আসাম-মিজোরাম সীমান্তে গুলিচালনা কচুরতলে, উত্তেজনা অব্যাহত
আলাপ আলোচনা এবং তারপর লাঠিচার্জ আসাম-মিজোরাম সীমান্তে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হলে আজ আসাম পুলিশ ও কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স গণআন্দোলন রোধ করার জন্য গুলি চালনার আশ্রয় নেয়। সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী মিজো স্টুডেন্টস ইউনিয়ন এমজেডপিপি নেতা রিকি একটি গুলিতে পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং তাকে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আসাম-মিজোরাম সীমান্তের কচুরতলে প্রতিকূল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আসাম সরকার আরো নিরাপত্তা কর্মী নিযুক্ত করেছে।
মিজোরামের অনেকগুলো সংগঠন আসামের দখলে থাকা একটি অংশ মিজোরামের বলে দাবি করে আসছে। এর মধ্যে মিজোরামের এমজেডপিপি (মিজো জিরলাই প্যায়েল) নামে একটি সংগঠনও রয়েছে। আসাম পুলিশ কর্মকর্তারা আমাদের জানান যে মিজো সংগঠনের কর্মীরা তাদের উপর পাথর ছুঁড়লে তারা এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন। “ এলাকায় আগেই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে আজ স্পষ্ট ও জোরালোভাবে ঘোষণা করা হয় যে কোনও ধরনের গণ আন্দোলনকেই বরদাস্ত করা হবে না। কিন্তু তারা কোনও আইনি প্রক্রিয়া মানতে আস্বীকৃতি জানায়”। হাইলাকান্দি জেলার রামনাথপুর থানার একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা আমাদের জানান।
হাইলাকান্দি জেলা প্রশাসক আদিল খান প্রতিকূল এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি মাইকে বলেন “ আমরা মাথা নত করব না, আমরা আমাদের জমির এক ইঞ্চিও ছাড়ব না। প্রয়োজন হলে আমরা আরো নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ করব। তাই অনুরোধ করছি, ভাই ও বোনেরা আপনারা ফিরে যান”। যদি পরিস্থিতি অবিলম্বে নিয়ন্ত্রিত না হয় তবে এটি একটি আন্তরাজ্য জটিলতা ও উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সালে আসামের হাইলাকান্দি জেলার কচুরতল এলাকায় ন্যাশনাল হাইওয়ের পাশে এর সূত্রপাত ঘটে। এমজেডপি একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করে জানায় জমিটি এমজেডপির অন্তর্গত। তারা কাঠের বেঞ্চ দিয়ে একটি অপেক্ষাগার নির্মান করেন। তারা দাবি করেন যে এই জমি মূলত মিজোরামের প্রথম মুখ্যমন্রীর পরিবারের অন্তর্গত। ছুঙ্গা এবং তার পরিবার এখন জমিটি যুব সংগঠন এমজেডপি কে দান করে।
রাজ্যের বনবিভাগের সহযোগিতায় আসাম পুলিশ মিজো সংগঠনের স্থাপিত শেডটি ধ্বংস করে। দুই রাজ্যর মধ্যে সরকারি মতবিনিময় চলে। আসাম সরকার স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে যে জমিটি আসামের অন্তর্গত এবং এ ব্যাপারে কোনও আন্দোলন বরদাস্ত করা হবে না। ৭ মার্চ এমজেডপি একই জায়গায় অপেক্ষাগার পুননির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। তার পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকটি সংঘাত ঘটেছে। কয়েকজন সাংবাদিক তাদের পরিচয়পত্র দেখানো সত্বেও আসাম পুলিশ এবং সিআরপিএফ লাঠিচার্জ ও মারধোর করে বলে অভিযোগ করেন।
আসাম এবং মিজোরাম প্রথমবারের মত এভাবে সংঘর্ষে জড়িত হয়নি। রামনাথপুর এলাকার পুলিশ কর্মকর্তা আমাদের জানান যে মিজোরা প্রায়ই এধরনের কর্মকান্ডে করে এবং তারা আসামের অনেক জমি এভাবে ‘ গুন্ডা গর্দির’ মাধ্যমে দখল করেছে।
Comments are closed.