
'লকডাউনে প্রটোকল' ভেঙে শিলচর এসে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করায় সাময়িক বরখাস্ত বিশিষ্ট চিকিৎসক কল্লোল ভট্টাচার্য
করোনাকালে সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ করে দিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ। সেই নিয়ম অমান্য করে কোনও কারণ না দেখিয়ে ছুটি নিয়েছিলেন ডিফু সরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ডা: কল্লোল ভট্টাচার্য। শিলচরে এসে তিনি প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। করোনাকালে যেসব সরকারি আধিকারিকরা নিয়ম লঙ্ঘন করছেন তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এমনটাই বলা হয়েছিল। এবার এই কথা মতো চিকিৎসক কল্লোল ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে বিভাগ এবং তাকে তার দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে আরও বড় শাস্তির মুখে পড়তে পারেন এই চিকিৎসক।
ডিফু মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা: ভট্টাচার্যকে সম্প্রতি এক নির্দেশে বরখাস্ত করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি সমীরকুমার সিনহা। বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি ডাঃ কল্লোল ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে শিলচরে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের উপর ভিত্তি করে প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে ডা: কল্লোল ভট্টাচার্য স্বাস্থ্যবিভাগের নিয়ম লঙ্ঘন করেছিলেন। কার্বি আংলং জেলার ডিফু মেডিকেল কলেজে কর্মরত অবস্থায় তিনি কোনও কারণ না দেখিয়েই ছুটি নিয়েছিলেন। সেই সময়ে শিলচরে এসে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেছেন, এর বিভিন্ন প্রমাণ বিভাগের কাছে রয়েছে। তবু তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে সেগুলো আবার খতিয়ে দেখা হচ্ছে, রাজ্যস্তরের কমিটি পুরো ব্যাপারে তদন্ত করবে। তদন্তে তার বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে আরও কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন চিকিৎসক কল্লোল ভট্টাচার্য।
করোনাকালে সরকারি চিকিৎসকরা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবেন না, সরকারের তরফে এব্যাপারে পরিষ্কার নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। যারা সেই সময়ে নিয়ম ভঙ্গ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রথমে কড়া সতর্কবাণী দেওয়া হয়েছিল। তবে কল্লোল ভট্টাচার্য রাজ্যের প্রথম উচ্চপদস্থ চিকিৎসা আধিকারিক যাকে রাজ্য স্তরের নির্দেশে বরখাস্ত করা হয়েছে। শোনা গেছে, কল্লোল ভট্টাচার্যের প্রাইভেট প্র্যাকটিস করার খবর স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কাছে পৌছে গেছিল। মন্ত্রীর নির্দেশেই তাকে অভিযুক্ত করে শিলচর থানায় এজাহার দায়ের করেন কাছাড়ের স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম সঞ্চালক ডাঃ সুদীপ জ্যোতি দাস। এরপর স্বাস্থ্যবিভাগ তাকে বরখাস্ত করার নির্দেশ জারি করে।
শিলচরের বাসিন্দা ডাঃ কল্লোল ভট্টাচার্য ডিফুতে বদলি হওয়ার আগে কর্মরত ছিলেন শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শিলচর মেডিকেলে থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে রোগীদের খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এনিয়ে এখনও তদন্ত চলছে।
এদিকে একই অভিযোগে অভিযুক্ত শিলচর সিভিল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: অরিজিৎ পাল সম্পর্কে গুয়াহাটিতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। তাকে শোকজ করা হয়েছিল এবং তিনি এর উত্তর দিয়েছিলেন, কিন্তু সেটা গ্রাহ্য করেনি স্বাস্থ্য বিভাগ। বিভাগের যুগ্ম সঞ্চালক ডা: সুদীপজ্যোতি দাস জানিয়েছেন, ডাঃ অরিজিৎ পালের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যবিভাগের রাজ্যস্তরের আধিকারিকদের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।
Comments are closed.