
সুপার ফোর থেকে আউট ইন্ডিয়া ক্লাব, অভিনব কায়দায় সুপার ফোরে শিলচর স্পোর্টিং
রেলিগেশন জোন থেকে সুপার ফোর। একেবারে অভিনব কায়দায় সুপার ডিভিশনের সুপার ফোরে জায়গা করে নিল শিলচর স্পোর্টিং ক্লাব। শনিবার স্পোর্টিং ৪-০ গোলে উড়িয়ে দেয় অভিনব ক্লাব কে। এই জয়ের সুবাদে একেবারে লাস্ট বয় থেকে এক লাফে চতুর্থ দল হিসাবে সুপার ফোর নিশ্চিত করে নিল স্পোর্টিং। আর সুপার ডিভিশন থেকে অবনমন ঘটলো এবারই প্রথম খেলতে নামা অভিনব ক্লাবের। তবে সবচেয়ে বড় খবর হচ্ছে, শিলচরের সুপার ডিভিশন ফুটবল লিগ চালু হবার পর থেকে এই প্রথম সুপারফোর থেকে ছিটকে গেল ইন্ডিয়া ক্লাব। যারা কিনা কদিন আগেই বরদলৈ ট্রফির সেমিফাইনাল খেলে এসেছিল।
শনিবার ম্যাচ শুরু হবার আগেই শিলচর স্পোর্টিংয়ের সামনে চিত্রটা মোটামুটি পরিষ্কার ছিল। অভিনবর বিরুদ্ধে শুধু জিতলে হবে না, জিততে হবে ৩-০ ব্যবধানে। কারণ অভিনবর বিরুদ্ধে জিতলেও স্পোর্টিংয়ের পয়েন্ট দাঁড়াবে ৪। অর্থাৎ ইন্ডিয়া ক্লাবের সমান। তখন আসবে গোল পার্থক্য। যেখানে এগিয়ে রয়েছে ইন্ডিয়া ক্লাব। তাই পরিষ্কার তিন গোলে জিততে হত স্পোর্টিং কে। তখনই ইন্ডিয়া ক্লাবের সঙ্গে পয়েন্ট সমান হলেও গোল পার্থক্যে এগিয়ে থাকার সুবাদে সুপার ফোরে পৌঁছে যেত স্পোর্টিং। তারা ঠিক সেই কাজটাই করে দেখালো।
স্পোর্টিং এই ম্যাচের আগে প্রচণ্ড চাপে ছিল। এর মধ্যে যদি অভিনব একটা গোল করে দিতে পারতো তাহলে তাদের সেই চাপ দ্বিগুণ হয়ে যেত। তাই অভিনবর দরকার ছিল পজিটিভ ফুটবল। তবে তারা হাটলো ঠিক উল্টো পথে। ১০ মিনিট থেকেই ডিফেন্সিভ খেলতে শুরু করলো দলটা। তাদের এই স্ট্র্যাটেজি ধরে নিতে খুব একটা সময় নিলেন না স্পোর্টিং এর পোড়খাওয়া কোচ সুবির দে। প্রতিপক্ষর এই গেমপ্ল্যান তিনি ক্রাক করে নিলেন। মাঝ মাঠে তিনজনকে এনে আক্রমণভাগে আরো লোক বাড়িয়ে দিলেন স্পোর্টিং কোচ। অভিনব স্পোর্টিং কোচের এই স্ট্রাটেজি ধরতেই পারল না। তারা ডিফেন্সিভ ফুটবল খেলে গেল। কাউন্টার এটাক করার চিন্তা করলো না। বরং প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগ কে অফসাইডের ট্রেপে ফেলতে গিয়ে নিজেরাই ফাঁদে পড়ল। সঙ্গে দুটি গোলও হজম করলো।
এদিন সতীন্দ্র মোহন দেব স্টেডিয়ামে লিড এনে দেন দিনদয়াল থাপা। ম্যাচের বয়স তখন ২৯। প্রথমার্ধে আর কোনো গোল হয়নি। যদিও একাধিক সুযোগ পেয়েছিল স্পোর্টিং। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই যেন আরও ডিফেন্সিভ হয়ে যায় অভিনব। এরোই ফায়দা তোলে স্পোর্টিং। তবে ফিনিশিং ব্যর্থতায় তারা গোল করতে পারছিল না। অবশেষে ৫৯ মিনিটে দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন সনজ আহমেদ মজুমদার। এই গোলের পর আরো উজ্জীবিত হয়ে ওঠে স্পোর্টিং। উল্টোদিকে অভিনব তখন দিশেহারা। ম্যাচ তখন পুরোপুরি স্পোর্টিংয়ের নিয়ন্ত্রণে। ৭৩ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় তথা দলের তৃতীয় গোলটি করেন সনজ। তিন গোল করার পরও অ্যাটাকিং ফুটবল থেকে সরে আসেনি স্পোর্টিং। বরং আরও গোলের জন্য ঝাপায়।
এদিন স্পোর্টিং কোচের একটা টেকনিক্যাল মুভ ও পার্থক্য গড়ে দেয়। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মিনিটে তিনি জলেশ্বর মিশ্রার পরিবর্তে মাঠে নামান জেহবা মারকে। এটা স্পোর্টিংয়ের ফুটবলে আরও গতি এনে দেয়। ডানদিক থেকে দারুন গতিতে একের পর এক আক্রমণ গড়ে তুলেন জেহোবা। তৃতীয় গোলের জোগানটা তিনিই দিয়েছিলেন। এর পর ইনজুরি টাইমে দলের চতুর্থ গোলটাও করলেন। টুর্ণামেন্টে মরা বাঁচার লড়াইয়ে নিজেদের সেরা ফুটবল উপহার দিলো স্পোর্টিং। এর সঙ্গেই ছিনিয়ে নিল সুপার ফোর এর টিকিট ও।
Comments are closed.