Also read in

দুলাল পালের মৃত্যু কাঁপিয়ে দিল গোটা প্রশাসনকে, ১০ দিন পর মৃতদেহ সমঝে নিল পরিবার

অনেক জল গড়িয়ে যাওয়ার পর শেষপর্যন্ত আজ দুলাল পালের মৃতদেহ গ্রহণ করলো মৃতের পরিবার। মৃত্যুর ১০ দিন পর বাবার মৃতদেহ গ্রহণ করতে রাজি হলো তার দুই ছেলে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, দু’বছর ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকার পর দশ দিন পূর্বে অর্থাৎ গত ১৩ অক্টোবর গৌহাটি মেডিক্যাল কলেজে দুলাল পালের মৃত্যু হয়। কিন্তু এরপর তার দুই সন্তান জানান যে তারা বাবার মৃতদেহ গ্রহণ করবেন না। তাদের দাবি অনুযায়ী, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের বাবা দুলাল পালকে স্বদেশি হিসেবে ঘোষণা করা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা মৃতদেহ গ্রহণ করতে পারবেন না। আসামের দুই মন্ত্রী রঞ্জিত দত্ত ও পরিমল শুক্লবৈদ্য পরিবারের লোকজনদের বোঝাতে তাদের বাড়িতে যান। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। তাই গত ১০ দিন ধরে দুলাল পালের মৃতদেহ গৌহাটি মেডিক্যাল কলেজের মর্গে রাখা ছিল।

আসামের তেজপুর জেলার আলাসিঙ্গা গ্রামের ৬২ বছর বয়সী দুলাল পাল দু’বছর ধরে ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী ছিলেন। যেহেতু বিদেশি আখ্যায়িত করে তাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়, তাই তার পরিবারের লোকজন তার মৃতদেহ গ্রহণে অস্বীকার করেন। তার দুই ছেলের মতে, যেহেতু তাকে বিদেশি অর্থাৎ বাংলাদেশি বলা হচ্ছে তাই সরকার তার দেহকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিক, না হলে তাদের বাবাকে স্বদেশী বলে ঘোষণা করা হোক।এই অবস্থায় অনেকেই দুলাল পালের ছেলেদের নেওয়া এই দৃঢ় সিদ্ধান্তকে সাহসী পদক্ষেপ বলে আখ্যায়িত করেছেন। অনেক সংস্থা তাদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে। এবিওয়াইএসএফ, এএএমএসইউ সহ অনেক বাঙালি সংগঠন এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে।বিভিন্ন বাঙালি সংগঠন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে তাদের আশ্বাস প্রদান করেন। শিলচরও গর্জে উঠে এর প্রতিবাদে। পুত্র সন্তান সহ পরিবারবর্গ থাকা সত্বেও দশ দিন ধরে মেডিক্যাল কলেজের মর্গে দুলাল পালের মৃতদেহ পড়ে থাকাকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মনে করছেন সবাই। অবশেষে সরকার এবং বাঙালি ফেডারেশনের প্রচেষ্টায় দুলাল পালের মৃতদেহ দশ দিন পর তার ঢেকিয়াজুলির বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের হাতে মৃতদেহ সমঝে দেওয়ার সময় সরকারের পক্ষ থেকে বিজেপির বিধায়ক শিলাদিত্য দে উপস্থিত ছিলেন। তিনি মৃতের পরিবারবর্গকে মৃতদেহ গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে তারা যে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন সেজন্য তাদেরকে অভিবাদন জানান।

জানা গেছে, শ্রাদ্ধের দিন আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল দুলাল পালের বাড়িতে যাবেন। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস প্রদান করেছিলেন যে এই পরিবারকে ন্যায় দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে যতটা সম্ভব সাহায্য করা হবে।

Comments are closed.

error: Content is protected !!