দুর্গাপূজা দোরগোড়ায়।এ সময়টা আমাদের কাছে বহু আকাঙ্ক্ষিত। আমরা জানি, উৎসব চলাকালীন আকর্ষণীয় ছ’ গজের শাড়ি পেঁচিয়ে ট্রেডিশনাল থাকার চাপ কতটা, এমনকি অনেকে হয়তো অঞ্জলি দেওয়ার জন্য সকাল থেকে উপোস করে থাকবেন বা ভিড়ের মধ্যে লাইনে দাঁড়াতেও হবে। সবমিলিয়ে উৎসবের মেজাজ! আনন্দ-উচ্ছ্বাসের শেষ নেই!
দুর্গাপূজার সময় আপনি সাধারণ শাড়ি কিংবা ভারি কোনও শাড়ি বা গাউন পরতে চান কিনা তা এখনো ঠিক করে উঠতে পারেননি? কিংবা নিশ্চিত নন? বুঝে উঠতে পারছেন না কিভাবে নিজেকে সাজিয়ে তুলবেন? যদি তাই হয়, তবে এসব নিয়ে আর চাপ নিতে হবে না।
চিন্তার আর কোনো কারণই নেই। কারণ আজ আমাদের সঙ্গে আছেন পরিণীতা বসাক। আমরা সাজগোজ নিয়ে তার কাছ থেকে অনেকগুলো টিপস জেনে নিয়ে আপনাদের সঙ্গে তা ভাগ করে নিচ্ছি।
বসাক তার নিজস্ব ডিজাইনার স্টোর ‘সিগনো-রা’ চালান, যা কিনা ২০১৬ সালে শুরু হয়েছিল।
প্রথমে শুধু মহিলাদের সংগ্রহ দিয়ে শুরু করলেও গত বছর থেকে তিনি বাচ্চাদের এবং পুরুষদের কালেকশন নিয়েও কাজ শুরু করেছেন। তবে আজ আমরা শুধু মহিলাদের বিভাগ নিয়েই জানতে চাইবো। সঙ্গে আপনাদের অবশ্যই আশ্বাস দিচ্ছি যে অন্য দুটি বিভাগ নিয়েও আমরা আবার আপনাদের কাছে ফিরে আসবো।
আমাদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বসাক জানালেন, ” গ্রীষ্মকালের প্রভাবটা যেহেতু পুজোর সময়ও থেকে যায় এবং সর্বোপরি প্রত্যেকেই পুজোর সময় স্বতন্ত্র ডিজাইনের সঙ্গে আরামদায়ক পোশাক পরতে পছন্দ করেন সুতরাং বছরের বহু প্রতীক্ষিত এই পুজোর চারদিন কি পোশাক পরবেন, তার প্লেনিং অবশ্যই শুরু করে দেওয়া উচিত। আর যেখানে বরাক উপত্যকার ফ্যাশন লেভেল ইতিমধ্যেই অনেক উঁচুতে রয়েছে।”
এখন তাই পুজোর চারটা দিন নিয়েই আলোচনা করছি।
সপ্তমী: বেশিরভাগ সুন্দরী মহিলারা সপ্তমীর সকালে ‘সোভার’ পোশাক পছন্দ করেন, যেমন ধরুন কন্ট্রাস্ট ফরমাল সুতির প্যান্টের সঙ্গে কুর্তা পছন্দ করেন। কুর্তায় কিছুটা এমব্রয়ডারি কাজ থাকতে পারে। কেউবা টপ’র সঙ্গে স্কার্ট পরতে পারেন। প্যাস্টেল কালারটা যেহেতু এখনও ট্রেন্ডে রয়েছে, তাই হালকা রংয়ের কিছু পোশাক বেছে নেওয়া যেতে পারে যেমন কিছু কুর্তা কিংবা সালোয়ার। কেউ আবার ‘বোহেমিয়ান ফ্যাশন’ থেকে অনুপ্রেরণা পেতে পারেন। উজ্জ্বল রঙ্গিন ‘টেক্সচার’ যুক্ত জ্যাকেটের সঙ্গে ঝলমলে জাম্পস্যুট পরতে পারেন। কেউ হয়তো বা দুটোর সংমিশ্রণে ‘ফিউশন’ করতে পারেন। যেমন ধরুন পালাজোর সঙ্গে লম্বা ‘শিয়ার জ্যাকেট’ বা ‘ট্রেন্চ কোট’ ট্রাই করতে পারেন।
