বিমানে ফিরলেই আরটিপিসিআর, যাত্রীরা দেবেন অতিরিক্ত ৫০০ টাকা
যেসব যাত্রীরা বিমানে কাছাড় জেলায় ফিরবেন তাদের আরটিপিসিআর পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। তবে এক্ষেত্রে তাদের গুনতে হবে ৫০০ টাকা অতিরিক্ত মাশুল। এছাড়া যেহেতু তাদের পরীক্ষা বিমানবন্দরের না হয়ে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে হবে সেখানে লাগবে অতিরিক্ত সময়ও। ফলে যাত্রীদের এখন থেকেই তৈরি থাকা প্রয়োজন কেননা ভ্যাকসিন প্রদানের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের ঠিক করা কেন্দ্রে সাধারণ মানুষ লাইন ধরে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
একসময় বলা হয়েছিল বিমানযাত্রীরা যদি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করা রিপোর্ট নিয়ে আসতে পারেন তাহলে বিমানবন্দরে তাদের পরীক্ষা হবে না। তবে পরবর্তীতে এই সিদ্ধান্ত বদল হয় এবং জানিয়ে দেওয়া হয় প্রত্যেক বিমানযাত্রীকে বিমানবন্দরে পরীক্ষা করা হবে। মঙ্গলবার কাছাড় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কুম্ভিরগ্রাম বিমানবন্দর যেহেতু ছোট এবং সেখানে অনেক বেশি বিমান আসছে ফলে যাত্রীদের টিকল চা বাগানের সরকারি হাসপাতালে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করা হবে এবং প্রত্যেক যাত্রীকে এর জন্য ৫০০ টাকা করে দিতে হবে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী বিমানবন্দরে এখন প্রতিদিন প্রায় ৭০০ যাত্রী ফিরছেন। আরটিপিসিআর পরীক্ষার পর তাদের রেজাল্ট না আসা পর্যন্ত আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যাত্রীদের লিখিতভাবে একটি স্বাক্ষরপত্র দিতে হবে তারা বাড়িতে গিয়ে আইসোলেশনে থাকবেন বলে। এই পুরো প্রক্রিয়া দেখাশোনা করবে কাছাড় জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ, এতে বিমানবন্দরের খুব একটা যোগদান থাকছে না।
বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘সরকারি নিয়ম মেনেই প্রত্যেক যাত্রী বিমানবন্দরে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে কোভিড পরীক্ষা করতে হবে। তবে শিলচরের বিমানবন্দর তুলনামূলকভাবে আকারে ছোট এবং সেখানে প্রায় প্রতি আধ-ঘন্টায় একটি করে বিমান আসছে বা ফিরে যাচ্ছে। এই অবস্থায় যাত্রীদের আলাদা করে বসিয়ে পরীক্ষা করানোর মতো পরিস্থিতি নেই। ফলে পার্শ্ববর্তী সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তাদের পরীক্ষা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। টিকল চা-বাগানে সরকারি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র রয়েছে সেখানে বিমান যাত্রীদের জন্য পরীক্ষার জন্য একটি সেন্টার করে তোলা হয়েছে। যাত্রীরা বিমান থেকে নামার পর একটি বিশেষ বাসে তাদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রথমে রেপিড এন্টিজেন টেস্ট হবে আরটিপিসিআর। এন্টিজেন টেস্ট বিনামূল্যে হলেও আরটিপিসিআর পরীক্ষার জন্য প্রত্যেক যাত্রীকে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা দিতে হবে।’
বরাক উপত্যকার তিন জেলার যাত্রীদের জন্য এই নিয়ম থাকলেও যদি কোন ব্যক্তি পার্শ্ববর্তী রাজ্যের যাওয়ার জন্য বিমানের শিলচরে আসেন তাদের আরটিপিসিআর পরীক্ষা হবে না। প্রয়োজনে রেপিড এন্টিজেন টেস্ট হবে। তারা জেলার কোনও পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে ফিরবেন না বরং নিজের গাড়িতে অসমের সীমান্ত পর্যন্ত অন্তত যেতে হবে। তাদের রাজ্যে পরীক্ষার নিজস্ব নিয়ম রয়েছে সেখানেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
এদিকে মঙ্গলবার কাছাড় জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৪৭ জন ব্যক্তি। রেপিড এন্টিজেন টেস্ট পরীক্ষায় ৩১ এবং আরটিপিসিআর পরীক্ষায় ১২ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী এই বছর এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মোট ৮ জন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে দুই ব্যক্তি ক্রিটিক্যাল অবস্থায় রয়েছেন, তাদের লাইফ সাপোর্টে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।
জেলায় এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা হচ্ছে ২৩২, এরমধ্যে ১৮৮ জন বাড়িতেই চিকিৎসাধীন। যাদের শরীরে উপসর্গ রয়েছে এবং রেমডিজিভিল বা অক্সিজেনের প্রয়োজন রয়েছে, তাদের চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে। শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এখন চিকিৎসাধীন ২৪ জন, সিভিল হাসপাতালে ৩ জন, গ্রীন হিলস হাসপাতালে ১১ জন এবং সেনা হাসপাতালে রয়েছেন ৬ জন।
Comments are closed.