Also read in

ডি এস এর কমিটি অবৈধ, ওরা অনৈতিক কাজ করেছে : বিধায়ক দীপায়ন, এভাবে প্রভাব খাটিয়ে কোনো কাজ হয়না : বিজেন্দ্র

যে লড়াই এতদিন পর্দার আড়ালে ছিল, সেটাই রবিবার প্রকাশ্যে চলে এলো। শিলচরের বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী সাফ জানিয়ে দিলেন, শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার বর্তমান কমিটি অবৈধ। এখানেই শেষ নয়, শিলচরের বিধায়ক ডি এস এর সচিব হিসেবে নাম নিলেন সুবিমল ধরের। ‌ সংস্থার বর্তমান সচিব বিজেন্দ্র প্রসাদ সিংয়ের নামটুকু উচ্চারণ করলেন না। উল্টোদিকে, সংস্থার গেটের সামনে ধর্নায় বসা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর বিজেন্দ্র ও জানিয়ে দিলেন, এভাবে প্রভাব খাটিয়ে ডি এস এ তে কিছু করা যাবে না। এটা সমস্যার সমাধান নয়। আলোচনা করতে হলে টেবিলে আসুন। এভাবে গেট বন্ধ করে প্রভাব খাটিয়ে কিছু হবে না।
রবিবার শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার গেটের সামনে ধর্না চলাকালীন এসে উপস্থিত হন বিধায়ক দীপায়ন। তিনি প্রথমে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তারপর আলোচনা করতে যান উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে থাকা সংস্থার সভাপতি বাবুল এবং সচিব বিজেন্দ্রর সঙ্গে। তবে বিধায়ক আসতেই বিজেন্দ্র সেই স্থান থেকে সরে যান। শিলচরের বিধায়ক সংস্থার সভাপতি বাবুল হোড়ের কাছে প্রশ্ন তোলেন, ‘এভাবে কেন কুড়িটি ক্লাব ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সদস্য পদ বাতিল করে দেওয়া হল? এমন সময়ে এই অনৈতিক কাজ করা হলো যখন দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভার দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসছে। এত সমস্যা থাকলে আগে কেন এমনটা করা হলো না।’ এর জবাবে সংস্থার সভাপতি বলেন, ‘সংস্থার একটা সংবিধান রয়েছে। ‌ আমরা সেটা মেনেই কাজ করেছি।’ সেই আলোচনা সেখানেই শেষ হয়ে যায়।
এর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিধায়ক দীপায়ন বলেন, ‘খুবই হতাশা জনক ঘটনা। ডি এস এর অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে জনসাধারণ বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার বর্তমান কমিটি অবৈধ। সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে অসম অলিম্পিক সংস্থাকেও তোয়াক্কা করছেন না।’ এরপরই তিনি সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন। বলেন, ‘এখানে আসার আগে আমি শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব শিথিল ধরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তিনি আমায় জানান, তার পরিবারের এক সদস্য হাসপাতালে। ‌ ফলে তিনি আসতে পারবেন না। সংস্থার সভাপতি বাবুল হোড়ের সঙ্গেও আমি এ নিয়ে আলোচনা করলাম। তাদের বললাম, এভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। ‌ আসুন, সবাই ভেতরে গিয়ে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করি। ‌ তবে ওরা আমার আবেদনের সাড়াই দিলেন না।’
শিলচরের বিধায়ক ডি এস এর বর্তমান কমিটিকে এক হাত নিয়ে বলেন, ‘ব্যক্তি স্বার্থের কথা চিন্তা না করে আমাদের সংস্থার মান বাড়াতে হবে। ‌ তবে বর্তমান কমিটি খেলাধুলার মান বাড়াতে রাজি নয়। তারা তো একের পর এক অনৈতিক কাজ করে যাচ্ছে। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। ‌ এখানে যে বিক্ষোভ চলছে তা নিয়ে অসম অলম্পিক সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে।’ দীপায়ন জানান, ডি এস এর কমিটি খেলাধুলার বারোটা বাজিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, ‘শিলচর ব্যায়াম বিদ্যালয়ের জেলা ক্রীড়া সংস্থায় বিরাট অবদান রয়েছে। এই ব্যায়াম বিদ্যালয় থেকেই আমি এবং সাংসদ ডিএস এতে প্রতিনিধিত্ব করে থাকি। অথচ এই কমিটি ব্যায়াম বিদ্যালয় এর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। ব্যায়াম বিদ্যালয়ের ছয় ভোট কমিয়ে ওরা দুই এ নিয়ে আসতে চাইছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
দীপায়ন সাফ জানিয়ে দেন, তারা চাইছেন অসম অলিম্পিক সংস্থার সমস্ত নীতি নির্দেশিকা মেনে নির্বাচন হোক। বর্তমান সরকার খেলাধুলাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। ‌ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যেক জেলাতে একটি স্টেডিয়াম নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এতকিছুর পরও শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থা অনৈতিক কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে, সংস্থার সভাপতি বিজেন্দ্র প্রসাদ সিং জানান, এভাবে জোর করে গেট বন্ধ করে দিয়ে কোনো লাভ হবে না। এভাবে প্রভাব খাটিয়ে কিছু হাসিল করা যায় না। ‌ এটা সঠিক পদ্ধতি নয়। সংস্থা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা কারোর একার নয়। ‌ সংস্থার প্রত্যেক সদস্যদের সম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবং সেটাও নেওয়া হয়েছে সংবিধান মেনেই। এ নিয়ে যদি কারোর আপত্তি থাকে তাহলে আগেই বলা হয়েছে সংস্থায় আপিল করার জন্য। সংস্থার সচিব বলেন, ‘আজ যা কিছু ঘটেছে তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এখানে বিক্ষোভ জানানো হলো। অথচ এর কোনো দরকার ছিল না। ‌ আমি বিক্ষোভকারীদের প্রস্তাব দিয়েছিলাম যদি আপনাদের কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে সেটা আমায় লিখিতভাবে দিন। ‌ আমি সাত দিন দরকার হলে তিন দিনের মধ্যে বৈঠক ডেকে তার মীমাংসা করব। ‌ কিন্তু ওরা আমার কোনো আবেদন ই মানল না। আমার একটি কথাও শুনলো না।’

Comments are closed.

error: Content is protected !!