Also read in

সেনা অফিসার সেজে চাকুরীর প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা হাতানোর অভিযোগে করিমগঞ্জে গ্রেফতার শিলচরের এক ব্যক্তি

করিমগঞ্জ শহরের সুভাষ নগর রোড এলাকায় এক ব্যক্তিকে আজ সকালে জনগণ পাকড়াও করল। স্থানীয় জনতার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী লোকটি নিজেকে রাজনাথ ভৌমিক হিসেবে পরিচয় দিয়েছে এবং চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছে। লোকটা ইতিমধ্যে অনেক গুলো বিয়ে ও করেছে এবং বিভিন্ন জায়গায় তার শ্বশুর বাড়ি রয়েছে, বলে জানা গেছে। কৌশল অবলম্বন করে সে কখনোও তার বিয়ে করে বউকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে না, শ্বশুরবাড়িতে রেখে দেয়। এ রকমই একজন শ্বশুর মশাই এই প্রতারণা সম্বন্ধে স্থানীয় জনতা কে জানান এবং তাকে আজ পাকড়াও করা হয়।

করিমগঞ্জের বাসিন্দা মধুমিতা কর তিন বৎসর আগে একজন জ্যোতিষীর কাছে গিয়েছিলেন এবং সেখানেই ‘রাজনাথ ভৌমিকে’র সাথে তার পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে মধুমিতার পরিবারের সাথে ও সে পরিচিত হয় এবং তাদেরকে আস্থায় নিয়ে এসে মধুমিতাকে বিয়ে করে । তাদের একটি কন্যা সন্তান ও আছে। মধুমিতা করের পরিবার থেকে জানানো হয়েছে যে, অতি সম্প্রতি সে শিলচরে তার আরেক স্ত্রী এবং আরো তিনটি সন্তান বহাল তবিয়তে থাকার কথা স্বীকার করে । পরে জানতে পারা যায় যে শুধু দুটি বিয়ে নয়, বিভিন্ন স্থানে ওর অনেক স্ত্রী এবং সন্তান রয়েছে।

তিন বছর আগে করিমগঞ্জে মধুমিতা করের সাথে বিবাহ দিয়ে করিমগঞ্জের সঙ্গে সম্পর্কের সূত্রপাত হওয়ার পর সে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়। সে নিজেকে সেনাবাহিনীর একজন পদস্থ আধিকারিক হিসেবে পরিচয় দেয় এবং চাকরি দেওয়ার নাম করে এই টাকা হাতায়। “একজন লোক বোনের চাকুরীর জন্য সোনার চেইন এবং নগদ টাকা দিয়েছিল তাকে। আরো অনেক আছে যারা দুই লাখ – তিন লাখ টাকা সেনাবাহিনীতে চাকুরী পাওয়ার প্রতিশ্রুতিতে দিয়েছিল। সে গরিবদেরকে প্রতারণার শিকার করেছে এবং ছোট ছোট চাকুরী যেমন গাড়ির চালক, সাফাই কর্মী ইত্যাদি পদে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে টাকা নীয়েছে। আমাদের হিসেব অনুযায়ী মোটামুটি সে ৫০ লক্ষ টাকা হাতিয়েছে, বেশিও হতে পারে” জানালেন সেই ব্যক্তি যিনি ঐ ‘রাজনাথ ভৌমিক’ নামক লোকটিকে করিমগঞ্জ পুলিশ স্টেশনে নিয়ে গিয়েছেন

“প্রায় ১৫ জন লোক আজ মধুমিতা করের বাড়িতে ভোর পাঁচটায় গিয়ে হাজির হন এবং দুজন লোক তার সাথে স্বাভাবিক কথাবার্তা শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ সে বুঝতে পারে যে তার পরিচিতি প্রকাশ্যে এসে গেছে এবং পালাবার চেষ্টা করে। তখন স্থানীয় লোকেরা তাকে দৌড়ে ধরে ফেলে”, জানালেন অপর এক ব্যক্তি যিনি ঐ সময় উপস্থিত ছিলেন।

উত্তম-মধ্যম দেওয়ার পর তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় করিমগঞ্জ সদর পুলিশ স্টেশনের নিয়ে যাওয়া হয়। সদর পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ সঞ্জীব জানিয়েছেন, “আজ সকালে লোকটাকে জনগণ থানায় নিয়ে আসে। আমরা এই ব্যাপারে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি এবং জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। লোকটা নিজেকে রাজনাথ ভৌমিক হিসেবে পরিচয় দিয়েছে তবে আমরা এখনও নিশ্চিত নই এটা তার আসল নাম কি না।”

Comments are closed.