
নির্বাচনের দিনে গুলি চলার জেরে পুনঃনির্বাচন হচ্ছে ধনেহরি কেন্দ্রে, ২০ এপ্রিল সোনাই-রাতাবাড়ি- হাফলঙে ভোট
১ এপ্রিল নির্বাচনের সন্ধ্যায় সোনাই সমষ্টির ধনেহরি কেন্দ্রে পারস্পরিক বচসায় গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছিল, এতে তিন ব্যক্তি আহত হয়েছিলেন। প্রায় একই সময়ে করিমগঞ্জ রাতাবাড়ি এলাকায় বিধায়কের গাড়িতে ইভিএম পাওয়া যায়। দুই কেন্দ্রে এবার পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া হাফলংয়ে একটি কেন্দ্রে যতগুলো ভোট ছিল তার দ্বিগুণ ভোট সংগ্রহ হওয়ায় সেই কেন্দ্রেও পুনঃনির্বাচন হচ্ছে। ২০ এপ্রিল তারিখে নির্বাচন হবে এবং ঘোষণার তারিখ ২ মে।
রাতাবাড়ি কেন্দ্রে পুনঃ নির্বাচনের ঘোষণা আগেই করা হয়েছিল। তবে সোনাই নিয়ে কোনও পরিষ্কার ঘোষণা ছিল না। শনিবার নির্বাচন কমিশন লিখিতভাবে নির্দেশ জারি করেছেন। নির্বাচন কমিশনের তরফে অজয় কুমার বর্মা জানিয়েছেন, ১৪৯ ইন্দিরা এমবি স্কুল, রাতাবাড়ি, ১০৯ (৪৬৩) মধ্য ধনেহরি এলপি স্কুল, সোনাই, হাফলঙের এসটি-১০৭ এ খথলির এলপি স্কুল এবং ১০৭ মুয়ালদাম এলপি স্কুল পুনরায় নির্বাচন হচ্ছে।
১ এপ্রিল সন্ধ্যেবেলা ধনেহরি নির্বাচন কেন্দ্রে উপাধ্যক্ষ আমিনুল হক লস্করের সঙ্গে এআইইউডিএফ প্রার্থী করিম উদ্দিন লস্কর (সাজু)-র সমর্থকদের ঝগড়া হয়। এক সময় বেশ কয়েকটি রাউন্ড গুলি চলে এবং তিন ব্যক্তি আহত হন। পরবর্তীতে সেখানে একটি পিস্তল পাওয়া যায় এবং আমিনুল হক লস্করের ভোটার আইডি কার্ড সঙ্গে মেলে। আমিনুল হক লস্কর দাবি করেন প্রথমে তাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে তার নকল ভোটার আইডি কার্ড এবং একটি বন্দুক রেখে ভুল বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে করিম উদ্দিন লস্করের সর্মথকরা। সেদিন সন্ধ্যায় তাকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে রক্ষা করেছিল পুলিশ বিভাগ। তবে পরবর্তীতে তাকে শিলচর সদর থানায় ডেকে জেরা করা হয়। এদিকে করিম উদ্দিন লস্কর সাজু এই ঘটনা কারও উপর দোষারোপ করেননি, তিনি প্রশাসনের ওপর আস্থা রেখে চলবেন বলে জানিয়েছিলেন।
নির্বাচন এলাকায় গুলি চালানোর দায়ে পরবর্তীতে পাঁচ পুলিশ আধিকারিককে বরখাস্ত করেন পুলিশ সুপার বিএল মিনা। তবে ঘটনায় আমিনুল হক লস্কর বা তার বিরোধীরা সরাসরি এজাহার দায়ের করেনি। এবার নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে বিতর্কিত ভোটকেন্দ্রে আবার নির্বাচন হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে এবার কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
রাতাবাড়ি কাণ্ডে সঙ্গে সঙ্গেই পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশন। তারা কিছু নির্বাচন আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিলেও যে বিধায়কের গাড়িতে ইভিএম পাওয়া গেছিল তার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ কেন নেননি? এই প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রাক্তন সংসদ সুস্মিতা দেব। তিনি বলেন, ‘ভোট হওয়ার পর ইভিএম মেশিনগুলো বিজেপির বিধায়কের গাড়িতে পাওয়া গেছে এবং এর প্রমাণ থাকার ফলেই নির্বাচন কমিশন তাদের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন। এমনকি ওই কেন্দ্রে আবার নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে যে ব্যক্তিটি এর সঙ্গে জড়িত, বিজেপির বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল, তার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, এটা রহস্যজনক।’
এই প্রশ্নের উত্তরে সাংসদ রাজদীপ রায়ের বয়ান, ‘একজন আইনের ছাত্রী হয়েও সুস্মিতা দেব এরকম বোকা একটি মন্তব্য করবেন, ভাবতেই পারছিনা। আমি তাকে বলব ভারতবর্ষের নির্বাচনের নিয়ম গুলো একটু যাচাই করে নিয়ে তারপর মন্তব্য করবেন।’
Comments are closed.