বিড়ালের মৃত্যুকে ঘিরে ধুন্ধুমার, বিয়ারের বোতল দিয়ে চালকের মাথা ফাটিয়ে দিল কিছু যুবক, প্রশ্নের মুখে আইন-শৃঙ্খলা
নতুন গাড়ি কিনে মালুগ্রাম শিববাড়িতে পুজো দিতে পাঠিয়েছিলেন গাড়ির মালিক। চালক মতিন লস্কর বরখলার হাতিছড়া এলাকার বাসিন্দা। রাতের খালি রাস্তায় হঠাৎ গাড়ির সামনে একটি বিড়াল চলে আসে এবং নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারায় দুর্ঘটনায় বিড়ালটির মৃত্যু হয়। এতে এলাকার একাংশ যুবক গাড়িটি আটকে চালককে বেধড়ক মারপিট করেছেন। আহত অবস্থায় চালক মতিন লস্কর শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অভিযোগ, শরীরে রড দিয়ে মারা হয়েছে এবং মাথায় খালি বিয়ারের বোতল ভাঙা হয়েছে। মালুগ্রাম থানার অদূরে এই ঘটনায় আবার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।
গাড়ির মালিক অমৃত নাথ পেশায় একজন ব্যবসায়ী। কাজের খাতিরে বিভিন্ন সময় তার গাড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। সম্প্রতি একটি ম্যাজিক গাড়ি কিনেছেন, কাজে লাগানোর আগে এটি পুজো দেওয়ার জন্য মালুগ্রাম শিববাড়ি মন্দিরে পাঠিয়েছিলেন। গাড়ির চালক মতিন লস্কর পূজো সেরে ফিরে আসার সময় থানা সংলগ্ন এলাকায় একটি বিড়াল গাড়ির নিচে পড়ে যায়। এমনটা নতুন ঘটনা নয়, রাস্তাঘাটে অনেক সময় গাড়ির নিচে বিড়াল চলে আসে। অবশ্যই এটি একটি অপ্রীতিকর ঘটনা এবং কোনভাবেই সমর্থন করা যায়না। তবে একে ঘিরে চালককে হেনস্তার কতটুকু প্রয়োজন ছিল এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
চালক জানিয়েছেন, বিড়ালটির সঙ্গে দুর্ঘটনার পর তিনি গাড়ি থামিয়ে দেখতে যান। এলাকায় এমনিতেই আলোর অভাব, হঠাৎ কয়েকজন যুবক দৌড়ে এসে তার ওপর হামলা করেন। প্রথমে হাত-পা দিয়ে মারতে শুরু করেন, এরপর রড দিয়ে কেউ একজন তাকে আঘাত করতে থাকে। শেষমেষ খালি বিয়ারের বোতল মাথায় ভেঙে দেওয়া হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি পুলিশের সাহায্য চান। পুলিশ এলে যুবকরা সরে যায় এবং গাড়ি সহ চালককে উদ্ধার করা হয়। প্রথমেই চালককে চিকিৎসার জন্য মেডিকেল কলেজ পাঠানো হয়। গাড়িটি থানায় আটকে রাখা হয়েছে। তবে চালকের অবস্থা গুরুতর, জানা গেছে অনেক বেশি রক্তপাত হয়েছে।
মালুগ্রাম থানার পক্ষ থেকে আনন্দ মেধি জানিয়েছেন, এলাকার যুবকদের অভিযোগ গাড়িটি খুব তাড়াতাড়ি চালিয়ে আসায় বেড়ালের মৃত্যু হয়েছে, তাই তারা রেগে গিয়ে চালককে মারধর করেছে। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যুবকরা বাড়ি ফিরে গেছেন।
গাড়ির মালিক পক্ষ জানিয়েছেন, তারা এব্যাপারে মামলা করবেন। বিশাল ভৌমিক সহ কয়েকজনকে তারা শনাক্ত করেছেন। যদি চালকের প্রাণহানি হত তাহলে এর দায় কে নিত? এই প্রশ্ন তাদের।
এরকম ঘটনা নতুন নয়, অতীতেও মালুগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট কারণে বড় অশান্তি ঘটেছে। একসময় সপ্তাহব্যাপী ১৪৪ ধারা জারি করতে বাধ্য হয়েছিল পুলিশ। পুলিশের তরফে বলা হয়েছিল এলাকায় যাতে এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সেটা দেখা হবে। দুর্ঘটনার নাম করে সাধারণ মানুষ কথায় কথায় আইন হাতে তুলে নেবেন এই পরিস্থিতি অবশ্যই সমাজের পক্ষে মঙ্গল জনক নয়।
Comments are closed.