Also read in

শিলচর মেডিক্যালের দুর্নীতির তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নিজে এফআইআর করব", একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ বাবুল বেজবড়ুয়া

শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিভিন্ন কেলেঙ্কারি এবং অসঙ্গতির অভিযোগের বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব দেখিয়ে শিল্পীরাণী বর্মনকে অন্যত্র বদলি এবং হাসপাতাল সুপার অনিন্দ্যসুন্দর বৈশ্যকে অপসারণ করে রাজ্য সরকার। নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ বাবুল বেজবরুয়া শুরু থেকেই সেই কড়া মনোভাবকেই সামনে রেখে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিলেন। আমাদের প্রতিনিধি বিশ্বকল্যাণ পুরকায়স্থের সাথে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন, শিলচর মেডিক্যালের প্রত্যেকটি বিভাগের অভিযোগগুলোর তদন্ত করা হচ্ছে। এই মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে তার বিভিন্ন পরিকল্পনার কথাও তিনি জানালেন তার এই সাক্ষাৎকারে। সাক্ষাৎকারের সম্পাদিত অংশ নিচে তুলে ধরা হলো।

শিলচর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে যে দুর্নীতি ও আর্থিক অনিয়ম চলছে সেটা দূর করার জন্য আপনি কী পরিকল্পনা নিয়েছেন?

একটা তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যেই গঠন করা হয়েছে এবং এই কমিটি তাদের রিপোর্ট আগামী ১৫ই নভেম্বর পেশ করবে; রিপোর্ট হাতে আসার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ইতিমধ্যেই কয়েকটা অভিযোগ পেয়েছি, এগুলো নিয়ে আমি খুব শিগগিরই ব্যবস্থা নেব।

 

 

মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কে দুর্নীতিরও খবর আছে..

দেখুন, এই ব্লাড ব্যাঙ্কের সাথে শুধু মেডিক্যাল কলেজের কর্মীরা নন, বাইরের লোকেরাও জড়িত আছেন । আমি জানতে পেরেছি যে বাইরে থেকে লোক এসে ব্লাড ব্যাংকে দালালি করে খুব সহজেই টাকা রোজগার করছে। আমি ঘুঙ্গুর আউট পোস্টে খুব শিগগিরই এই বিষয়ে একটা প্রাথমিক এজাহার দেবো। এই অব্যবস্থা দূর করে নিয়ম মেনে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করাই আমার উদ্দেশ্য।

আপনি শিলচর মেডিক্যাল কলেজে ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রায় ছয় বৎসর কাজ করে গেছেন, সাত বছর পর এবার এখানে এসে আপনি কি পরিবর্তন লক্ষ্য করছেন?

আমি ২০১১ সালে যেমনটা দেখে গিয়েছিলাম আজও প্রায় সেরকমই আছে, পরিবেশও প্রায় একই , শুধু কয়েকটা নতুন বিল্ডিং হয়েছে। শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কয়েকটা সুপার স্পেশালিটি বিভাগ এবং শাখা খুলে এই মেডিক্যাল কলেজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমার উদ্দেশ্য। শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সবচেয়ে ভালো দিকটা হচ্ছে এর শৈক্ষিক অবস্থান, এখানে একাডেমিক পরিবেশ খুব ভালো এবং আমি এটাকে আরো ভালো করতে চাই। আর একটা বিষয়ে আমি জোর দেবো, সেটা হচ্ছে পরিষ্কার পরিছন্নতা। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় তার সর্বশেষ হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে খুবই রাগান্বিত হয়ে গিয়েছিলেন। আমি এতে পরিবর্তন এনে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন স্বচ্ছ পরিবেশ তৈরি করতে চাই।

আপনি সুপার স্পেশালিটি বিভাগের কথা বললেন, এই মুহূর্তে কোন বিভাগে এটি সবচেয়ে বেশি জরুরি বলে আপনি মনে করেন?

আমি মূলত তিনটি বিভাগের কথা বলছি। এই মুহূর্তে নিউরোলজি কার্ডিওলজি এবং নিউরোসার্জারি বিভাগ গুলোতে সুপারস্পেশালিটি খুবই প্রয়োজন। এই সুপার স্পেশালিটি বিভাগ গুলো খুব শীগ্গির খোলার জন্য আমি সরকারকে প্রস্তাব পাঠাবো। হৃদরোগ বা স্ট্রোকের রোগীদের এই মেডিক্যাল কলেজে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা খুব কমই আছে। এই রোগীদেরকে হয় প্রাইভেট নার্সিং হোমে ভর্তি করা হচ্ছে, আর না হলে গুয়াহাটি নিয়ে যেতে হচ্ছে। একজন পেশেন্টকে বরাক উপত্যকা থেকে গুয়াহাটি নিয়ে যাওয়া কত কষ্টকর, সে বিষয়ে আমি খুবই সচেতন এবং তার জন্য আমি এই বিভাগগুলো খোলার ব্যাপারে সচেষ্ট হব।

হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন, এটা খুবই জরুরি কিন্তু এগুলো অনুমোদিত হয়ে কাজ শুরু হতে কত দিন লাগতে পারে?

বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী খুবই প্রগতিশীল এবং সবসময়ই উন্নয়নের ব্যাপারে সাহায্য করতে উৎসুক। তাই আমি আশা করছি যে, অনুমোদন এবং পরিকাঠামো তৈরি করাটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া হবে না। সবচেয়ে বড় সমস্যাটা হচ্ছে, হিউম্যান রিসোর্স এবং এটা নিয়ে সরকারের সাথে আলাপ আলোচনা করতে হবে।

এগুলো ছাড়া আপনি আর কি পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করতে চান?

আমরা যদি এই পরিবর্তন গুলো করতে সক্ষম হই, তাহলে এটা নিযুক্তিরও একটা রাস্তা খুলে দেবে। আমি যদি এখানে থাকি তাহলে আমি এটা করতে চাই, আমার এই পরিকল্পনাগুলো পেশাদারী মনোভাব নিয়ে সফল করতে হলে সংশ্লিষ্ট সকলের সমর্থন-সাহায্য পেতে হবে।

Comments are closed.