রাজ্যের তিনটি জেলায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে আসাম প্রিমিয়ার ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ। এবার শিলচরেও শুরু হতে চলেছে এই চাম্পিয়নশিপ। আগামী ২৯ জানুয়ারি থেকে সতীন্দ্র মোহনদেব স্টেডিয়ামে বসবে এর আসর। এতে অংশ নেবে জেলার আটটি ক্লাব।
বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে এমনটা জানিয়ে দিলেন শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা।
চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য শিলচর ডি এস এ যে সূচি তৈরি করেছে সেই অনুসারে ফাইনাল খেলা হবে ১১ ফেব্রুয়ারি। আসরে সুপার ডিভিশনের চারটি এবং প্রথম ডিভিশনের চারটি দল অংশ নিয়েছে। দলগুলি হচ্ছে, সুপার ডিভিশন চাম্পিয়ন ইউনাইটেড ক্লাব, রানারআপ টাউন ক্লাব, ইন্ডিয়া ক্লাব, ইলেভেন স্টার ক্লাব, ক্লাব ওয়েসিস, যোগাযোগ সংঘ, পপুলার ক্লাব এবং উত্তরপাড়া ক্লাব। প্রথম ম্যাচে ইউনাইটেড ক্লাব খেলবে ইলেভেন স্টার ক্লাবের বিরুদ্ধে।
সংস্থার সভাপতি বাবুল হোড় জানান, রাজ্যের চতুর্থ জেলা হিসেবে শিলচরে শুরু হতে চলেছে আসাম প্রিমিয়ার ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ। সচিব বিজেন্দ্র প্রসাদ সিং বলেন, ‘আসাম প্রিমিয়ার ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপের এটা তৃতীয় সংস্করণ। মূলত আরো খেলোয়াড় তুলে আনার জন্যই এই আসর আয়োজন করে থাকে এ সি এ। এখানে স্থানীয় আয়োজক হিসেবে শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থা থাকলেও চ্যাম্পিয়নশিপের মূল আয়োজক কিন্তু এ সি এ।’
সংস্থার সচিব জানান, এসি এর নিয়ম অনুসারে এই টুর্নামেন্টে প্রতিটি জেলায় ন্যূনতম আটটি দল অংশ নিতে হবে। লিগ কাম নকআউট পদ্ধতিতে খেলা হবে ৪০ ওভারের ওয়ানডে ফরমেটে। থাকবে তিনটি পাওয়ার প্লে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, এই টুর্নামেন্টের খেলার জন্য কোনও এন ও সির দরকার পড়বে না। অর্থাৎ একজন খেলোয়াড় তার জেলার ক্লাবের হয়ে খেলতে পারবে। যেমন ধরুন, ইটখোলা এসি এই আসরে অংশ নিচ্ছে না। তবে ইটখোলার ক্রিকেটাররা অন্য ক্লাবের হয়ে এই আসরে নামতে পারবেন। আবার ইটখোলার ভিন জেলার খেলোয়াড়রা নিজ জেলার ক্লাবের হয়ে আসাম প্রিমিয়ার ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে নামতে পারবেন। তবে এর জন্য একটা টুর্নামেন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
সংস্থার ক্রিকেট সচিব নিরঞ্জন দাস জানান, অংশগ্রহণকারী আটটি দলের প্রতিনিধিদের সামনে লটারি করেই গ্রুপ বিন্নাস করা হয়েছে। আটটি দলকে দুটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। সুপার ডিভিশনের চ্যাম্পিয়ন ইউনাইটেড ক্লাব কে গ্রুপ এ’তে ও রানারআপ টাউন ক্লাব কে বি গ্রুপে রাখা হয়েছে। গ্রুপ পর্বে একে অপরের বিরুদ্ধে খেলার পর দু গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল ফাইনালের ছাড়পত্র আদায় করবে।
মূলত তিনটি রাউন্ডে আসাম প্রিমিয়ার ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করে থাকে এ সি এ। এর প্রথম ধাপে থাকছে জেলাভিত্তিক চাম্পিয়নশিপ। দ্বিতীয় ধাপে থাকবে জোনাল ভিত্তিক চ্যাম্পিয়নশিপ। আর সবশেষে থাকবে ফাইনাল রাউন্ড চ্যাম্পিয়নশিপ। জেলা স্তরে অর্থাৎ শিলচরে যে দল চ্যাম্পিয়ন হবে তারা পাবে এক লক্ষ টাকা। রানার আপ এর জন্য কিছু থাকছে না। জোনাল চ্যাম্পিয়ন দল পাবে দেড় লক্ষ টাকা। রানার আপরা পাবে এক লক্ষ। আর ফাইনাল রাউন্ডে চ্যাম্পিয়ন দলের জন্য প্রাইজমানি বাবদ থাকছে ১৫ লক্ষ টাকা। রানার আপরা পাবে সাড়ে সাত লক্ষ টাকা। দুই সেমি ফাইনালিস্ট দল পাবে ৫ লক্ষ টাকা করে।
নিরঞ্জন দাস জানান, প্রিমিয়ার ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে দল গঠনে কোন বাধ্যবাধকতা নেই। জোনাল চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য দিনক্ষণ ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে এ সি এ। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ মার্চ চলবে জোনাল চাম্পিয়নশিপ। তবে দক্ষিণ আসাম এর ভেন্যু এখনো চূড়ান্ত হয়নি। গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনাল রাউন্ড খেলা হবে ১৪ থেকে ৩১ মার্চ। সচিব বিজেন্দ্র জানান, জেলাভিত্তিক আসর আয়োজনের জন্য এ সি এ শিলচর ডি এস এ কে এক এক লক্ষ টাকা দিয়েছে। শুধু শিলচর কে নয়, প্রতিটি জেলায় প্রিমিয়ার ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজনের জন্য এই অর্থ দিচ্ছে এ সি এ। এরপর যদি কোন সংস্থা জোনাল চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজনের দায়িত্ব পেয়ে থাকে তাহলে সেই সংস্থাকে আরো ৫০ হাজার টাকা দেবে এ সি এ। আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, প্রিমিয়ার ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে প্রতিটি দলকে নিজেদের একাদশে অনূর্ধ্ব ১৯ চারজন খেলোয়াড় রাখতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক।
Comments are closed.