এনআইটির পাশে তাম্বুটিলায় রাজ্য সরকারের অনুমোদনে গড়ে উঠছে বৈদ্যুতিক শ্মশান চুল্লি
শিলচর শহরের শ্মশানঘাটে বৈদ্যুতিক চুল্লি স্থাপনের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকবার সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগ নেওয়া হলেও আজও কাজটি শুরু হয়নি। অথচ এর অনেক পরে শুরু করেও করিমগঞ্জ শহরের একটি বৈদ্যুতিক শ্মশান চুল্লি গড়ে উঠেছে। এবার কাছাড় জেলার সোনাই বিধানসভা সমষ্টির অন্তর্গত তাম্বুটিলা শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি বানানো হবে। মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এক কোটি টাকা এব্যাপারে বরাদ্দ হচ্ছে। স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার উপাধ্যক্ষ আমিনূল হক লস্কর কথাটির সত্যতা স্বীকার করেছেন।
তিনি রবিবার সকালে গুয়াহাটি থেকে ফিরেছেন, ফোনে বরাক বুলেটিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় বলেন, “তাম্বুটিল্লা শ্মশান সংলগ্ন এলাকায় বিরাট হিন্দু জনগোষ্ঠী রয়েছেন। এছাড়া এনআইটি, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়, শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ভেটেনারি ইত্যাদিতে অনেকেই চাকরির জন্য বসবাস করেন। শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এমনও হয়েছে বেশ কয়েকজন লোক একই এলাকার মারা গেছেন এবং তাদের সৎকারের ক্ষেত্রে ঘন্টার পর ঘন্টা মৃতদেহ নিয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বৈদ্যুতিক শ্মশান চুল্লি স্থাপন করলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। বর্তমান সময়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে যাদের মৃত্যু হচ্ছে, তাদের সৎকারের ক্ষেত্রেও নানান অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে প্রশাসন এবং রোগীর পরিবার। অনেক সময় এতদূর থেকে শিলচরের শ্মশানঘাটে নিয়েও শেষকৃত্য সম্পন্ন করার নিদর্শন রয়েছে। এসব কথা আমরা সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেছিলাম এবং তিনি তৎক্ষণাৎ একটি বৈদ্যুতিক চুল্লি স্থাপনের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। এক কোটি টাকা খরচ করে তাম্বুটিলার শ্মশানকে উন্নত করা হবে, সেখানে বৈদ্যুতিক চুল্লি স্থাপন করা হবে।”
শিলচরের শ্মশানঘাটে বৈদ্যুতিক চুল্লি স্থাপনের প্রস্তাব ২০১৬ সালে দেওয়া হয়েছিল। বিবেক বাহিনীর পক্ষ থেকে শিলচর পুরসভার কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেই প্রস্তাব প্রথমে ওএনজিসির কাছে পাঠানো হয়, তবে বিভিন্ন মতবিরোধ হওয়ার ফলে সেটি ভেস্তে যায়। পরবর্তীতে তৎকালীন সাংসদ সুস্মিতা দেব সংসদে প্রস্তাবটি রাখেন এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল শিলচরে একটি বৈদ্যুতিক চুল্লি স্থাপনের নির্দেশ দেন। বিবেক বাহিনীর সদস্যদের মতে, নিহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুরের নেতৃত্বে থাকা শিলচর পুরবোর্ডের অক্ষমতার ফলে সেই প্রস্তাবটি বাতিল হয়। পরবর্তীতে রাজ্য সরকারের সিআইডিএফ তহবিল থেকে শিলচর শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানোর একটি প্রস্তাব ওঠে, কিন্তু স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এব্যাপারে খুব একটা এগিয়ে আসেননি, ফলে তৃতীয় চেষ্টাতেও শিলচরে কাজটি সম্পন্ন হয়নি। এবার সোনাইয়ের বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জেলায় বৈদ্যুতিক চুল্লি স্থাপনের রাস্তা পরিষ্কার করেছেন। জনগণের আশা এবার কাজটি হবে এবং ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষ এর থেকে সাহায্য পাবেন।
Comments are closed.