Also read in

জমি দখলমুক্ত করতে সাতদিনের সময়সীমা বেঁধে দিল রেল, গৃহহারা হচ্ছেন তারাপুরের ১৭০ পরিবার! ভাঙ্গা পড়ছে তারাপুর অ্যাথলেটিক ক্লাব ভবন সহ বহু দোকান-বাড়ি ও

জমি দখলমুক্ত করতে শীঘ্রই অভিযানে নামছে রেল। এর জন্য ইতিমধ্যেই সাতদিনের চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে রেল বিভাগ। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তারাপুর এর প্রায় ১৭০ পরিবারের ভবিষ্যৎ।

জমি দখলমুক্ত করতে ইঞ্জিনিয়ারিং শাখা থেকে ইতিমধ্যেই চার পাঁচজন প্রতিনিধি তারাপুরে রেলের জমিতে বসবাসকারীদের মৌখিকভাবে সাতদিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। ‌ এই সময়ের মধ্যে জমি খালি করে না দিলে কড়া অবস্থান গ্রহণ করবে রেল। ‌ চলবে উচ্ছেদ অভিযান। ‌ এতে সঙ্গে থাকবে জেলা প্রশাসন ও। সোজা কথায় এবার আর কোন রেহাই দিতে রাজি নয় রেল বিভাগ।

আসলে জমি দখলমুক্ত করতে অনেক আগে থেকেই নোটিশ দিয়েছে রেল বিভাগ। ২০১৯ সালে প্রথম নোটিশ জারি করেছিল রেল। তারপর যথাক্রমে ২০২০ ও ২০২১ সালেও জমি খালি করার জন্য নোটিশ জারি করেছিল রেল। তবে এবার সাতদিনের চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে রেল। আর এতেই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারাপুর স্টেশন রোডের ১৭০ পরিবার। রেল বিভাগের এমন ফরমান এর পর একটা সমাধান সূত্র বের করতে উদ্বিগ্ন মানুষরা এক জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন। নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে এলাকার বিশিষ্ট জনেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, রেল বিভাগের কাছে তিন-চার মাসের সময়সীমা চাওয়া হবে। সেই অনুসারে রেলের কাছে একটু সময় চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল। তবে রেল বিভাগ সেটাও ফিরিয়ে দিয়েছে। সেইসঙ্গে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, শিলচরে রেলের আধুনিকরণের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‌ শুধু শিলচরে নয়, গোটা দেশে রেলের ভোল পাল্টাতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ‌ তারই অঙ্গ হিসেবে রেলের এই উচ্ছেদ অভিযান। ‌

রেলের এই সিদ্ধান্ত তারাপুরের ১৭০ পরিবার ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে যেন বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত। এক সূত্র অনুসারে, প্রায় ৮৫ টি বাড়ি দোকান ক্লাব ঘর উচ্ছেদ এর আওতায় রয়েছে। ইন্ডিয়া ক্লাব পয়েন্ট থেকে তারাপুর বাজার পর্যন্ত চলবে এই উচ্ছেদ অভিযান। বাদ যাচ্ছে না তারাপুর অ্যাথলেটিক ক্লাব এর ভবন ও।

রেলের জমিতে বসবাসকারীরা অধিকাংশই ব্যবসায়ী। ‌ নিজেদের পরিবার নিয়ে এতটা বছর ধরে সেখানে থাকছেন। অনেকের তো বাড়ির সঙ্গেই রয়েছে দোকানও। সেগুলোও উচ্ছেদের আওতায় রয়েছে। গত দু’বছরে করোনার জেরে প্রত্যেকেরই আর্থিকভাবে মেরুদন্ড ভেঙ্গে গেছে। ‌ অধিকাংশই ব্যাংক থেকে নেওয়া লোনের কিস্তি ও মেটাতে পারেন নি। এমন পরিস্থিতিতে সবাই ঘুরে দাঁড়াবার চেষ্টা করছিলেন। এরমধ্যে গোদের উপর বিষফোড়ার মত যোগ হয়েছে রেল বিভাগের ফরমান। এর ফলে সবাই এখন প্রচন্ড উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। নিজেদের ঘর দোকান বাঁচাতে এদিক-ওদিক ছুটছেন। বৈঠক করছেন। তবে লাভ কিছুই হচ্ছে না। রেল কতটুকু জায়গা দখলমুক্ত করবে, এ নিয়েও চলছে জল্পনা কল্পনা।

এদিকে রেল সূত্রে জানা গেছে, শীঘ্রই আধুনিকরণের কাজ শুরু হচ্ছে শিলচর রেল স্টেশনে। গড়ে তোলা হবে ত্রিতল ভবনসহ কোয়াটার। তাই অনেক জমির দরকার পড়বে। এতটা বছর ধরে নোটিশ জারী করা হলেও এক ফুটো জমিও দখলমুক্ত করা যায়নি। ফলে এবার কড়া অবস্থান গ্রহণ করেছে রেল বিভাগ।

Comments are closed.

error: Content is protected !!