Also read in

যা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তা থেকে এক চুলও নড়ব না : বিজেন্দ্র, অনেক ক্লাব রয়েছে যারা সুযোগই পাচ্ছে না, তাদের নিয়ে আলোচনা নেই কেন? প্রশ্ন ডি এস এ সচিবের

শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থায় এমন অনেক ক্লাব রয়েছে যারা বছরের-পর-বছর ব্রাত্য। অথচ তারা নিয়মিত ভাবে সংস্থার সব ধরনের স্পোর্টিং অ্যাকটিভিটিতে অংশ নিচ্ছে। তারপরও তারা দীর্ঘ সময় থেকে এসোসিয়েট ক্লাব। উল্টোদিকে, যারা বছরের-পর-বছর নিষ্ক্রিয় তারা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। ‌ সংবিধান মেনে সেইসব নিষ্ক্রিয় ক্লাব ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ বাতিল করতেই হইহল্লা হচ্ছে। কিন্তু কই, যারা দিনের-পর-দিন ব্রাত্য তাদের নিয়ে তো কেউ টু শব্দটিও করছে না। যদি সত্যিই খেলাধুলার প্রসার এবং উন্নয়ন চান, তাহলে এসোসিয়েট সদস্য হয়ে ফের সংস্থায় আসুন। রাস্তা তো খোলাই রয়েছে। ‌ সমস্যাটা কোথায়? বাকস আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে ঠিক এভাবেই বিরোধীদের বিধলেন শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব বিজেন্দ্র প্রসাদ সিং।

তার সাফ কথা, যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা সংস্থার স্বার্থে নিয়েছেন। ব্যক্তি স্বার্থে নয়। খেলাধুলার উন্নয়ন ও প্রসারের জন্য এটা খুব জরুরি ছিল। ‌ তাই নিজের এই সিদ্ধান্ত থেকে একচুলও নড়বেন না। ‌ দরকার হলে অন্যপথ ধরবেন। যাদের সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে, তারা এখন সংস্থার সদস্য নন। ‌ এর বদলে এখন সংস্থা নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত করবে। ‌ যেসব এসোসিয়েট সদস্য দীর্ঘদিন থেকে ব্রাত্য, এবার তাদের সুযোগ দেওয়া হবে।

শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব জানান, ইচ্ছে করেই অসম অলিম্পিক সংস্থার সচিব লক্ষ্য কোওর পুরো ঘটনাকে ভিন্ন মোড় দিতে চাইছেন। বিজেন্দ্র বলেন, ‘আমি কখনোই এ ও এ সচিব লক্ষ্য কোওর সম্পর্কে বাজে কথা বলিনি। ব্যক্তিগত আক্রমণ করিনি। তাহলে তিনি আমার বিরুদ্ধে যা খুশি তা অভিযোগ করছেন কিভাবে? আমি তো কোনদিন ভগেশ্বর বড়ুয়া ও রাধা গোবিন্দ বড়ুয়ার মতো ব্যক্তিত্ব কে অসম্মান করিনি। ‌ প্রশ্নই উঠে না। এই দুজনের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। ‌ তাহলে লক্ষ্য বাবু কিভাবে এই ইসু তে দুই মহান ব্যক্তিত্ব কে টেনে নিয়ে এলেন। আমার মনে হচ্ছে গোটা বিষয়টাকে ভিন্ন মোড় দিতে তিনি এমনটা করেছেন।’ এখানেই না থেমে বিজেন্দ্র আরো বলেন, ‘শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার মত প্রাচীন ঐতিহ্য শালী একটা সংস্থাকে হুমকি দিয়ে চিঠি দিলেন কিভাবে লক্ষ্য বাবু? তিনি কি করে ভুলে গেলেন এন এম গুপ্ত, টুকু ব্যানার্জি, সুনীল মোহন এন্দো এবং জে সি দাশগুপ্তের মত ব্যক্তিদের হাত ধরে শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থা গঠিত হয়েছিল। তাও আবার ১৯৫৭ সালে। এক সপ্তাহের মধ্যে চিঠির জবাব না দিলে অনুমোদন বাতিল করে দেওয়া হবে। ‌ এমন হুমকি দিয়ে লক্ষ্য বাবু কি শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার অসম্মান করেননি? আমার তো মনে হয়, তার এই কর্মকাণ্ড সম্পর্কে এ ও এর বাকি সদস্যরা অন্ধকারে রয়েছেন। তারা সম্ভবত কিছুই জানেন না।’

