
একবছরে দুবার খেলতে রাজি নয় সুপার ডিভিশনের ক্লাবগুলো,২০২২-২৩ ফুটবল মরশুম বাতিল করল শিলচর ডি এস এ
করোনার জন্য ২০২১-২২ ফুটবল মরশুম আয়োজন করতে পারেনি শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থা। তাই এবছর এপ্রিল-মে মাসে সেই মরশুমের সুপার ডিভিশন ফুটবল আয়োজন করে ডি এস এ। এরপর একে একে প্রথম, দ্বিতীয় এবং প্রথমবারের মতো তৃতীয় ডিভিশন ফুটবল আয়োজন করে সংস্থা। এছাড়াও আরো দু একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়। তবে ২০২১-২২ ফুটবল মরশুম আয়োজন করলেও এ বছর আর ২০২২-২৩ ফুটবল মরশুম আয়োজন করছে না শিলচর ডি এস এ। কারণ সুপার ডিভিশনের ক্লাবগুলি একই বছরে দু-দুবার লিগ খেলতে অস্বীকার করেছে। ফলে ক্লাবগুলো খেলতে অস্বীকার করায় পুরো মরশুমটাই বাতিল করতে হয়েছে ডি এস এ কে।
আসলে সুপার ডিভিশন এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অবনমনের বিষয়টাও। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে প্রথম ডিভিশনও। কারণ প্রথম ডিভিশনে চ্যাম্পিয়ন হলে একটা দল সুপার ডিভিশনে খেলার ছাড়পত্র আদায় করে। একইভাবে সুপার ডিভিশনের সবচেয়ে নিচে থাকা দল অবনমন হয়ে প্রথম ডিভিশনে নেমে যায়। ফলে সুপার ডিভিশন আয়োজন না করলে অন্য কোন লিগও আয়োজন করতে পারবেনা সংস্থা। সেজন্যই সুপার ডিভিশনের ক্লাবগুলি ২২-২৩ মরশুমে লিগ খেলতে অস্বীকার করায় বাধ্য হয়ে পুরো মরশুমটাই বাতিল করতে হয় ডি এস এ কে।
সংস্থা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ২০২২-২৩ ফুটবল মরশুমের জন্য আগামী সেপ্টেম্বরে আন্তঃ ক্লাব দলবদল আয়োজন করবে। তার ঠিক পরেই শুরু হবে সুপার ডিভিশন ফুটবল। এ নিয়ে সুপার ডিভিশনের ক্লাবগুলোর সঙ্গে এক বৈঠকও করে সংস্থা। এরপর সুপার ডিভিশনের প্রত্যেকটি ক্লাবকে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, যদি কোন ক্লাব খেলতে রাজি না হয় তাহলে এই চিঠির মাধ্যমে সেটা সংস্থাকে জানাতে হবে। আবার কোনো ক্লাব যদি এই চিঠির কোনো উত্তর না দেয়, তাহলে ধরা হবে সেই ক্লাব খেলতে আগ্রহী। এর জবাবে সুপার ডিভিশনের ছয় টির মধ্যে চারটি ক্লাব খেলতে অস্বীকার করে। শিলচর স্পোর্টিং ক্লাব কোনো জবাব দেয়নি। যার অর্থ দাঁড়ায় তারা খেলতে রাজি ছিল। শুধু তরুণ সংঘ চিঠির মারফত তাদের সম্মতির কথা জানায়। প্রথম ডিভিশনের চ্যাম্পিয়ন হয়ে সুপার ডিভিশনে উঠে আসা দলটি ২০২২-২৩ মরশুমে খেলতে রাজি ছিল।
ক্লাবগুলির কাছ থেকে জবাব আসার পর এক গভর্নিং বডির ডাক দেয় সংস্থা। সেই বৈঠকে আলোচ্য বিষয় সূচিতে ছিল শুধু ২০২২-২৩ ফুটবল মরশুম। সেই বৈঠকে খেলতে অস্বীকার করা ক্লাবগুলি জানায়, একই বছরে দুটো লিগ খেলা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ এর সঙ্গে আর্থিক দিকটাও জড়িয়ে রয়েছে। বিশেষ করে যেগুলি ক্লাব, ফুটবলের সঙ্গে ক্রিকেটও খেলে থাকে তাদের পক্ষে একই সময়ে দুটো দল মাঠে নামানো খুবই কঠিন। অবশ্য ক্লাবের দিক থেকে বিচার করলে এই যুক্তিটা মোটেও ফেলে দেবার মত নয়। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, চিঠি দিয়ে প্রথমে খেলতে রাজি হলেও জিবি বৈঠকে এসে তরুণ সংঘের প্রতিনিধিরা জানান তারাও ২০২২-২৩ মরশুমে খেলতে পারবেন না।
সেপ্টেম্বর- অক্টোবরেই হয়ে থাকে সংস্থার আন্ত ক্লাব ক্রিকেট দল বদল। ফলে একই সময়ে দুটো দল তৈরি করা এবং খেলোয়ারদের সে অনুসারে পেমেন্ট করা ক্লাবগুলোর পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়াতো। তাই তারা সড়ে দাঁড়াবার সিদ্ধান্ত নেয়। অবশ্য এই সম্ভাবনাটা শুরু থেকেই উঁকি মারছিল। শুধু ক্লাবগুলো নয়, ফুটবল মরশুমের বিভিন্ন টুর্নামেন্টের স্পন্সরদের পক্ষেও একই বছরে দু দুবার স্পন্সর করতে হতো।
একটা ফুটবল মরশুম আয়োজন না করায় শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে আরো একটা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তা হল বিভিন্ন আন্তজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টে তাহলে কিসের ভিত্তিতে দল গঠন করা হবে? তবে এর একটা সমাধানও বের করে নিয়েছে সংস্থা। সচিব বিজেন্দ্র প্রসাদ সিং জানান, ২০২২-২৩ মরশুমের বিভিন্ন আন্তজেলা টুর্নামেন্টের জন্য দল গঠনের ক্ষেত্রে ২০২১-২২ মরশুমের পারফরম্যান্স বিবেচনা করা হবে। অর্থাৎ এবছর যেসব টুর্নামেন্ট হয়েছে তা দিয়েই জেলাভিত্তিক টুর্নামেন্টের দল গঠন করা হবে।
Comments are closed.