
কাগজ কল বাঁচাতে ১০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ কর্মী পরিবারের মহিলারা
বরাক বনধ ডেকেও কোন লাভ হয়নি। এতটুকু টনক নড়েনি কেন্দ্র ও রাজ্যের বিজেপি সরকারের। তাই কাছাড় কাগজ কলের পুনরুজ্জীবনের দাবিতে এবার প্রধানমন্ত্রী মোদির দরবারে যাচ্ছে কাছাড় ও নগাঁও কাগজ কল কর্মীদের পরিবারবর্গ। শুক্রবার শিলচরে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে পাঁচগ্রাম পেপার মিলের কর্মীদের পরিবারের মহিলারা জানিয়ে দিলেন বাঁচার তাগিদে জীবন রক্ষায় আগামী ১০ ডিসেম্বর তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন।
শুধু তাই নয়, ক্ষোভ ব্যক্ত করে পাঁচগ্রাম পেপার মিলের কর্মী পরিবারের মহিলারা বলেছেন, দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর মোদির সঙ্গে দেখা করে তারা সরাসরি জানতে চাইবেন কাগজ কল কত শীঘ্র চালু হবে। সরকার পেপার মিলের কর্মীদের বেতন মিটিয়ে দেওয়ার জন্য যে ৯০ কোটি টাকা ২৭ আগস্ট বরাদ্দ করেছে, তা কোন অদৃশ্য কারণে এখনো হিন্দুস্তান পেপার কর্পোরেশনের (এইচটিসি) অ্যাকাউন্টে এসে জমা হল না। এর পেছনের রহস্য কি? পরিবারের তরফে সর্বজয়া বিশ্বাস বললেন, শিলচর থেকে কম করেও ৫০ জনের একটি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাবে। মোদির কাছ থেকে কোন নির্দিষ্ট আশ্বাস এবং প্রতিশ্রুতি না পেলে দিল্লির যন্তরমন্তরে দেওয়া হবে ধর্ণা। পেপারমিল নিয়ে আমাদের জবাব দিতেই হবে প্রধানমন্ত্রীকে, জোর দিয়ে বললেন তিনি।
সুজাতা নাথ বলেন, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া যাকে বলে আমরা এর চেয়েও বেশি গাড্ডায় পড়ে গেছি। ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে পারছিনা অর্থের অভাবে। কান্না ভেজা গলায় তিনি বলেন, পেপার মিল বন্ধ হয়েছে ২০১৫র অক্টোবরে। আমরা ভেবেছিলাম কিছু একটা সুরাহা হবে। কিন্তু দু’বছরেও কিছু না হওয়ায় ২০১৭ তে আমরা মহিলারা বাধ্য হয়েছি আন্দোলনে নামতে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইবো ২০১৪ সালের এপ্রিল মাস থেকে কেন কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফাণ্ডের টাকা জমা পড়েনি। আমাদের সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কাগজ কল কর্মীদের পরিবারের সদস্যরা শুধু পঞ্চায়েত নয় আগামী দিনের সব নির্বাচন বয়কট করবে।
মহিলারা জানিয়ে দেন, পরিবারের তরফে আমরা পেপারমিল দুর্নীতির সিবিআই তদন্তের দাবি করেছি। কিন্তু বিষয়টি হচ্ছে, তদন্ত একদিকে শুরু হোক অন্যদিকে আমাদের বেঁচে থাকার জন্য আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য মিল সত্বর চালু হতেই হবে। তারা আরো বলেন, দিল্লি যাওয়ার আগে আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে বরাক উপত্যকার বিশিষ্ট নাগরিক ও বুদ্ধিজীবীদের আহ্বান করে মিলের এই জীবন মরণ সংকট নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অনিন্দিতা দত্ত, মিত্রা দত্ত, পিংকি ভট্টাচার্য্য এবং রত্না আচার্য।
Comments are closed.