Also read in

৬১'র ভাষা আন্দোলনের অন্যতম বীর সেনানী, মুখোশ নাট্য গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা, অভিনেতা ও পরিচালক পার্থসারথি সেন চিরনিদ্রায়

১৯৬১ সনের ভাষা আন্দোলনের অন্যতম বীর সেনানী পার্থ সারথি সেন আজ চিরনিদ্রায় শায়িত।তিনি বিগত কয়েক বছর ধরেই তাঁর পুত্র এবং পরিবারের সাথে বেঙ্গালুরুতে থাকতেন। সেখানেই এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন অসুস্থতার জন্য। আজ সকাল ৬:৩০ মিঃ অভিনেতা, নাট্যকার, নাট্যপরিচালক তথা ভাষা আন্দোলনের এক বীর সেনানী পার্থসারথি সেন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ ।

বয়স যখন ২০,তখন থেকেই নিজেকে আন্দোলনের সাথে যুক্ত করেছেন তিনি। করিমগঞ্জ কলেজের ছাত্র সংগঠনের সদস্য হিসেবে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। নাট্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে বরাক উপত্যকায় তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে। মুখোশ সম্প্রদায়ের নাট্য গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন। কেবল মাত্র একজন বিখ্যাত পরিচালক হিসেবে নয়, তাঁর অভিনয়ের জন্যেও তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ।

১৯৭৫ সালে যখন শিলচরে রূপম সংস্থার আয়োজনে প্রথম নাট্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়, তখন তিনি এবং তাঁর নাট্যদল মঞ্চস্থ করেছিলেন নাটক “শতাব্দীর পদাবলী” এবং সেরা প্রযোজনার পুরস্কারও ছিল তাদের ঝুলিতে। একাধিক নাটক রচনার কৃতিত্বও রয়েছে তাঁর। “মাছি”, ” যদি আমি, কিন্তু আমি ” ইত্যাদি নাটক মঞ্চস্থ করে শুধুমাত্র বরাক উপত্যকায় নয়, দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকেও পুরস্কার পেয়েছেন। পরিচালক হিসেবে নিজের নাট্যগোষ্ঠীকে শুধুমাত্র দল হিসেবে নয়, ভালোবাসতেন পরিবারের মতো।

পেশাগতভাবে তিনি আসাম রাজ্য বিদ্যুৎ পরিষদের উপ-বিভাগীয় কর্মকর্তা ছিলেন। খেলার মাঠও ছিল তাঁর ভীষণ প্রিয়। ফুটবলের প্রথম শ্রেণির রেফারি এবং করিমগঞ্জ লন টেনিস ক্লাবের সদস্যও ছিলেন ।

১৯৬১ সালের ভাষা আন্দোলনের একটি বিশেষ অংশ জুড়ে তিনি ছিলেন। নিজের মাতৃভাষার জন্য প্রাণপণ করে গেছেন। তাঁকে পিকেটিং করা থেকে শুরু করে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেছেন অনেকেই। হেঁটেছেন বহু মিছিলে। এমনকি মাতৃভাষা রক্ষার জন্য নিজের বাবাকেও কারাগারে যেতে দেখেছেন তিনি।

বরাকবাসীর এখনও অনেক গল্পই অজানা । তবে ২০২০ এর ১৯শে মে তে অনেক অজানা তথ্য এবং কাহিনী আমরা তাঁর থেকে জানতে পারি আবার নতুন করে।

প্রয়াত রথীন্দ্র নাথ সেনের বড় পুত্র ছিলেন তিনি। করিমগঞ্জ আজ তাদের এক অভিভাবক হারালো।

Comments are closed.

error: Content is protected !!