তবু বড় মাপের উন্নতির কথা বেমালুম ভুলে গেছেন সরকার পক্ষ।

স্বাস্থ্যবিভাগের ডিএমই একে বর্মন এব্যাপারে বলেন, “লকডাউন শেষ হওয়ার পর নতুন করে কাজে হাত দিয়েছে আমাদের বিভাগ। শুধুমাত্র শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল নয়, রাজ্যের প্রায় সবকটি হাসপাতালে আমাদের বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।তিনি জানান, প্রয়োজনীয় বিভাগ শুধুমাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে খুলতে পারছিনা আমরা। বাইরে থেকে চিকিৎসক নিয়ে আসার ব্যাপারেও চেষ্টা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রেও নানান অসুবিধা রয়েছে। বিভাগীয় তরফে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অধ্যক্ষের সঙ্গে প্রায়ই আলোচনা হয় এবং তিনি যেসব আবেদন তুলে ধরেন সেটা আমরা সরকারের কাছে পৌঁছে দিই। ক্যাথল্যাব চালু করার ক্ষেত্রে টেন্ডার নিয়ে আমাদের বেশ ভুগতে হচ্ছে, তবে আগামীতে আমরা আর অপেক্ষা করব না, যে কোম্পানি শেষ পর্যন্ত আমাদের কথায় রাজি হবে তাদের কাজে লাগিয়ে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। তবে এখানেই শেষ নয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনতে আমাদের আরেক প্রস্থ হ্যাপা পোহাতে হবে। এখন ডাঃ রাকেশ পি গোপাল শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মাসে একবার আসতে রাজি আছেন। তিনি যদি আমাদের পাশে থাকেন তাহলে আরো অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের এভাবেই আনতে পারব আমরা। কিন্তু আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে একজন বিশেষজ্ঞ পুরোপুরিভাবে হাসপাতলে থাকবেন এতে সমস্যা অনেকটা দূর হবে।

বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের একটি দল এদিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে। তাদের পক্ষ থেকে প্রদীপ দত্ত রায় বলেন, “নির্বাচনের আগে সরকারের নেতারা একের পর এক হাসপাতাল গড়ে তোলার ঘোষণা করছেন। আমরা তাদের বলতে চাই, নতুন নতুন ঘোষণা করার আগে পুরনো হাসপাতালগুলোকে ভালোভাবে চালু করুন।”

Comments are closed.