কদিন আগেই বরাক বুলেটিন কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ ও এ সচিব লক্ষ্য কোওর বলেছিলেন, দরকার হলে শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিকল্প হিসেবে কাছাড় স্পোর্টস ফোরামকে অনুমোদন দেওয়া হবে। ‌ এ প্রসঙ্গে বিজেন্দ্র বলেন, ‘আমি এ ও এ সচিবের এমন মন্তব্য কে স্বাগত জানাচ্ছি। আমি তো বলব শুধু কাছাড় স্পোর্টস ফোরাম কেন, আরো সংস্থাকেও অনুমোদন দেওয়া উচিত। ‌ বিশেষ করে লক্ষ্মীপুর কে। ওরা অনেক দিন থেকে অনুমোদন ছাড়াই কাজ করে যাচ্ছে। তাই শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব হিসেবে আমি লক্ষ্মীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা কে অনুমোদন দেওয়ার জন্য এ ও এর কাছে আর্জি জানাচ্ছি।’
বিজেন্দ্র জানান, ২০১৯ থেকে এ ও এর দেওয়া প্রত্যেকটি চিঠির জবাব দিয়েছেন। ‌ তাদের নির্দেশ মেনে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে এ ও এ সচিব আজ পর্যন্ত শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার একটি চিঠির ও জবাব দেননি। তিনি বলেন, ‘২০১৯ সাল থেকে এ ও এর সচিব আমাদের যেসব চিঠি দিয়েছেন, আমরা সব কটার জবাব দিয়েছি। প্রতিটি নির্দেশ পালন করেছি। ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিল আমরা একটি চিঠি এ ও এ সচিব কে পাঠিয়েছিলাম। সেই চিঠিতে আমরা জানতে চেয়েছিলাম কোভিড পরিস্থিতির জন্য এই মুহূর্তে আমাদের পক্ষে বিজিএম করা সম্ভব নয়। তাই এমন পরিস্থিতিতে আমাদের কি করা উচিত। কিভাবে এগোনো উচিত। তা জানতে চেয়েছিলাম। ‌ কিন্তু আমরা সেই চিঠির কোনো জবাব পাইনি।’ শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব বলেন, ‘আমরা তো

আসাম অলিম্পিক সংস্থার নির্দেশ মেনেই বিশেষ সাধারণ সভার দিকে এগিয়েছিলাম। সংবিধান মেনেই সবকিছু করছিলাম। ‌ তাহলে এই বিষয়ে এ ও এ নাক গলাতে এলো কেন? কী উদ্দেশ্য নিয়ে? সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আমরা তো বিজিএম ডাকিনি। ডেকেছিলাম এস জি এম। তাহলে এতে তার সমস্যা কোথায়? আরেকটা কথা হচ্ছে, শিলচর ডি এস এ কিছু প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ‌ এটাতো সম্পূর্ণ আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। কিন্তু আসাম অলম্পিক সংস্থা এ নিয়ে আমাদের বারবার ধমকি দিচ্ছে।’
বিজেন্দ্র বলেন, ‘আমি একটা কথা পরিষ্কার করে দিতে চাই। ‌এ ও এ আমাদের অভিভাবক ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।

আমাদের পক্ষ থেকে কোনো বিবাদ নেই। কারণ আমরা যা কিছু করছি তা সংস্থার সংবিধান মেনেই করছি।’ শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিবের বিরুদ্ধে শিলচরের বিধায়ক ও সাংসদ কে এড়িয়ে যাবার অভিযোগ ও ইদানিংকালে বেশ কয়েকবার উঠেছে। এদিনের অনুষ্ঠানে এনিয়ে ও জবাব দেন বিজেন্দ্র। তিনি বলেন, ‘গত ১৪ আগস্ট আমরা শিলচরের বিধায়ক দ্বীপায়ন চক্রবর্তী, সাংসদ রাজদীপ রায় এবং লক্ষীপুরের বিধায়ক কৌশিক রায় কে সংবর্ধনা দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু শিলচরের বিধায়ক তার জরুরী কাজে গুয়াহাটি চলে যাওয়ায় সেই অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়। এছাড়া সম্প্রতি সংস্থা এথলেটিক মিটে শিলচরের সাংসদ অতিথি হিসেবে এসেছিলেন। কাজেই আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। যখনই সুযোগ আসবে, আমি শিলচরে বিধায়ক ও সাংসদ কে শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থায় আমন্ত্রণ জানাবো।’

Comments are closed.

error: Content is protected !!