পৃথিবীর আলো দেখবেন দুজন, শিলচর মেডিকেল কলেজে প্রথমবার সম্পন্ন হল চক্ষু প্রতিস্থাপন
বরাক উপত্যকায় চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী সাফল্য পেল শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগ। প্রথমবারের মতো ক্যারাটোপ্লাস্টি বা কর্নিয়াল ট্রান্সপ্লান্টেশন, বাংলায় যাকে বলা যায় চক্ষু প্রতিস্থাপন, সফলভাবে সম্পন্ন হল শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুক্রবার। শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ আশিস দেব এবং আই ব্যাঙ্ক এসোসিয়েশনের পিআরও ডাঃ ঠাকুরের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল সফলভাবে দুই ব্যক্তির ট্রানস্প্লান্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দক্ষিণ আসামের কোন হাসপাতালে এর আগে আই ট্রান্সপ্লান্টেশন অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়নি।
এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হলে অন্যতম প্রধান শর্ত হল, কেউ চক্ষু দান করে গেলে তার মৃত্যুর পর সঠিক পদ্ধতিতে তা সংগ্রহ করতে হয়। অনেক সময় কেউ দেহদান বা চক্ষুদান করলেও তার মৃত্যুর পর পরিবারের সদস্যরা বেঁকে বসেন। তবে, এক্ষেত্রে সেরকম কোনো অসুবিধা হয়নি। আগেই মরণোত্তর দেহদান ও চক্ষুদানের অঙ্গীকার করে যাওয়া যমুনা প্রসাদ কৈরির বুধবার শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় এবং পরিবার তার ইচ্ছা অনুযায়ী নেত্রদানে সম্মতি দেয়। শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আই ব্যাঙ্ক তার চোখ সংগ্রহ করে বৃহস্পতিবারে বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় এবং শুক্রবার জন্মান্ধ দুই ব্যক্তির চোখে তা প্রতিস্থাপন করা হয়। মৃত্যুর পর দুইজন নেত্রহীনকে চোখে দেখার মহান সুযোগ করে দিয়ে গেছেন যমুনা প্রসাদ কৈরী।
চোখে দেখতে না পাওয়া জন্মান্ধ দুই ব্যক্তি এবার পৃথিবীর আলো দেখবেন। সঙ্গে বরাক উপত্যকায় চক্ষু চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।
হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এই সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। সবাই আশাবাদি এবার থেকে শিলচরেই চক্ষু প্রতিস্থাপনের মতো জটিল চিকিৎসা সফলভাবে সম্পন্ন হবে।
Comments are closed.