Also read in

আবারও হিরো ভিগনেশ, টাউন ক্লাবের বিরুদ্ধে ড্র করে বরদলৈ ট্রফির সেমিফাইনালে ইন্ডিয়া ক্লাব

৬৮তম বরদলৈ ট্রফিতে আন্ডার ডগ হিসেবে শুরু করেছিল শিলচরের ইন্ডিয়া ক্লাব। তবে এখন তারাই কিনা টুর্নামেন্ট ফেবারিট! টুর্নামেন্টে একের পর এক ইতিহাস রচনা করে চলেছে শিলচরের প্রতিনিধিরা। এ এস ই বি ও আই টি বিপির পর গুয়াহাটি টাউন ক্লাব। না, আজ ঘরোয়া দল টাউন ক্লাবের বিরুদ্ধে জিততে পারেনি শিলচরের শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাব। তবে দু দুবার পিছিয়ে পড়েও ২-২ গোলে ড্র করে। যার সুবাদে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে খেলার ছাড়পত্র আদায় করে নিয়েছে শিলচরের চ্যাম্পিয়নরা। টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে ১ এপ্রিল গ্রুপ সির চ্যাম্পিয়ন এর বিরুদ্ধে খেলবে ইন্ডিয়া ক্লাব।

প্রথম দুই ম্যাচের দুরন্ত পারফর্মেন্স এর সুবাদে টাউন ক্লাবের বিরুদ্ধে ফেবারিট হিসেবে খেলতে নেমেছিল ইন্ডিয়া ক্লাব। এদিন জাজেস ফিল্ডে শিলচরের চ্যাম্পিয়নদের জিততে পারেনি ঠিকই, তবে এই ড্র’ জয় থেকেও অনেক বড়। ‌ কারণ আজ ইন্ডিয়া ক্লাবকে লড়তে হয়েছে ঘরোয়া দলের বিরুদ্ধে। আবহাওয়া ও কন্ডিশন এর বিরুদ্ধে। লোকাল টিম টাউন ক্লাব জাজেস ফিল্ডে গোটা বছর প্র্যাকটিস করে থাকে। এরমধ্যে দ্বিতীয়ার্ধে ঝড় বৃষ্টির পর জাজেস ফিল্ডের পুরোটাই ছিল জলের তলায়। সেই সময় ইন্ডিয়া ক্লাব পিছিয়ে ছিল ২-১ গোলে। এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও কিন্তু হার মানেনি শিলচরের চ্যাম্পিয়নরা। পরিস্থিতি অনুসারে লম্বা পাসে খেলে বাজিমাত করে।

প্রথম দুটি ম্যাচই শুরুতে লিড নিয়েছিল ইন্ডিয়া ক্লাব। ‌তবে আজ আত্মঘাতী গোল খেয়ে শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে। ‌ প্রথমার্ধে বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করলেও ফিনিশিং দুর্বল থাকায় গোল করতে পারেনি ইন্ডিয়া ক্লাব। পিছিয়ে থাকায় টুর্নামেন্টে এই প্রথম চাপে মনে হচ্ছিল শিলচরের চ্যাম্পিয়নদের। অনেক চেষ্টা করেও সমতায় ফিরতে না পারায় চাপ যেন আরও বেড়ে যাচ্ছিল। ‌
তবে দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম থেকেই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ইন্ডিয়া ক্লাব। টানা আক্রমণ চালায় বিপক্ষের রক্ষণে। ‌ এরোই সুফল হিসেবে দলকে সমতায় ফেরান ইন্ডিয়া ক্লাবের ভি ভিগনেশ। তবে এই ছন্দটা তারা বেশি সময় ধরে রাখতে পারেনি। সমতায় ফেরার অল্প সময়ের মধ্যেই ফের গোল খেয়ে বসে ইন্ডিয়া ক্লাব। ২-১ গোলে এগিয়ে যায় টাউন ক্লাব। মাঠে তখন টানটান উত্তেজনা।

ফের একবার সমতায় ফেরার লড়াই শুরু করে শিলচর চ্যাম্পিয়নরা। এরই মধ্যে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ান বরুণদেব। কয়েক মিনিটের ঝড়ো বৃষ্টিতে জাজেস ফিল্ডে জল জমে যায়। ফলে কোনো দলই নিজেদের স্বাভাবিক ফুটবল খেলতে পারছিল না। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছিল ইন্ডিয়া ক্লাবের। মাঠে জল জমে যাওয়ায় তারা ছোট ছোট পাসে খেলতে পারছিল না। এই ইন্ডিয়া ক্লাব দলটার ট্রেডমার্ক হচ্ছে ছোট ছোট পাসে খেলে আক্রমণ গড়ে তোলা। তবে জমা জলে এই স্টাইলে খেলতে পারছিলো না ইন্ডিয়া ক্লাব। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে খেলার ধরন পাল্টে ফেলে তারা। ‌ ছোট ছোট পাসের বদলে দীর্ঘ পাসে খেলতে শুরু করে। ফলে চাপে পড়ে যায় টাউন ক্লাবের ডিফেন্স। এরই মধ্যে এক কর্নার আদায় করে নেয় শিলচরের চ্যাম্পিয়নরা। ‌ যা থেকে গোল করে দলকে সমতায় ফিরিয়ে আনেন ইন্ডিয়া ক্লাবের গোলমেশিন ভিগনেশ। স্কোর ২-২। ম্যাচ শেষ হতে তখনো কিছুটা সময় বাকি। তবে শেষ কয়েক মিনিটে টাউন ক্লাব কে সেরকম আক্রমণ গড়ে তুলতে দেয়নি ইন্ডিয়া ক্লাবের মাঠ মাঠ।

কঠিন কন্ডিশনে এই ড্রয়ের ফলে আরও একটা বিষয় প্রমাণ করেছে ইন্ডিয়া ক্লাব। পরিস্থিতি অনুসারে তারা যে কোনও স্টাইলে খেলতে পারে। তাদের দলের সেই গভীরতা রয়েছে। আক্রমণভাগ ও মাঝমাঠের মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়া রয়েছে। সেইসঙ্গে ডিফেন্স ইউনিটও কিন্তু খুব ভালো ভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করছে। এইসব বিষয়ই ইন্ডিয়া ক্লাবকে ফেবারিট করে তুলেছে।

Comments are closed.