
মেহেরপুরে উদ্ধার যুবতীর ঝুলন্ত মৃতদেহ, সুইসাইড নোটে 'ঐ বাড়ির লোক'কে দায়ী করায় চাঞ্চল্য
“মা-বাবা সরি, আমার মরার জন্য ঐ বাড়ির লোক দায়ী”… এমন একটা সুইসাইড-নোট পাওয়া গেছে মেহেরপুরে ঝুলন্ত যুবতীর মৃতদেহের পাশের ঘরের দরজায়। বুধবার রাতে মেহেরপুরের জীবনজ্যোতি নার্সিংহোমের পাশে এক বাড়িতে ঝুলন্ত মৃতদেহটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যুবতীর নাম শিল্পা বিশ্বাস, বয়স ২৮ বছর, বাড়ি ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর এলাকায়, একসময় শিলচরে গ্রীন হিলস হাসপাতালে স্বাস্থ্য কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
যে বাড়িতে মৃতদেহ পাওয়া গেছে সেটার মালিক হচ্ছেন অনুকূল চন্দ্র পাল। তার বয়ান, “বিভিন্ন স্বাস্থ্য কর্মী এবং ছাত্র-ছাত্রীদের আমার বাড়িতে ভাড়া দেওয়া হয়, এভাবেই শিল্পা বিশ্বাস নামের মেয়েটিও থাকতেন। বুধবার সন্ধ্যা থেকেই আশ্চর্যজনকভাবে তার দরজা বন্ধ থাকায় আমরা একটু আশ্চর্য হই। অনেকক্ষণ বাইরে থেকে ডাকাডাকির পর যখন দরজা খোলেন নি, আমাদের সন্দেহ হয় এবং এলাকার কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ডেকে সেই কথা জানাই। পাশাপাশি পুলিশকে ও খবর দেওয়া হয়। অনেক চেষ্টার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় দরজা ভাঙ্গা হবে এবং পুলিশের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে দেখা যায় যুবতী ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। এর পিছনে কি কারণ রয়েছে আমরা জানি না, তবে পুলিশের তদন্তে সাহায্য করতে রাজি আছি।”
অনুকূল চন্দ্র পাল আরও বলেন, তিনি জানতেন শিল্পা বিশ্বাস গ্রীন হিলস হাসপাতালে কর্মরত। জানুয়ারি মাসে এই বাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন এবং তখন থেকেই এখানে রয়েছেন। শিল্পার পরিবারের সদস্যরা অনেক সময় দেখা করতে এসেছেন এবং থেকেওছেন। তবে হঠাৎ করে এই পদক্ষেপ নেওয়া এবং সুইসাইড নোট লিখে রেখে যাওয়ার পেছনে কী রহস্য থাকতে পারে, এব্যাপারে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে নার্সিংহোম সূত্রে জানা গেছে জানুয়ারি মাস থেকে চাকরিতে ছিলেন না শিল্পা বিশ্বাস।
রাঙ্গিরখাড়ি থানার ওসি প্রণব জ্যোতি ডেকা জানিয়েছেন, ঘটনায় বিভিন্ন দিক রয়েছে তবে এখনো পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো এজাহার দায়ের করা হয়নি। তার ঘরের দেয়ালে একটা নোট পাওয়া গেছে যেখানে সে বাড়ির মালিককে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছে। আমরা সব দিক যাচাই করে দেখছি এবং আইন তার নিয়ম অনুযায়ী এগিয়ে যাবে। মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পর অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে এছাড়া তার পরিবারের সদস্যরা আগামীতে যদি লিখিত অভিযোগ জানান আমরা তার ওপরে ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।
ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে, হঠাৎ করে এক বাড়িতে এভাবে ঝুলন্ত মৃতদেহ পাওয়া গেলে যেটা হওয়া অবশ্যই স্বাভাবিক। বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ উঠলেও তার কোনও ভিত্তি নেই বলে আমরা সেগুলোর কথা উল্লেখ করছি না। তবে এটা নিছক আত্মহত্যা না পরিকল্পিত হত্যা, এটা পুলিশের তদন্তে পরিষ্কার হবে। এছাড়া কেউ যুবতীটিকে মানসিকভাবে শোষণ করে আত্মহত্যা করতে প্ররোচনা দিয়েছিল কিনা এটাও তদন্ত করছে পুলিশ।
Comments are closed.