অষ্টমী: অষ্টমীর সকালে শাড়ি ছাড়া অন্য কিছু যেন ভাবাই যায় না। খুব সুন্দর প্রচুর কারুকার্য করা ডিজাইনার ব্লাউজ ( অর্ধেক পেইন্ট করা কিংবা এমব্রয়ডারি করা) এর সঙ্গে হালকা রংয়ের শাড়ি পরতে পারেন।
সন্ধ্যের পরিকল্পনায় অবশ্যই থাকতে পারে গাউন (অফ শোল্ডার/ ফ্লেয়ার/ বডিকন) কিংবা ক্রপ টপের সঙ্গে সর্ট স্কার্টও চলতে পারে।
নবমী: যেহেতু এটি সব শেষের দিন , তাই এদিনএকটু স্পেশাল হওয়া উচিত। নবমীর সকালে কেউ আধুনিক ডিজাইন মেশানো ট্রেডিশনাল শাড়িও বাছতে পারেন। কেউ আবার সুন্দর কোন আনারকলি কিংবা চিকেনের কাজ করা সুটও বেছে নিতে পারেন।
কেউ নিজের শৈল্পিক চিন্তা-ধারা ব্যবহার করে বহু রং মেশানো প্যাচওয়ার্কের ব্লাউজের সঙ্গে শাড়ি পরতে পারেন। শাড়ি থেকে দূরে সরে অন্য ধরনের স্টাইল করতে পারেন নবমীর সন্ধ্যায়। ধুতির মত প্যান্টের সঙ্গে ‘ক্রপ টপ’ এবং তার উপরে স্রাগ এ বছরের ট্রেন্ডে রয়েছে। লম্বা গাউনের উপরে গর্জিয়াস কাজ কিংবা ডিজাইনার ব্লাউজের সঙ্গে উজ্জ্বল রঙের উপর হালকা কাজ করা শাড়ি সবাইকে হতবাক করে দিতে পারে।কেউবা ট্রেডিশনাল বেনারসি বা সিল্ক শাড়ি বেছে নিতে পারেন। কারণ এগুলো কখনো পুরনো হয় না।
বিশেষ পরামর্শ: ফ্যাশনটা সম্পূর্ণ ভাবে নিজের উপর নির্ভর করে। আপনি কি করে একে পরিচালনা করতে পারবেন, তার ওপরই সবকিছু নির্ভর করছে।সুতরাং আপনি যাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন সে ধরনের পোশাকই বেছে নেওয়া শ্রেয়। আপনি যত বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন, ততই আপনার সাজকে বহন করতে পারবেন সাবলীল ভাবে।আর তখনই আপনি সুন্দর দেখবেন এবং হয়ে উঠবেন অনন্যা।
সিগনো-রা’র মহিলা বিভাগ থেকে আজকের জন্য এতটুকুই এবং সিগনো-রা’র পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য রইল দূর্গা পূজার আগাম শুভেচ্ছা।
আপনি যদি অন্য কোন নির্দিষ্ট স্থানীয় ডিজাইনার বা পার্লারের ভিন্ন কোনো স্টাইল কিংবা পোশাক বিভাগের বিষয়ে কিছু জানতে চান তাহলে আমরা ওদের কাছে পৌঁছার এবং সেই সঙ্গে আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আপনাদের কাছেও যদি নতুন কোন আইডিয়া থাকে অবশ্যই আমাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন।
Comments are closed.