Also read in

করোনা কেড়ে নিল ইটখোলার প্রাক্তন ক্রিকেটার সোহম ঘোষকে

করোনা কেড়ে নিলো আরো একজন ক্রীড়াবিদকে। এবার মহামারী ভাইরাস এর শিকার হলেন শিলচর ইটখোলা এসির প্রাক্তন ক্রিকেটার জয়দ্বীপ (সোহম) ঘোষ। কোভিড আক্রান্ত হয়ে নয়ডার এক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। গত কয়েকদিন থেকেই আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন। তবে বৃহস্পতিবার তার সব লড়াই শেষ হয়ে যায়। না ফেরার দেশে পাড়ি দেন নব্বইয়ের দশকের ডানহাতি অলরাউন্ডার। বয়স হয়েছিল ৪৮। ইটখোলার রহমান পট্টির নিবাসী প্রয়াত দিলীপ ঘোষের জৈষ্ঠ পুত্র ছিলেন সোহম।

নব্বইয়ের দশকে ইটখোলা এসির হয়ে চুটিয়ে ক্রিকেট খেলেছেন সোহম। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৮-৯৯ সাল পর্যন্ত ইটখোলার হয় বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিলেন। তারপর শহর ছেড়ে বাইরে চলে যান তিনি। মূলত একজন ডানহাতি অলরাউন্ডার ছিলেন সোহম। মিডিয়াম পেস বোলিংয়ের পাশাপাশি মিডল অর্ডারে ব্যাট করতেন। সত্যিকার অর্থে একজন ম্যাচ উইনার ছিলেন তিনি। খুব স্টাইলিশ ক্রিকেটার ছিলেন। নব্বইয়ের দশকে ইটখোলা এসি ফের একবার স্থানীয় ক্রিকেটে নিজেদের বিশেষ জায়গা গড়ছিল। মূলত পাড়ার ক্রিকেটারদের নিয়ে দল গঠন হতো সেই সময়। সেই সময়ে ইটখোলা দলের হয়ে খেলতেন শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার বর্তমান সচিব বিজেন্দ্র প্রসাদ সিং, সঞ্জীব রায়, সঞ্জয় গোস্বামী, শাহাবুদ্দিন আহমেদ, সিতাংশু পাল এবং সোহন ঘোষের মতো ক্রিকেটাররা। দারুন একটা দল ছিল ইটখোলার।
১৯৯৪ সালে শিলচর ডি এস এর এ ডিভিশন ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইটখোলা। সেই দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন সোহম। সেই জয়টা ক্লাবের ইতিহাসে এক বিশেষ জায়গা জুড়ে রয়েছে। কারণ কুড়ি বছর পর ৯৪ সালে ফের একবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইটখোলা। সেই দলের অধিনায়ক ছিলেন সঞ্জীব (চিন্টু) রায়।
সোহমের মৃত্যুর খবর শুনে সবাই হতবাক। ইটখোলার প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব বিজেন্দ্র প্রসাদ সিং বলেন,’ তিন-চারদিন আগে শুনেছিলাম কোভিডে আক্রান্ত হয়ে সোহমদা নয়ডার এক হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছে। সোহমদা একজন লড়াকু মানসিকতার ক্রিকেটার ছিল। তাই আমার বিশ্বাস ছিল করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়েও সে জয়ী হয়ে ফিরে আসবে। কিন্তু এমনটা হল না। খুবই খারাপ লাগছে। আমরা একসঙ্গে অনেক ক্রিকেট খেলেছি। ওর সঙ্গে অনেক স্মরণীয় মুহূর্ত রয়েছে। এত কম বয়সে সোহমদা চলে যাবে, বিশ্বাস হচ্ছে না।’
ইটখোলা তথা জেলার প্রাক্তন ক্রিকেটার সঞ্জীব ওরফে চিন্টু বলেন, ‘আমি সোহম দার মতো ফিজিক্যালি ফিট ক্রিকেটার আজ পর্যন্ত দেখিনি। ৩০ বছর আগে আজকের মত জিম ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও খুব সুন্দর নিজেকে মেন্টেন করতেন সোহম দা।’ সঞ্জীব আরও বলেন, ‘একজন ম্যাচ উইনার ছিলেন সোহম দা। ক্লাসমেটস ইউনিয়নের বিরুদ্ধে তার একটা শতরান রয়েছে। সে ম্যাচে আমি সাত উইকেট পেয়েছিলাম। কাজেই ম্যাচটা আমার কাছেও স্মরণীয়। ৯৪ সালে আমরা কুড়ি বছর পর চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। সেবার একজন অলরাউন্ডার হিসেবে দারুন পারফর্ম করেছিল সোহম দা। শুধু একজন ভালো ক্রিকেটার নন, একজন ভাল আর্ম রেসলারও ছিলেন তিনি। তাঁর অকাল প্রয়াণে আমি মর্মাহত। সোহম দার সঙ্গে কত স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু আজ সবই অতীত হয়ে গেল।’
প্রাক্তন ক্রিকেটার সোহম ঘোষের অকাল প্রয়াণে শোক জানিয়েছে তার ক্লাব ইটখোলা এসি।

Comments are closed.

error: Content is protected !!