হাইলাকান্দিতে মিজোরাম সীমান্তে সরকারি বিদ্যালয়ে বোমা হামলা মিজো দুষ্কৃতীদের, আগে থেকেই হুমকি ছিল
হাইলাকান্দি জেলায় মিজোরাম সীমান্ত সংলগ্ন কুঁচেরতল এলাকায় মঙ্গলবার রাতে এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বোমা মেরে আক্রমণ চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। বিদ্যালয়ে নির্মীয়মান বয়েজ টয়লেট এবং পানীয় জলের ট্যাঙ্ক এতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর পেয়ে জেলাশাসক মেঘ নিধি দাহাল, পুলিশসুপার পি নাথ সহ প্রশাসনের একটি দল সেখানে উপস্থিত হয় এবং ঘটনার পেছনের রহস্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। তবে স্থানীয়দের বয়ান অনুযায়ী কিছুদিন ধরেই একদল দুষ্কৃতী লাগাতার হুমকি দিচ্ছিল, শেষমেষ এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা।
অতীতে একই বিদ্যালয়ে বোমা হামলা চালিয়েছিল একদল দুষ্কৃতী। পরে তদন্তে জানা যায় তারা মিজো দুষ্কৃতী ছিল। গতবছর কাছাড় জেলার তিন কিলোমিটার এলাকা দখল করেছে মিজোরাম। সেই সময় কাছাড় জেলার ধলাইয়ে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এভাবেই বোমা হামলা চালিয়েছিল মিজো দুষ্কৃতীরা। ফলে হাইলাকান্দির ঘটনার সঙ্গে পুরনো ঘটনার যোগসুত্র থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। মেঘ নিধি দাহাল এলাকায় রয়েছেন, তার সঙ্গে রয়েছেন পুলিশের বাহিনীরা।
ডিআইজি দিলীপ কুমার এব্যাপারে বলেন, “২০১৩ সালে একই বিদ্যালয়ে বোমা হামলা চালিয়েছিল মিজো দুষ্কৃতীরা। পরে সেই ক্ষতিগ্রস্ত অংশ আবার গড়ে তোলা হয়। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের উন্নতির ক্ষেত্রে কিছু কাজ চলছিল এবং সেটা ভেস্তে দেওয়ার জন্যই মিজো দুষ্কৃতীরা আবার হামলা চালিয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেছি এবং ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শনাক্ত করতে চেষ্টা করছি। তবে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে এই কাজটি করা হয়েছে। এব্যাপারে সরকারের আধিকারিকের কাছে খবর দেওয়া হয়েছে, আগামীতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার রাতে এলাকাবাসীরা হঠাৎ করেই জোরে কিছু ফেটে পড়ার শব্দ পান। ভোরবেলা পুলিশের দল সেখানে উপস্থিত হয় এবং দেখা যায় মুলিওয়ালা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে ওএনজিসি’র তরফে একটি গার্লস টয়লেট এবং রাজ্য সরকারের একটি পানীয় জল প্রকল্পের কাজ চলছিল। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং এলাকার মানুষ জানিয়েছেন কিছুদিন ধরেই দুষ্কৃতীরা বারবার হুমকি দিচ্ছিল। তারা বলে, “এই এলাকায় কোনও ধরনের সরকারি কনস্ট্রাকশন করবেন না, অন্যথায় আমরা নিজেদের মত পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব।” এবার রাতের অন্ধকারে বিদ্যালয়ে চুপিসারে বোমা হামলা চালিয়ে এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করতে চেয়েছে দুষ্কৃতীরা।
২০০৩ সালে শুরু হয়েছিল বাংলা মাধ্যমের বিদ্যালয়টি, অসম সরকারের শিক্ষা বিভাগের অধীনে রয়েছে এটি। কাটলীছড়া শিক্ষাখন্ডের অধীনে থাকা বিদ্যালয়টিতে মূল স্কুল কক্ষ ছাড়াও আরও কয়েকটি কক্ষ রয়েছে।
Comments are closed.