Also read in

বড়খলায় প্রার্থিত্বের দাবি নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের দ্বারস্থ 'বহিস্কৃত' রুমি; বললেন ভুল বোঝাবুঝিতে দল-ছাড়া হয়েছিলাম

কয়েক মাস আগে প্রাক্তন বিধায়ক রুমি নাথ এবং লক্ষীপুরের বিধায়ক রাজদীপ গোয়ালাকে দলের সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেছিল কংগ্রেস। রাজদীপ গোয়ালার বহিষ্কারের নির্দেশ কেন্দ্রীয় কমিটির তরফ হলেও রুমি নাথকে বহিস্কার করেছিল প্রদেশ কংগ্রেস। এর পিছনে কারণ ছিল রুমির বিজেপি প্রেম। একসময় রাজদীপ গোয়ালাকে বিজেপির সদস্য করে নিলেও বিজেপির রাজ্য সভাপতি রঞ্জিত দাস স্পষ্ট করে দেন তিনি থাকতে রুমি বিজেপির সদস্যপদ পাবেন না। এবার কংগ্রেস দলের হয়ে বড়খলা নির্বাচনে লড়বেন এই প্রত্যাশা নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে কোষাধ্যক্ষ ব্রজেন্দ্র তালুকদারের হাতে তার আবেদনপত্র তুলে দেন রুমি নাথ।

গুয়াহাটি থেকে বরাক বুলেটিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি বলেন, “দলের ভেতর ভুল বোঝাবুঝিতে আমার সদস্যপদ বাতিল হয়েছিল, তবে এখন সেটা মিটে গেছে। বড়খলায় গত পাঁচবছর আমি সাধারন মানুষের পাশে থেকেছি, তারা আমাকে প্রার্থী হিসেবে চাইছেন। আমার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কংগ্রেস দলকে বড়খলায় পুনরায় জয়ী করা। আশা করছি দলের হাইকমান্ড এই কথাটুকু বুঝবেন। এই নির্বাচন অনেক কঠিন লড়াই, আমাদের সংঘবদ্ধ হয়ে লড়তে হবে। আমি আত্মবিশ্বাস নিয়ে বড়খলায় টিকিটের দাবীদার হিসেবে নিজের ইচ্ছে প্রকাশ করেছি। এবার দেখা যাক হাইকমান্ড কি সিদ্ধান্ত নেন, আমার মনে হয় যোগ্য প্রার্থী হিসেবে আমার কথা তারা ভাববেন।”

সম্প্রতি কংগ্রেসের জনহুংকার র‍্যালিতে অংশ নিতে প্রদেশ কংগ্রেসের বড় নেতারা কাছাড়ে এসেছিলেন। তাদের সামনে বরখলার প্রার্থী হিসেবে নিজের দাবি তুলে ধরেছিলেন পাপন দেব। একদিকে যখন রুমি বহিস্কৃত, পাপন দেবের টিকিট পাওয়ার আশা অনেকটাই বেশি বলে মনে করছিলেন তার সমর্থকরা। তবে এবার রুমিও সেই আবেদন করায় পুরো অঙ্কটাই পাল্টে যেতে পারে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে রুমি নাথ বলেন, “বড়খলায় অবশ্যই আমার জনপ্রিয়তা পাপন দেব থেকে বেশি। তবে জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে আমার জীবনের বিভিন্ন অধ্যায় নিয়ে কিছু বাধা অবশ্যই থেকে যাবে। আমি সেই পুরনো কথাগুলো অনেক পিছনে ফেলে দিয়ে ভবিষ্যতের কথা ভাবছি, যেখানে বড়খলাকে কিশোর নাথ থেকে মুক্ত করতে পারি।”

কিশোর নাথের ব্যাপারে তার বয়ান, “রাজ্যের ১২৬জন বিধায়কের গত পাঁচ বছরের খতিয়ান ঘাঁটলে দেখা যাবে সব থেকে বেশি দুর্নীতি করেছেন কিশোর নাথ। এলাকার মানুষ তাকে সহ্য করতে পারছেন না, তবে তার গুন্ডা বাহিনীর ভয়ে চুপ থাকছেন। সাধারণ মানুষ ভোটের মাধ্যমে এই উত্তর দেবেন এবং সেটা হাড়ে হাড়ে বুঝবেন কিশোর নাথ এবং তার দল। কিন্তু তার মত ধুরন্ধর ব্যক্তিকে হারাতে হলে একজন পরিপক্ক প্রতিদ্বন্দ্বী চাই, যেটা এই মুহূর্তে বড়খলায় আমি।”

অনেকেই একদল থেকে অন্য দলে যাবার পর বলেন দলের অনুশাসন মেনে টিকিট চাইবো অথবা হাইকমান্ড যেটা বলবেন সেটাই করব, প্রয়োজনে অন্য প্রার্থীর সমর্থনে কাজ করব, ইত্যাদি। তবে রুমি নাথ খোলাখুলি ভাষায় জানিয়ে দিলেন, তিনি নির্বাচনে সবথেকে যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী এবং টিকিট চাই। শোনা গেছে তার বাবা ত্রৈলোক্য নাথ কংগ্রেসের বড়মাপের নেতাদের সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রাখছেন। শুধুমাত্র তার মেয়েকে বড়খলা থেকে জয়ী করার ব্যাপারে নয়, জেলার অন্যান্য কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থীদের জয়ী করতে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন। এই দিক থেকে বিবেচনা করলে আগামী নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের সদস্য পদ এবং দলের টিকিট রুমি নাথ পেয়ে যেতেও পারেন বলে মনে করছেন অনেকেই।

Comments are closed.