জাল সার্টিফিকেট জমা দিয়ে এপিএসসি'তে বসার অভিযোগ জাগৃতির বিরুদ্ধে
নিজের জাতিগত পরিচয় নিয়ে তদন্তের মুখে পড়লেন এপিএসসি মেধা তালিকার ৮৯তম স্থানাধিকারী হাইলাকান্দির জাগৃতি কালোয়ার। অভিযোগ,অনুসূচিত জাতির সদস্য না হয়েও সরকারি সুবিধা আদায়ের জন্য এই সম্প্রদায়ের সদস্য হিসাবে নিজের পরিচয় দিয়েছেন জাগৃতি । জাল কাস্ট সার্টিফিকেট জমা দিয়ে অসম লোকসেবা আয়োগের পরীক্ষায় বসার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও জাগৃতির পিতা লক্ষিনিবাস কালোয়ার উত্থাপিত অভিযোগ খণ্ডন করেছেন।
এদিকে গণ অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে নামল হাইলাকান্দি জেলা প্রশাসন।। আগামী পাঁচ জানুয়ারি বিভাগীয় আধিকারিক সহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে এ ব্যাপারে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে, শুনানি গ্রহণ করবেন লালার সার্কেল অফিসার ম্যাজিস্ট্রেট ত্রিদিপ রায়। জাগৃতি কালোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে, তিনি নিজেকে তপশিলি জাতির (এসসি) সদস্য হিসাবে পরিচয় দিয়ে অসম লোকসেবা আয়োগের পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়েছেন।
জানা গেছে, জাগৃতি কালোয়ারের জাতিগত পরিচয় নিয়ে সরকারের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অসম সরকারের পার্সোনাল(এ) বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এক পত্রের (নং-এ এ এ দুইশো সাইত্রিশ/ দুই হাজার আঠারো/ তিন) মাধ্যমে এব্যাপারে তদন্ত করতে হাইলাকান্দির জেলাশাসক আদিল খানকে নির্দেশ দেন। আর ওই নির্দেশের প্রেক্ষিতে ম্যাজিস্ট্রেট ত্রিদিব রায়কে এব্যাপারে শুনানি গ্রহণ করতে বলেছেন জেলাশাসক । তাই এনিয়ে শুনানি গ্রহন করা হবে আগামী পাচ জানুয়ারি।
একদিকে যখন জাগৃতি কালোয়ারের জাতিগত পরিচয় নিয়ে এত বিতর্ক চলছে তখন অন্যদিকে এসিএস জুনিয়র গ্রেড সার্ভিসের আধিকারিক হিসাবে ইতিমধ্যেই তার নিযুক্তি চূড়ান্ত হয়ে আছে। যদিও আগামী পাঁচ জানুয়ারি জেলাসদরে এসংক্রান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে । এতে হাইলাকান্দি জেলা তপশিলি কল্যাণ বোর্ডের চেয়ারম্যান মনোজ কুমার রায়, হাইলাকান্দি জেলা অনুসূচিত জাতি মহাসভার সাধারণ সম্পাদক শংকরজিত দাশ, তপশিলি ঐক্যমঞ্চের কর্মকর্তা আইনজীবী বিনয় দাশ সহ জাগৃতি কালোয়ার নিজে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে হাইলাকান্দি জেলা অনুসূচিত জাতি মহাসভার সাধারণ সম্পাদক শঙ্করজিত দাশ ব্যাপারটিকে গুরুতর অপরাধের ঘটনা বলে উল্লেখ করে এনিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন । শঙ্করজিত জানান, ভারতের উত্তরপ্রদেশ, বিহার , দিল্লি ইত্যাদি স্থানে কালোয়ার উপাধি(টাইটেল)থাকা ব্যাক্তিকে ওবিসি(অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেনী)-র তালিকায় রাখা হয়েছে। সেসব এলাকায় কালোয়ার উপাধিধারীদের ওবিসি হিসাবে গণ্য করা হয়। কিন্তু বরাক উপাত্যকায় কালোয়ার উপাধিধারীরা সিডিউল কাস্ট বা অনুসূচিত জাতির সদস্য হিসাবে স্বীকৃত নন। ফলে জাগৃতি কালোয়ার নিজেকে অনুসূচিত জাতির লোক বলে পরিচয় দিয়ে সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করে রীতিমত প্রতারনা করেছেন।
যদিও জাতিগত পরিচয় নিয়ে
উত্থাপিত অভিযোগ ও শুনানি সম্পর্কে জাগৃতির পিতা লক্ষ্মীনিবাস কালোয়ার জানান সেই আদিকাল থেকেই কালোয়ার উপাধির লোককে অনুসূচিত(এসসি) জাতি হিসাবে গণ্য করা হচ্ছে । তাই তার মেয়ে অনুসূচিত সম্প্রদায়ের লোক এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে যেহেতু শুনানির জন্য তার কন্যাকে ডাকা হয়েছে, তাই সে শুনানিতে উপস্থিত হয়ে প্রয়োজনীয় নথি পেশ করবে। এদিকে জাতিগত পরিচয় নিয়ে জাগৃতি কালোয়ার তদন্তের মুখে পড়ার খবরে জেলা জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
Comments are closed.