অবশেষে মুক্তি মিলল বাংলাদেশ থেকে আসা ১০৩ বছরের উনমতি বালা বিশ্বাসের: উদ্বাস্তু নোটিফিকেশন, ২০১৫ এর অধীনে
সে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য, ৬০ বছরের ছেলের হাত ধরে বেরিয়ে এলেন ১০৩ বছর বয়সী বৃদ্ধা মাতা অনুমতি বালা বিশ্বাস। শিলচর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার সেই দৃশ্য আজ অনেকেই অশ্রুসজল নয়নে প্রত্যক্ষ করলেন।
বিগত এক বছর ধরে ওদের ঠিকানা ছিল এই কারাগার । বাংলাদেশ থেকে অবৈধ ভাবে এদেশে প্রবেশ করার অপরাধে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছিল ।
গতকাল সোমবার প্রদত্ত এক রায়ে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীমতি রুপশ্রী দেব উদ্বাস্তু নোটিফিকেশন এর অধীনে এই দু’জনকে ভারতে থাকার অনুমতি প্রদান করেছিলেন। সেই রায় ই আজ কার্যকরী করা হল।
অনুমতি বালা বিশ্বাস এবং রাধিকা বিশ্বাস ওরফে ধাতু বিশ্বাস বাংলাদেশ থেকে এই দেশে পাড়ি জমিয়ে মালুগ্রাম অঞ্চলে বসবাস করছিলেন। বাংলাদেশের সিলেট জেলার জগন্নাথপুর থানার বড় শেওড়া গ্রামে তাদের বাড়ি ছিল। গত বছরের ২৫শে মে তারিখে তাদের দুজনকে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করার অপরাধে শিলচর মালুগ্রাম সর্বোদয় স্কুল চত্বর থেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল।
তাদের হয়ে আইনজীবী রঞ্জু দেব এই মামলা লড়েন । আইনজীবী দেবের প্রধান যুক্তি ছিল যে তারা দুজন অর্থাৎ অনুমতি বালা দেবী এবং ধাতু বিশ্বাস ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশ থেকে এসেছেন, তাই ২০১৫ সালের উদ্বাস্তু নোটিফিকেশন অনুযায়ী তারা শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় পাওয়ার যোগ্য। বিচারপতি শ্রীমতি রুপশ্রী দেব এই যুক্তি মেনে নিয়ে তাদের দুজনকে ভারতে থাকার পক্ষে রায় দেন।
সেই রায় অনুযায়ী আজ শিলচর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাদেরকে মুক্ত করে দেওয়া হয়। আমাদের প্রতিনিধির সাথে এক সাক্ষাৎকারে বৃদ্ধা শ্রীমতি অনুমতি দেবী জানান যে এখন ওরা শিলচরের গোবিন্দ আশ্রমে আশ্রয় নেবেন পরবর্তীতে কি করবেন তা তাদের জানা নেই। এদিকে উনার পুত্র শ্রী রাধিকা বিশ্বাস জানান যে উনি বাংলাদেশেই ফিরে যেতে আগ্রহী কারণ উনার সন্তান-সন্ততি এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বাংলাদেশেই বসবাস করছেন।
তাদের দুজনের ভবিষ্যৎ এর দিকে তাকিয়ে রয়েছে হাজার হাজার এমন ধরনের উদ্বাস্তু যারা এখনো এই দেশে বসবাস করতে আগ্রহী। ভবিষ্যতই শুধু তাদের ভবিষ্যতের সঠিক ঠিকানা জানিয়ে দিতে পারবে।
Comments are closed.